হাতে সময় নেই, মাত্র ৩ দিনেই ঘুরে আসুন পাহাড়, সমুদ্র ,জঙ্গল! কীভাবে যাবেন?

Published : Sep 14, 2025, 03:32 PM IST
Travel

সংক্ষিপ্ত

কলকাতা থেকে চারচাকাতে বেরিয়ে পড়তে পারেন সাগর, পাহাড়, ঝর্না, অরণ্য দেখতে। বিস্তারিত জানতে পড়ুন সম্পূর্ণ প্রতিবেদন…

Travel Tips: পুজো তো এবার প্রায় এসেই গেল। সব স্কুল কলেজ ছুটির মুখে। মহালয়ার পরেই কোথাও পঞ্চমী আবার কোথাও ষষ্ঠীর দিন হয়ে হবে ছুটি। আর অনেকেই এই পূজোর ছুটিতে প্ল্যান করে থাকেন দূরে হোক বা কাছে কোথাও বেড়াতে যাবেন।

তবে পুজোর সময় হঠাৎ ঠিক হওয়া ট্রেনের টিকিট মেলেনি কিংবা পুজোর ছুটির আগে থেকে জানা সম্ভব হয়নি!

তাহলে কলকাতা থেকে চারচাকাতে সওয়ার হয়েই চলুন সাগর, পাহাড়, ঝর্না, অরণ্য দেখতে। চারচাকা সঙ্গে থাকলে দর্শনীয় স্থান ঘুরতে ঘুরতেই পৌঁছনো যাবে গন্তব্যে। এক রাতে সঙ্গী যদি হয় সমুদ্রের উত্তাল হাওয়া, অন্য রাতে অভিজ্ঞতা হতে পারে গা-ছমছমে বনবাসের।

বেশ ২-৩ দিনের ছুটি পেলে তাহলে কিভাবে করবেন ঘোড়ার প্ল্যানিং ভাবছেন?? এই ধরুন কাকভোরে যাত্রা শুরু করলে হাতে সময়টা যেমন বেশি পাওয়া যাবে, তেমনই ভোরের মিঠে হাওয়াও উপভোগ্য হবে। কলকাতা থেকে কোলাঘাট, খড়্গপুর হয়ে জলেশ্বর, বালেশ্বর হয়ে প্রথম গন্তব্য দুবলাগড়ি।

কোলাঘাটে প্রথম বিরতি নিয়ে চায়ে চুমুক দিয়ে একটু জিরিয়ে নিন। তারপর ফের কাশফুল আর শরতের আকাশকে সঙ্গী করে গাড়ি টানুন।

ট্রেন যাত্রার যেমন নিজস্ব ছন্দ রয়েছে, তেমনি গাড়িরও আছে। সেখানে ইচ্ছামতো নিজের গানগুলি চালিয়ে দেওয়া যায়। আড্ডা, গল্প, মজায়— হইহই করে সময় কাটে। প্রকৃতির আমেজ উপভোগ করতে করতে কলকাতা থেকে বালেশ্বর সাড়ে চার ঘণ্টার পথ। সেখান থেকেই শুরু হবে আপনার ঘোরা।

বালেশ্বর থেকে রেমুনা-মিত্রপুরের রাস্তা ধরলে ১০ কিলোমিটার দূরত্বেই পড়বে ইমামি জগন্নাথ মন্দির। ঠিক পুরো পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের আদলে তৈরি এই মন্দিরটি ৭৮ ফুট উঁচু। এই মন্দিরের নির্মাণশৈলী খুবই মুগ্ধ করার মতোই। দেওয়াল জুড়ে প্রচুর কারুকাজ করা। ৩ একর বিস্তৃত জায়গার রয়েছে ছোট-বড় অসংখ্য মন্দির। গাছপালা দিয়ে ঘেরা জায়গাটি বেশ মনোরম। এরপর একই রাস্তা ধরে ৭ কিলোমিটার এগোলে ক্ষীরচোরা গোপীনাথ মন্দির। রঙিন কারুকাজ করা মন্দির। গোবিন্দ এবং মদনমোহনের কালো পাথরের মূর্তি রয়েছে এখানে। এই মন্দিরে পূজিত হন গোপীনাথ। এখানে পাবেন ক্ষীর প্রসাদ।

