
প্রতিযোগিতার যুগে বাবা-মায়ের কাছে সংসার ও চাকরির ভারসাম্য রাখা যেন প্রতিদিনের চ্যালেঞ্জ। বিশেষ করে যারা কর্মজীবী, তারা সকাল থেকে রাত পর্যন্ত নানা দায়িত্বে ব্যস্ত। কিন্তু এই ব্যস্ততার মাঝে সবচেয়ে বেশি অবহেলিত হয়ে পড়ে পরিবারের ছোট সদস্য, আপনার সন্তান। বাবা-মায়েরাও যেমন সারাদিন সন্তানের থেকে দূরে থেকে তাদের মিস করেন, সন্তানদেরও মন ভেঙে যায় তেমনই। তবে একটু সময় বের করে রুটিন তৈরি করলেই কাটানো যাবে কোয়ালিটি টাইম যা আপনার সন্তানের সাথে বন্ধন গড়ে তুলবে।
সন্তানের সঙ্গে সময় কাটানোর কিছু উপায়
১। দিনের শুরুতে কিছুটা সময় সন্তানকে দিন
সকালের ব্যস্ততার মাঝেও চেষ্টা করুন সন্তানকে ঘুম থেকে ডেকে তোলা, দাঁত মাজানো, ইউনিফর্ম পরানো, টিফিন বানানো—এই সবটাই নিজে তাকে করে দিতে। অফিসে যাওয়ার আগে আরেকটু সময় পেলে স্কুলে পৌঁছে দিয়ে আসার সময়টাও হতে পারে মূল্যবান মুহূর্ত।
২। সময় পেলেই মানসিক যোগাযোগ বাড়ান
ব্যস্ততা থাকলেও কাজের মাঝে মাত্র সময় বার করে গল্প করুন—“আজ কী করলি?”, “বন্ধুদের সঙ্গে কী খেলা খেললি?” জিজ্ঞেস করুন। একসঙ্গে ছবি আঁকা, গল্পের বই পড়া, অন্তত জড়িয়ে ধরা—এই ছোট ছোট জিনিস শিশুর মনে আনন্দ বয়ে আনে।
৩। প্রযুক্তির সহায়তায় দূর থেকেও পাশে থাকুন
যদি সারাদিন বাড়িতে না-ই থাকতে পারেন, তাহলে হোয়াটসঅ্যাপ ভয়েস মেসেজ, ভিডিও কল এসবের মাধ্যমে খুব সহজেই শিশুকে আপনার ভালোবাসা ও উপস্থিতির আশ্বাস দিতে পারেন।
৪। সপ্তাহে অন্তত একদিন রাখুন শুধুই সন্তানের জন্য
অফিসের ব্যস্ততা থাকলেও একটা দিন বরাদ্দ রাখুন শুধুই সন্তানের জন্য। ছুটির দিন বেড়িয়ে আসুন পছন্দের কোথাও থেকে, পছন্দের খাবার খেতে যান, বা একসঙ্গে সিনেমা দেখুন। শিশু খুব ছোট হলে, ঘরেই তার সঙ্গে খেলুন, গান করুন, নাচুন—আপনার উপস্থিতিই আপনাদের মাঝের সম্পর্ক ভালো রাখবে।
মনে রাখবেন, আজ যে ছোট্ট, যাকে সামলাতে এতো ঝক্কি পোয়াতে হচ্ছে, কাল সে খুব তাড়াতাড়ি বড় হয়ে উঠবে। তখন তার নিজস্ব দুনিয়া হবে, সেদিকে সেও ব্যস্ত হবে।তখন আপনার কাছে সময় থাকলেও, সুযোগ হবে না। ভবিষ্যতের সম্পর্ককে মজবুত করতে হলে এখনই সন্তানের সঙ্গে গড়ে তুলুন ভালোবাসা আর বন্ধুত্বের সম্পর্ক, যাতে আপনার বয়সকালেও সে হয়ে উঠতে পারে আপনার সবচেয়ে কাছের মানুষ।