
Travel News: ধর্মপ্রধান দেশ, ভারতের প্রতিটি অঞ্চলে ছড়িয়ে রয়েছে নানা রকম মন্দির। কিছু মন্দির শুধুমাত্র ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে নয়, বরং রহস্যময় ও ভয়ংকর ইতিহাস এবং কাহিনির জন্যও বিখ্যাত। এমন কিছু মন্দির রয়েছে, যেগুলির নাম শুনলে সাধারণ মানুষের মনে ভয় ঢুকে যায়। এই মন্দিরগুলিতে রাত কাটানো তো দূরের কথা, কেউ সূর্যাস্তের পর তার আশেপাশেও ঘেঁষেন না। এসব স্থানের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে অভিশাপ, অশরীরী আত্মা, অপার শক্তির অস্তিত্ব এবং অলৌকিক সব ঘটনা। আজ আমরা জানব ভারতের এমনই কিছু ভয়ঙ্কর ও রহস্যময় মন্দির সম্পর্কে।
১। রাজস্থানের কিরাডু মন্দির
রাজস্থানের কিরাডু মন্দির তার স্থাপত্যের জন্য বিখ্যাত হলেও, এর সাথে রয়েছে অবাক করা ভয়ংকর কাহিনী। রাজস্থানের বারমের শহর থেকে ৩৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই মন্দিরে আজও কেউ সূর্যাস্তের পর থাকতে চায় না, ভয় পায়। এখানে নাকি সূর্যাস্তের পরে কেউ থাকলে সে পাথরে পরিণত হয়।
কথিত আছে, একজন সাধু তার শিষ্যদের যত্ন নেওয়ার দায়িত্ব এখানে বসবাসকারী লোকদের দিয়েছিলেন, কিন্তু গ্রামবাসীরা এই দায়িত্ব পালন করেননি। যার কারণে সাধুর শিষ্যের মৃত্যু হয়। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে সাধু এখানে বসবাসকারী লোকদের অভিশাপ দেন যে সূর্যাস্তের পরে কেউ এখানে থাকলেই সে পাথরে পরিণত হবে।
২। রাজস্থানের মেহেন্দিপুর বালাজি মন্দির
রাজস্থানে অবস্থিত মেহেন্দিপুর বালাজির মন্দিরট খুবই বিখ্যাত। হনুমানজী'র এই মন্দিরটি ভূত তাড়ানোর জন্য পরিচিত। সবসময় লড়াই করার জন্য এই মন্দিরের পরিবেশও গা ছমছমে ও চরম ভীতিকর হয়ে উঠেছে। ভুতে ভর করা ব্যক্তিদের শিকল দিয়ে বেঁধে আনা হয় এখানে, ভূত তাড়ানোর জন্য চাবুক দিয়ে পেটানো হয়।
দুর্বল হৃদয়ের লোকেরা এই ভয়াবহ পরিবেশ সহ্য করতে পারে না। তাই যেতে হলে সেরকম মানসিক প্রস্তুতি নিয়ে তবেই যান।
৩। দত্তাত্রেয় মন্দির, মধ্যপ্রদেশ
মধ্যপ্রদেশের গঙ্গাপুরে অবস্থিত দত্তাত্রেয় মন্দিরকে ভূতুড়ে মন্দির বলা হয়। বলা হয়, কেউ এই মন্দিরের ভেতরে গেলে কোনও এক অদৃশ্য শক্তি তাকে ভিতরে বন্দী করে নেয়।
আরও অবাক হবেন শুনলে, অমাবস্যা এবং পূর্ণিমার দিনে, লোকেরা মন্দিরে জড়ো হয় এবং দেবতাদের গালি দেয়। অমাবস্যা এবং পূর্ণিমার দিনে এটি করলে মানুষ অশুভ আত্মার বন্দীদশা থেকে মুক্তি পায়। এমন অদ্ভুত ও ভয়ানক ঘটনা এই মন্দিরটিকে ভারতের সবচেয়ে অদ্ভুত মন্দিরগুলির মধ্যে অন্যতম করে তোলে।
৪। দেবীজি মহারাজ মন্দির, মধ্যপ্রদেশ
মধ্যপ্রদেশে অবস্থিত দেবীজি মহারাজ মন্দিরেও ভূত ভরের বাধা দূর করা হয়। পূর্ণিমার রাতে দেবীজি মহারাজ মন্দিরে ভূতের মেলার আয়োজন করা হয়। দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ বিশ্বাস নিয়ে অশুভ আত্মা থেকে মুক্তি পেতে এই মেলায় আসেন। ভুতে ভোর করা ব্যক্তিকে এই মেলায় নিয়ে যাওয়া হয়, তারপর ঝাড়ু দিয়ে মেরে ভূতকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়।
স্থানীয় মানুষদের বিশ্বাস, এই মেলায় গেলে মানুষ এক অদ্ভুত শক্তি অনুভব করে, যা তাদের এই মন্দিরের প্রতি বিশ্বাসকে আরও দৃঢ় করে।
৫। চণ্ডী দেবী মন্দির, হরিদ্বার
দেবভূমি উত্তরাখণ্ডের হরিদ্বার জেলায় অবস্থিত চণ্ডী দেবী মন্দির। বিশ্বাস করা হয় যে নবরাত্রির নয় দিন এই মন্দিরে উপবিষ্ট দেবী চণ্ডী হিংস্র রূপ ধারণ করেন, তাই নবরাত্রির সময় এই মন্দিরে আসলে আপনিও এক অদ্ভুত শক্তি অনুভব করবেন।
বছরের অন্যান্য দিনগুলিতে, লোকেরা ভক্তি ভরে পুজো, মনের বিশ্বাস-আকাঙ্খা নিয়ে, এমনকি নেতিবাচক শক্তি থেকে মুক্তি পেতেও এই মন্দিরে আসেন অনেকে।
আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।