মন্দির থেকে দুবলাগড়ি সৈকতের দূরত্ব ৩৪ কিলোমিটার। আমরা সমুদ্র বলতে শুধু বুঝি ওড়িশা বললেই পুরী, গোপালপুর, চাঁদিপুর সমুদ্রসৈকতের কথাই সকলে বলেন। এত সুন্দর যে আর একটি জায়গা আছে সেটা হয় অনেকেই জানেন না। তবে গত কয়েক বছর ধরে ঝাউয়ের বনঘেরা সৈকতটি ক্রমশ পর্যটকদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। ঢেউয়ের আলতো পরশ। লাল কাঁকড়ার ছুটোছুটি এই সৈকতের বৈশিষ্ট্য। এখানে থাকার জন্য পরিবেশ-বান্ধব ক্যাম্প রয়েছে। সমুদ্রের ধারে মাছ, কাঁকড়া, সবই খেতে পাবেন। শুধু একটু আগে থেকে বলে রাখতে হবে। উন্মুক্ত পরিবেশে তাঁবুতে থাকার অভিজ্ঞতাও সফরে বাড়তি পাওনা হতে পারে।এর পর পরের দিন প্রাতরাশ সেরে বেরিয়ে পড়তে পারেন। দেখে নিন দেবকুণ্ড। ওড়িশার সিমলিপাল জাতীয় উদ্যানের মধ্যেই তার অবস্থান। দুবলাগড়ি থেকে দেবকুণ্ডের দূরত্ব ৯৮ কিলোমিটার। জঙ্গলে প্রবেশের গেট থেকে ব্যাটারিচালিত গাড়ি পৌঁছে দেয় গন্তব্যে।

সকালবেলা সেখানে যাওয়ার পথে ঘুরে নিন নীলগিরি হ্রদ। জলের রং এখানে নীলচে দেখায়। পাহাড় ঘেরা জলাধারটি মনোরম। সেখান থেকে দেবকুণ্ডের রাস্তায় এগোলে সঙ্গী হবে গাছপালা এবং ছোট ছোট পাহাড়। টিলাও বলা চলে অবশ্য। প্রকৃতির রূপ উপভোগ করতে করতেই এসে পড়বে দেবকুণ্ড। তবে সেটি অরণ্যের ভিতরে। দেবকুণ্ড আসলে একটি জলপ্রপাত। তার ঠিক পাশেই অম্বিকা মাতার মন্দির। স্থানীয়দের কাছে এটি পবিত্র তীর্থক্ষেত্র।

দেবকুণ্ডে বছরভর জল না থাকলেও, এই বছর টানা বর্ষায় জলপ্রপাতে জল উপচে পড়ছে। সেপ্টেম্বরেও বৃষ্টির পূর্বাভাস। আশা করা যায়, পুজোর সফরে গেলেও এই ঝর্না হতাশ করবে না। বনপথে সঙ্গ দেবে অজস্র প্রজাপতি। জলপ্রপাতের গা বেয়ে উঠেছে সিঁড়ি। সেখান দিয়ে পৌঁছনো যায় মন্দিরে। সেখান থেকে জলপ্রপাতের আর এক রূপ।

দেবকুণ্ড দেখে সোজা চলুন সিমলিপাল জাতীয় উদ্যানের অন্য অংশে। জঙ্গল থেকে বেরিয়ে মূল রাস্তায় আসতে হবে। সেখান থেকে গাড়ি করে গেলে মোটামুটি ২ ঘণ্টা সময় লাগবে পৌঁছতে। পীথাবাটা প্রবেশদ্বার দিয়ে অরণ্যে প্রবেশের সময় পরিচয়পত্র থাকা বাধ্যতামূলক।

সিমলিপাল জাতীয় উদ্যান হরিণ, বাঘ, হাতি, চিতল, খরগোশ, বনবিড়াল, সম্বর, কাঠবিড়ালি, বুনো শুয়োর, বাঁদরের আশ্রয়স্থল। ২৭৫০ বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে রয়েছে জাতীয় উদ্যান। পীথাবাটা প্রবেশদ্বার গিয়ে ঢুকলে কিছু দূর অন্তর অন্তর থাকার জায়গা রয়েছে। লুলুং-ও খুব কাছেই। শহুরে সমস্ত সুযোগসুবিধাই পাবেন এখানকার কিছু থাকার জায়গায়।

কলকাতা থেকে দুবলাগড়ির দূরত্ব ২৪০ কিলোমিটার। খড়্গপুর, জলেশ্বর হয়ে বালেশ্বর পৌঁছে সেখান থেকে চলুন দুবলাগড়ি। দুবলাগড়ি থেকে পরের দিন দেবকুণ্ড হয়ে সিমলিপাল জাতীয় উদ্যান। সিমলিপাল জাতীয় উদ্যান থেকে কলকাতার দূরত্ব ৩৪০ কিলোমিটার। টানা গাড়িতে গেলে ঘণ্টা আট-নয় সময় লাগবে।

আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।

PREV
Read more Articles on
click me!

Recommended Stories

আন্তর্জাতিক ড্রাইভিং পারমিটের জন্য কীভাবে আবেদন করবেন?
শীতের দিনে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে কলকাতা থেকে একদিনে গিয়ে ঘুরে আসতে পারেন এই জায়গাগুলিতে