
একসময় রাম কাপুর টিভি এবং সিনেমায় তাঁর ভারী শরীর এবং ভারী কণ্ঠের জন্য পরিচিত ছিলেন। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলিতে তাঁর অসাধারণ রূপান্তর দেখে সবাই অবাক হয়ে গেছেন। ১৪০ কেজি থেকে কমে প্রায় ৮৫ কেজি হওয়া, তাও আবার কোনও অস্ত্রোপচার ছাড়াই, নিজেই এক উদাহরণ। রাম কাপুরের এই যাত্রা কোনও ক্র্যাশ ডায়েট ছিল না, কোনও অলৌকিক পরিকল্পনাও ছিল না। বরং তিনি ৩ টি খুব সহজ কিন্তু নিয়মতান্ত্রিক ডায়েটের নিয়ম মেনে চলেছেন, এবং এর প্রভাব আজ সবাই দেখতে পাচ্ছেন। আজ আমরা সেই তিনটি নিয়ম সম্পর্কে বিশদভাবে জানব।
রাম কাপুর তাঁর ওজন কমানোর শুরু করেছিলেন ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং দিয়ে। এতে তিনি ১৬ ঘন্টা উপবাস এবং ৮ ঘন্টা খাবারের রুটিন গ্রহণ করেছিলেন, যাকে সাধারণ ভাষায় ১৬:৮ সূত্র বলা হয়। তিনি তাঁর প্রথম খাবার সকাল ১১ টার পরে এবং শেষ খাবার সন্ধ্যা ৭ টার আগে খেতেন। এছাড়াও, দিনভর শুধুমাত্র জল, হার্বাল টি বা ব্ল্যাক কফি পান করতেন। এখন প্রশ্ন হল, কেন কার্যকর ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং? আসলে এটি শরীরকে হজমের বিশ্রাম দেয়, ইনসুলিনের মাত্রা কমায় এবং শরীরের চর্বি শক্তিতে রূপান্তরিত হতে শুরু করে।
রাম কাপুর তাঁর খাবার থেকে সম্পূর্ণভাবে চিনি বাদ দিয়েছিলেন। তিনি মিষ্টি, বেকড জিনিসপত্র (যেমন কেক, কুকিজ), প্যাকেটজাত রস এবং কোল্ড ড্রিঙ্কস এবং লুকানো চিনিযুক্ত খাবার (যেমন প্রক্রিয়াজাত গ্রেভি, রেডিমেড স্ন্যাকস) খাওয়া ছেড়ে দিয়েছিলেন। এর ফলে রক্তে শর্করার মাত্রা স্থির থাকে, বারবার ক্ষুধা লাগে না এবং চর্বি জমাও বন্ধ হয়।
রাম কাপুরের ডায়েটে কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ খুব সীমিত ছিল, যখন প্রোটিনের গ্রহণ বাড়ানো হয়েছিল। তিনি তাঁর ডায়েটে সেদ্ধ ডিম, গ্রিলড চিকেন/মাছ, ডাল এবং পনির, সালাদ, সবুজ শাকসবজি, ওটস বা বাজরা মাঝেমধ্যে খেতেন। এর ফলে তাঁর শুধু চর্বি কমাতেই সাহায্য হয়নি, বরং মাংসপেশীর ক্ষতি হয়নি, যার ফলে শরীরের টোন বজায় ছিল।
ডায়েটের সাথে রাম কাপুর নিয়মিত ওয়ার্কআউটকেও তাঁর রুটিনে অন্তর্ভুক্ত করেছিলেন। এতে ৪৫ মিনিট কার্ডিও, ৪৫ মিনিট ওয়েট ট্রেনিং, যোগব্যায়াম এবং স্ট্রেচিং অন্তর্ভুক্ত ছিল। এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ৭-৮ ঘন্টা পূর্ণ ঘুম। ঘুমের অভাব চর্বি জমার সবচেয়ে বড় কারণ। স্লিপ এক্সপার্ট ডঃ ম্যাথিউ ওয়াকারের মতে, ৫ ঘন্টার কম ঘুমানো ব্যক্তিদের চর্বি জমার ঝুঁকি ৫৫% বেশি।