হায়ার অ্য়ান্ড ফায়ারে বিশ্বাসী যেসব সংস্থা মনে করে, ভাত ছড়ালে কাক অর্থাৎ কর্মচারীর অভাব হয় না, তাদের জন্য় খারাপ খবর। কারণ, ওয়ার্লড ইকোনমিক ফোরামের ওয়েবসাইটে সম্প্রতি একটি নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে, যাতে একটি গবেষণার কথা বলা হয়েছে। আর সেই গবেষণায় যা বেরিয়ে এসেছে তার মোদ্দা কথা হল, কর্মচারী সুখী থাকলে তবেই প্রতিষ্ঠানের সাফল্য় বাড়ে।নচেৎ...।
যেসব সংস্থা কর্মচারীদের দুচ্ছাই করে যায় অনবরত, নানা অছিলায় মাইনে কাটে, অনবরত তাড়িয়ে দেওয়ার ফন্দি-ফিকির খোঁজে, তারা কি তাহলে সাফল্য়ে শিখরে পৌঁছতে পারে না? গবেষণা বলছে: ঠিক তাই।
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্য়ালয়ের এসএডি বিজনেস স্কুলের কিছু গবেষক ওই গবেষণাটি চালান বেশ কিছুদিন ধরে। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, সন্তুষ্ট মানুষেরাই একটি কাজ সবচাইতে ভালভাবে সম্পন্ন করতে পারেন। বলা হয়েছে, কর্মচারী সুখী থাকলে প্রতিষ্ঠানের সাফল্য় বাড়ে। কাজের গতি বাড়ে। কাজের মানও বাড়ে। আর যার নীট ফল হল, সাফল্য়ের শীর্ষে ওঠে সংস্থা। তাই কর্মচারীদের সন্তুষ্ট রাখার কোনও বিকল্প নেই।
মাসছয়েক ধরে গবেষণাটি চলে। ব্রিটিশ টেলিকম প্রতিষ্ঠানের ১৮০০টি কল সেন্টারের কর্মীদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য়কে সামনে রেখে গবেষণা চলে। সেখানে দেখা গিয়েছে, সংস্থার উৎপাদনের ক্ষেত্রে কর্মচারীদের সুখের প্রত্য়ক্ষ সম্পর্ক রয়েছে। ওই গবেষণায় কল সেন্টারের কর্মচারীদের বলা হয়েছিল, তাঁরা যেন প্রতি সপ্তাহে নিজেদের সুখের মাত্রাকে চিহ্নিত করেন। সেইমতো সুখের মাত্রা চিহ্নিত করেছিলেন কর্মচারীরা। তাতে করে দেখা গিয়েছিল, কর্মচারীরা যখন সুখে থাকেন, আনন্দে থাকেন, তখন তাঁদের কাজের পরিমাণ বা আউটপুট অনেক বেড়ে যায়। এবং গবেষণায় দেখা গিয়েছে, অসুখী কর্মীদের তুলনায় সুখী কর্মীরা প্রতিষ্ঠানের উৎপাদিত পণ্য় ১৩ শতাংশ বেশি বিক্রি করে থাকেন।
গবেষণাপত্রটি লিখেছেন যাঁরা তাঁদের অন্য়তম ডি নেভে-র কথায়, কাজের জায়গায় কর্মীদের সন্তুষ্টির বিষয়টি নিশ্চিত করতে নিয়োগকর্তার ভূমিকা আছে। সংস্থার নিজের স্বার্থেই কর্মচারীদের সুখ ও স্বাচ্ছন্দ্য়ের বিষয়টি দেখা দরকার কর্তৃপক্ষের।
যেসব সংস্থার কর্ণধাররা ভাবছেন, শুধু চাপের মুখে রাখলেই কর্মচারীদের কাছ থেকে কাজ আদায় করে নেওয়া যাবে, তাঁরা কি গবেষণাপত্রটি একবার পড়ে দেখবেন?