শিশুদের এই চারটি সমস্যা অবহেলা করবেন না, এতে খারাপ প্রভাব পড়বে বাচ্চাদের ওপর, জেনে নিন কী কী

Published : Apr 28, 2025, 02:20 PM IST
Meghana

সংক্ষিপ্ত

আজকাল বাচ্চারা বেশিরভাগ সময় ডিজিটাল জগতে কাটাচ্ছে। এর ফলে সামাজিক সম্পর্ক অনেক কমে যাচ্ছে এবং ঘরের মধ্যেই আবদ্ধ থাকছে এবং কেবল ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের সাথেই সম্পর্ক স্থাপন করছে।

আগের প্রজন্মের তুলনায় আজকাল বাচ্চাদের মধ্যে স্বভাবগত সমস্যা বেশি দেখা যাচ্ছে। শুরুতেই এই ধরনের সমস্যাগুলি কী তা সনাক্ত করে বিশেষজ্ঞের চিকিৎসা এবং বাচ্চাদের লালন-পালনের পদ্ধতিতে প্রয়োজনীয় কিছু পরিবর্তন না আনলে তাদের খারাপ স্বভাব ভবিষ্যৎ জীবনে প্রভাব ফেলার সম্ভাবনা অনেক বেশি। বাচ্চাদের ভালোভাবে বড় করে তোলার জন্য এবং ভালো বাচ্চাদের বাবা-মা হওয়ার জন্য তাদের চারটি সমস্যা সমাধানে বিশেষ মনোযোগ দিন।  

১) সহানুভূতির অভাব (Lack of Empathy): -

অন্যের জায়গায় দাঁড়িয়ে ভাবার ক্ষমতাকেই সহানুভূতি (Empathy) বলে। আজকাল অনেক বাচ্চাই স্বার্থপর হয়ে বড় হচ্ছে। স্বার্থপর মনোভাব নিয়ে বাচ্চারা বড় হলে তাদের অন্যের জায়গায় দাঁড়িয়ে ভাবার ক্ষমতা কমে যায়। প্রতিটি বাবা-মায়ের মনে রাখা উচিত, আপনিও তাদের কাছে অন্য একজন। আপনার অনুভূতি বাচ্চারা বুঝতে হলে তাদের সহানুভূতি থাকতে হবে। সহানুভূতি ছাড়া বাচ্চাদের বড় করলে তারা কখনোই আপনার অনুভূতি এবং মন বুঝতে পারবে না। 

তাই শুরুতেই বাচ্চাদের মনে সহানুভূতি গড়ে তোলার চেষ্টা করুন। 
এর জন্য বাচ্চাদের শেয়ারিং উন্নত করুন। সাথে আত্মনিয়ন্ত্রণ বাড়ানোও ভালো। ব্যক্তি এবং জিনিসপত্র নিয়ে কথা বলার সময় তারা যদি 'আমার' বলে, তাহলে তাদের মধ্যে সহানুভূতি নেই তার প্রমাণ।  'আমার' (I) চিন্তা বদলে 'আমাদের' (We) চিন্তা করতে তাদের প্রশিক্ষণ দিন। আত্মনিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেললে বাচ্চাদের মধ্যে তা গড়ে তোলার জন্য দক্ষতা বিকাশ করাও জরুরি। 

২) সামাজিক সম্পর্কে ঘাটতি (Lack of Social Interaction): -

আজকাল বাচ্চারা বেশিরভাগ সময় ডিজিটাল জগতে কাটাচ্ছে। এর ফলে সামাজিক সম্পর্ক অনেক কমে যাচ্ছে এবং ঘরের মধ্যেই আবদ্ধ থাকছে এবং কেবল ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের সাথেই সম্পর্ক স্থাপন করছে। সমাজের সাথে যোগাযোগ কমে গেলে স্বাভাবিকভাবেই বাচ্চারা পথভ্রষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। তাই সমাজের সাথে সম্পর্ক বাড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।  

উদাহরণস্বরূপ, ক্লাব, লাইব্রেরি, NCC, NSS, Scout and Guides, SPC, Red Cross ইত্যাদি বিভিন্ন সংগঠন এবং শিল্প-কলা ও ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় তাদের অংশগ্রহণ করান। এতে তারা জয়-পরাজয় কী তা বুঝতে পারবে এবং পরবর্তী জীবনে জয় এলে আনন্দ করবে এবং পরাজয় মেনে নিতে পারবে।

৩) মানসিক অস্থিরতা (Emotional Instability) : - 

কৈশোরকাল আবেগের উত্থান-পতনের সময়।  রাগ, দুঃখ, আনন্দ, ঈর্ষা ইত্যাদি আবেগ এই বয়সে বেশি থাকে। এছাড়া কিছু বাচ্চাদের, বিশেষ করে যাদের মৃগীরোগ,  অপরিপক্কতা, জন্মগত বৃদ্ধির ত্রুটি, অতিসক্রিয়তা এবং মনোযোগের অভাব ইত্যাদি সমস্যা আছে, তাদের মধ্যে মানসিক অস্থিরতা দেখা যায়। অন্যান্য বাচ্চাদের তুলনায় এদের মধ্যে রাগ, জেদ, অভিমান এবং আক্রমণাত্মকতা বেশি থাকে। এছাড়াও বিষণ্ণতা, উদ্বেগ, নেশা, আক্রমণাত্মক আচরণ ইত্যাদি মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যাও দেখা যায়। বাচ্চাদের মধ্যে এই ধরনের সমস্যা দেখা দিলে দ্রুত মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা করানো উচিত। নাহলে বড় হলে অসামাজিক ব্যক্তিত্ব হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। 

৪) অতিরিক্ত নেতিবাচক চিন্তা (Negative Thoughts): -

ভালো চিন্তাই ভালো মানসিক স্বাস্থ্য তৈরি করে। কিন্তু কিছু বাচ্চা ইতিবাচক চিন্তা করার পরিবর্তে নেতিবাচক চিন্তা করে। অতিরিক্ত নেতিবাচক চিন্তা বাচ্চাদের মধ্যে বিষণ্ণতা, উদ্বেগ, মানসিক চাপ ইত্যাদি মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা সৃষ্টি করে। ছোটবেলায় বাচ্চাদের মনে অতিরিক্ত ভয় এবং পরিবার ও পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে পাওয়া কষ্ট ও যন্ত্রণা নেতিবাচক চিন্তা বাড়ায়। তাই আপনার বাচ্চাদের চিন্তায় কোনও পরিবর্তন দেখলে দ্রুত শিশু মনোবিজ্ঞানীর পরামর্শ নিন।

তাই আপনার বাচ্চাদের মধ্যে এই ধরনের ব্যক্তিত্বের সমস্যা দেখা দিলে তাদের এবং আপনার ভবিষ্যৎ জীবন সুরক্ষিত করার জন্য মনোবিজ্ঞানীর সঙ্গে দেখা করুন।  এছাড়া বাচ্চাদের লালন-পালনের পদ্ধতিতে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন আনুন এবং  বিশেষ করে স্নেহ, সততা, শেয়ারিং, যত্ন, সহানুভূতি ইত্যাদি গুণাবলী তাদের মধ্যে গড়ে তুলুন। মেনে চলুন এই কয়টি টিপস। 

 

 

 

PREV
click me!

Recommended Stories

শিশুদের স্মৃতিশক্তি বাড়াতে পারে এমন সাতটি সুপারফুড
শীতকালে বেশিরভাগ শিশুই গা থেকে কম্বল সরিয়ে দেয়, কিন্তু কেন জানেন কি?