দুর্গা পুজোর সূচনা হয়েছিল বহু প্রাচীন কালেই । দুর্গার পুজো শুরুর যথার্থ নথি না পাওয়া গেলেও, বৈদিক সাহিত্যে দুর্গার পরিচয় আছে। অনেকেরই মতে, সম্ভবত মোঘল আমল থেকেই ধনী পরিবারগুলিতে দুর্গা পুজো করা হত। ইতিহাস বলছে দেবীর পুজো সম্ভবত ১৫০০ শতকের শেষ দিকে প্রথম শুরু হয়। সম্ভবত দিনাজপুর- মালদার জমিদার স্বপ্নাদেশের পর প্রথম পারিবারিক দুর্গা পুজো শুরু করেছিলেন। তবে এই দুর্গার রূপ ছিল অন্যরকম। লোককথা মতে আদি দুর্গার চোখ গোলাকার ও উজ্জ্বল এবং দেবী সাদা বাঘ ও সবুজ সিংহের উপর বিরাজ করেন।
আরও পড়ুন- সন্ধি পুজোর পরেই শুরু হয় মায়ের যাওয়ার ক্ষণ, দেখে নিন সন্ধিপুজোর সমস্ত নিয়ম এবং প্রথা
অন্য সূত্রানুসারে, তাহেরপুরের রাজা কংসশনারায়ন বা নদীয়ার ভবানন্দ মজুমদার বাংলায় প্রথম শারদীয়া বা শরৎ দুর্গা পূজা সংগঠিত করেন। এরপরে রাজশাহির রাজা এবং বিভিন্ন গ্রামের হিন্দু রাজারা প্রতি বছর এই পুজো আরম্ভ করেন। আবার কলকাতায় ১৬১০ সালে বারিশার রায়চৌধুরী পরিবার প্রথম দূর্গাপুজার আয়োজন করেছিল বলে জানা যায়। ১৭৫৭ সালে পলাশীর যুদ্ধে জয়লাভের পর রাজা নবকৃষ্ণদেব লর্ড ক্লাইভের সন্মানে কলকাতার শোভা বাজার রাজবাড়িতে দূর্গাপূজার মাধ্যমে বিজয় উৎসবের আয়োজন করেছিলেন এবং তাঁর জন্য বিদেশ থেকে নিকি বাঈ নামে এক নর্তকীকে আনিয়ে ছিলেন। ব্রিটিশ বাংলায় এই পূজা ক্রমশঃ বৃদ্ধি পায় এবং ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে দূর্গাপুজো স্বাধীনতার প্রতীক হিসাবে জাগ্রত হয়।
আরও পড়ুন- পুজোর জুয়েলারি শপিং করার আগে, দেখে নিন এ বছর কোন ধরণের গয়না রয়েছে ফ্যাশন ট্রেন্ডিং-এ
১৯১০ সালে কলকাতায় প্রথম আনুষ্ঠানিক ভাবে বারোয়ারি পুজোর শুরু হয়। সনাতন ধর্মতসাহিনি সভা, বাগবাজারে সার্বজনীনে একটি দুর্গোৎসবের সূচনা করেন যা সম্ভব হয়েছিল জনসাধারণের সহযোগিতার সাহায্যে। তারপর থেকে গোটা বাংলায় দুর্গা পুজোর প্রবল প্রচার হয় এবং বর্তমানে এটি বাংলার সর্বশ্রেষ্ঠ উৎসব হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। তাই বাংলা ছাড়িয়ে এই উৎসব পারি দিয়েছে বিদেশেও।