প্রথমে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, কিন্তু রোগ সারেনি। শেষপর্যন্ত প্রতিবেশী এক প্রৌঢ়াকে ডাইনি বলে চিহ্নিত করলেন রোগীর পরিবারের লোকেরা। গ্রামের রীতিমতো সালিশি সভা বসিয়ে তাঁর চলল অত্যাচার, ধার্য করা হল মোটা অঙ্কের জরিমানাও! ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোনায়।
চন্দ্রকোনার নীলগঞ্জ এলাকায় থাকেন ভোলানাথ সোরেন। গত কয়েক মাস ধরে তাঁর মা মৃগী রোগে ভুগছেন বলে জানা দিয়েছে। স্থানীয় সূত্রে খবর, ওই বৃদ্ধাকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে ভর্তি করেছিলেন পরিবারের লোকেরা। কিন্তু রোগ আর সারেনি, বরং বাড়ি ফেরার সমস্যা আরও বাড়ে। মা-কে সুস্থ করে তুলতে ওঝা বা জানগুরুর শরণাপন্ন হন ভোলানাথ। ওঝা নিদান দেন, ওই বৃদ্ধার উপর নাকি ডাইনি-র নজর পড়েছে! জানা গিয়েছে, ওঝার কাছে ফিরে প্রতিবেশী লক্ষ্মী হাঁসদা নামে এক মহিলাকে ডাইনি বলে চিহ্নিত করে ভোলানাথ। শুধু তাই নয়, গ্রামে সালিশি সভাও বসানো হয় বলে অভিযোগ। সালিশি সভায় সিদ্ধান্ত হয়, মৃগী আক্রান্ত বৃদ্ধাকে স্রেফ সুস্থ করে তুলে দিলেই হবে না, তাঁকে অসুস্থ করে তোলার জন্য মোটা অঙ্কের জরিমানাও দিতে হবে লক্ষ্মীকে! মঙ্গলবার সকালে পুলিশে অভিযোগ জানান আক্রান্ত মহিলা। বিডিও নিজে গ্রামে গিয়ে লক্ষ্মীকে উদ্ধার করেন। গ্রামবাসীদের কোনওরকম বিশৃঙ্খলা তৈরি না করার জন্য হুঁশিয়ারিও দিয়ে এসেছেন তিনি।
আরও পড়ুন: মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান পরিচয়ে প্রতারণা, কাঠগড়ায় মহিলা তৃণমূল কর্মী
চন্দ্রকোনার বিডিও শ্বাশ্বত প্রকাশ লাহিড়ি বলেন, গ্রামবাসীদের মন থেকে এখনও কুসংস্কার এখনও যায়নি। তাঁদের সচেতনতা করার উদ্যোগ নেওয়া হবে। চিকিৎসক ও আরও বেশ কয়েকজনকে তিনি ফের নীলগঞ্জ গ্রামে যাবেন। আপাতত আক্রান্ত মহিলার এক আত্মীয়ের বাড়িতে রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে।