
বাচ্চা লিখতে শিখেছে অনেকদিন, তবে এখনো লিখতে গেলে লেখা জড়িয়ে কাকের ঠ্যাং, বকের ঠ্যাং হয়ে যায়। বার বার লিখিয়েও সুন্দর হাতের লেখার অভ্যাস করনো যাচ্ছে না। পরীক্ষায় ভালো লিখে আসলেও সেই গড়পড়তায় নম্বর পাচ্ছে খাতায়। শিক্ষকেরা নাকি পড়তেই পারছেন না বাচ্চা কী লিখছে। একেই দুরন্ত, পড়াশোনায় অমনোযোগী, তায়ে খারাপ হাতের লেখা - অতিষ্ট বাবা-মায়েরা।
তাই ছোট থেকেই অভ্যাস করাতে হবে। সুন্দর হাতের লেখা কারও জন্মগত গুণ নয়, বরং ছোটো থেকে নিয়মিত অভ্যাস ও পরিকল্পনা করে শিখলেই মুক্তোর মতো হবে ঝরঝরে, স্পষ্ট ও পরিচ্ছন্ন হাতের লেখা পাওয়া সম্ভব।
১। প্রথম থেকেই স্পষ্ট অক্ষর শেখানো
শিশু যখন প্রথম অক্ষর লেখা শুরু করবে, তখন থেকেই বাংলা স্বরবর্ণ বা ব্যঞ্জনবর্ণ হোক অথবা ইংরেজি অক্ষর, সবই স্পষ্ট করে লেখা শেখাতে হবে।
অনেকে নিজেই হয়তো অক্ষরগুলি পেঁচিয়ে, বিকৃত করে লেখেন। এগুলো শিশুকে শেখালে শিশু সেটাই মেনে নেবে। তাই আগে নিজে শিখে নিন ঠিকঠাক ভাবে।
২। শুরুতে ফোর লাইনার খাতা ব্যবহার
অনেক সময়েই শিশুরা ইংরেজিতে ছোট হাতের ও বড় হাতের অক্ষর গুলিয়ে ফেলে, আবার বাংলায় এক একটা অক্ষর আলাদা আকার ও মাত্রাছাড়া করে লিখতে থাকে, এদিকে নজর দিন। বসিয়ে যত্ন সহকারে শেখান।
কাজ আরও সহজ হবে যদি ইংরেজির জন্য শুরুর দিকে ফোর লাইনার পাতায় লেখান। হাতের লেখা ভাল হতে শুরু করলে তার পরে সিঙ্গল রুলড পেপার এবং পরে একেবারে সাদা পাতায় লেখার অভ্যাস করতে হবে।
৩। লাইন সোজা রাখার অভ্যাস করান
লেখার লাইন যেন এঁকেবেঁকে গেলে লেখা দেখতে খুবই অপরিচ্ছন্ন ও খারাপ লাগবে। তার জন্য মার্জিন টেনে দিন বা গাইড লাইন ব্যবহার করুন। প্রতিটি অক্ষর যেন সমান মাপের হয় ও লাইন সোজা থাকে, তা খেয়াল রাখতে হবে। প্রতিটি শব্দের মাঝখানে ও লাইনের ফাঁকে সমান ফাঁকা রাখার নিয়ম শেখাতে হবে।
৪। পেনসিল ও পেন ধরা শেখান
নিব বা শিসের ডগা থেকে অন্তত দেড়-দু’ইঞ্চি দূরে পেনসিল বা পেন ধরা জরুরি। আট–ন’বছর বয়স পর্যন্ত পেনসিলে লিখতে দিন, তার পর পেনে লেখা ধরাতে পারেন। তবে পেনসিল থেকে পেন ব্যবহার করার সময়ে ফাউন্টেন পেনের ব্যবহারই শুরুতে হওয়া উচিত, পরে জেল বা বল পেন।
৫। দৈনিক হাতের লেখা অনুশীলন
প্রতি দিন নিয়ম করে বাংলা ও ইংরেজি হাতের লেখা অভ্যাস করাতে হবে। অন্তত দু’পাতা করে হলেও লিখতে দিন। ছুটির দিনে আরও বেশি লিখুক। এই অভ্যাস পরীক্ষার সময়েও দ্রুত লিখতে সাহায্য করে শিশুর।