
এইচআইভি, হেপাটাইটিস বি এবং সিফিলিস সংক্রামিত মায়ের কাছ থেকে তাদের শিশুদের মধ্যে সংক্রামিত হতে পারে, যার ফলে উল্লেখযোগ্য অসুস্থতা এবং মৃত্যুহার ঘটে। ২০২৪ সালে, কিছু অঞ্চলে ৪৫,০০০ শিশু এইচআইভিতে আক্রান্ত ছিল, যার সংক্রমণের হার ২৬% ছিল - নির্মূলের লক্ষ্যমাত্রার চারগুণ। যদিও জন্মগত সিফিলিসের ঘটনা ২০১৯ সালে ৪২,০০০ থেকে কমে ২০২২ সালে ২৬,৩০০ হয়েছে, তবুও এই হার প্রতি ১০০,০০০ জীবিত জন্মের মধ্যে ১৪৯-এ রয়ে গেছে - লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে তিনগুণ বেশি। ২০০০ সাল থেকে ৫ বছরের কম বয়সী শিশুদের মধ্যে হেপাটাইটিস বি-এর প্রাদুর্ভাব ৯২% কমে ০.৬৮% হয়েছে, তবুও এটি ০.১% লক্ষ্যমাত্রার উপরে রয়ে গেছে।
রাজ্যে গর্ভাবস্থায় মায়ের হেপাটাইটিস বি ভাইরাস থাকলেও তা যেন শিশুর মধ্যে প্রবাহিত না হয়, সেই লক্ষ্যে এমটিসিটি বা মাদার টু চাইল্ড ট্রান্সমিশন শূন্য করতে কড়া প্রহরা প্রতিটি সরকারি হাসপাতালে। ২০২৬-এর ডিসেম্বরের মধ্যে এইচআইভি, হেপাটাইটিস বি আর সিফিলিসের ক্ষেত্রে মাদার টু চাইল্ড ট্রান্সমিশন শূন্য করা লক্ষ্য স্বাস্থ্য দপ্তরের।
সম্প্রতি শহরের এক কর্মশালায় তেমনই বার্তা দিলেন স্বাস্থ্য অধিকর্তা ডা. স্বপন সোরেন। কর্মশালায় হাজির ছিলেন ডা. পল্লব ভট্টাচার্য, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় হেপাটাইটিস এবং যৌনবাহিত অসুখ সংক্রান্ত উপদেষ্টা ডা. পো লিন চান, আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন জনস্বাস্থ্য আধিকারিক ডা. ডিসিএস রেড্ডি-সহ সরকারি হাসপাতালের একাধিক আধিকারিকরা। মায়ের থেকে শিশুর এইচআইভি, হেপাটাইটিস বি ঠেকাতে স্টেট টাস্ক ফোর্স তৈরি করেছে রাজ্য সরকার। তার উপদেষ্টা ডা. পল্লব ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, দেশের মধ্যে প্রথম বাংলায় তৈরি হয়েছে মায়ের থেকে শিশুর শরীরে সংক্রমণ ঠেকানোর এই মডেল। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রেও তা প্রশংসিত হয়েছে। তিনি জানান, প্রতিটি সরকারি হাসপাতালে গর্ভবতী মায়েরা চেকআপ করাতে আসেন। তাঁদের স্ক্রিনিংয়ে জোর দেওয়া হচ্ছে। যদি দেখা যায়, মা হেপাটাইটিস বি ভাইরাসে আক্রান্ত সেক্ষেত্রে প্রসবের ২৭ সপ্তাহে বিশেষ ওষুধ চালু করা হচ্ছে।