হাতে চার পাঁচ দিন ছুটি থাকলেই ঘুরে আসা যায় চিলকা। পুরী, গোপালপুর বেড়াতে গেলে ওখান থেকেও অনেকেই ঘুরে আসেন চিলকা। এমন বিশাল প্রাকৃতিক হ্রদ, শান্ত পরিবেশ মনকে শান্ত করে। রম্ভা ঘুরেও অনেকে ফিরে যান পুরী কিংবা গোপালপুর কিন্তু রম্ভাকে ভালো করে জানতে হলে রাত কাটাতে হবে রম্ভায়। চিলকায় পোঁছনো্র তিনটি পথ আছে-
-পুরীর সাতপারা, বালুগাঁওয়ের বড়কুল এবং বালুগাঁওয়ের রম্ভা।
বালুগাঁও স্টেশন থেকে ৩৫ কিমি দূরে রম্ভায় ওড়িশা সরকারের পান্থ নিবাস। এই পান্থ নিবাসের চারপাশ বড়ো সুন্দর। ফুল বাগান দিয়ে সাজানো। রম্ভায় দু তিনদিন থাকতে হলে এখানেই থাকা ভালো। পান্থনিবাস থেকেই চিলকার সৌন্দর্য উপভোগ করা যায় নিজের মতো করে।
রম্ভা চিলকা পৃথিবীর বৃহত্তম হ্রদ। পুরী, গঞ্জাম, খুরদা জেলাগুলোকে ঘিরে এই চিলকার ব্যাপ্তি। সাতপারা, বড়কুল ও রম্ভার মধ্যে সবচেয়ে সুন্দর রম্ভা। রম্ভা হ্রদে বিভিন্ন দ্বীপ আছে তারমধ্যে অনেকগুলিতেই নেমে হেঁটে ঘোরা যায়। ব্রেকফাস্ট আইল্যান্ড, ঘন্টাশিলা হিল আইল্যান্ড, বার্ডস আইল্যান্ড, হানিমুন আইল্যান্ড এবং সানাকুডা আইল্যান্ড। জলের মধ্যে ভাসমান প্রাচীন লাইট হাউস দেখে অন্য অনুভূতি হয়। নৌকা ভাড়া নিয়ে ঘন্টা তিন চারের মধ্যেই ঘুরে নেওয়া যায় এই দ্বীপগুলো। নির্জন দ্বীপ, হ্রদের মধ্যে নানা পাখির আনাগোনা, কূল হারানো জলের ডাক নেশা ধরায় মনে। পাখি দেখা যাদের নেশা তারা মাঝেসাঝেই যান রম্ভায়। হাতে দাঁড় টানা নৌকায় চেপে ঘুরলে পাখি দেখতে পাওয়ার সুযোগ বেশি থাকে, এখানে প্রায় ১৫০ রকমের পরিযায়ী পাখির প্রজাতি দেখতে পাওয়া যায়। ওড়িশা সরকারের বেঁধে দেওয়া দামে পান্থনিবাসের কাছ থেকেই নৌকা ভাড়া করা যায়।
রম্ভা থেকে পর্যটকরা যেতে পারেন নির্মল ঝোরা-এ বিমলা দেবীর মন্দিরে। এই জায়গাটি আবার খুব জনপ্রিয় পিকনিক স্পট। রম্ভা থেকে দুরত্ব ১১ কিমি। আরও একটু দূরে (রম্ভা থেকে ২২ কিমি) নারায়ণী দেবীর মন্দির আছে পাহাড়ের ওপর। সেখানেও অনেকে যান। আর একটি সুন্দর সমুদ্র সৈকত আছে যেটা রম্ভার কাছেই, এবং এই রুষিকুল্যা সৈকতভূমি অন্য কারণে বেশ বিখ্যাত। রুষিকুল্যা বিচে অলিভ রিডিলে কচ্ছপদের প্রজনন করানো হয়। রুষিকুলায় থাকার জায়গা নেই। এছাড়া রম্ভায় থেকেই দেখে নিন সাতপারা আর বড়কুল।
রম্ভায় যাওয়ার আদর্শ সময় হল শীতকাল। তবে বর্ষাকালেও রম্ভা ভালো লাগবে।
কীভাবে যাবেন- বালুগাঁও ও ব্রহ্মপুর স্টেশনের মাঝামাঝি রম্ভা অবস্থিত। বালুগাঁও স্টেশন থেকে অটো বা গাড়ি ভাড়া করে পৌঁছতে হবে রম্ভা।
কোথায় থাকবেন- ওড়িশা সরকারের পান্থনিবাস। আগে থেকে ঘর বুক করে রাখতে হবে। বরিষ্ঠ নাগরিক ও প্রতিবন্ধীদের জন্য ছাড় আছে ঘর ভাড়ায়। এখানকার খাওয়া দাওয়া বেশ ভালো।