ফের ঘোলা জলে মাছ ধরতে নামলেন ইমরান
তাঁর অভিযোগ ভারত সরকার 'অহঙ্কারী সম্প্রসারণবাদী নীতি' নিয়েছে
আর তা হুমকি হয়ে উঠেছে প্রতিবেশি দেশগুলোর জন্য
ভারত সরকারের নীতি'কে তিনি তুলনা করেছেন নাৎসিদের 'লেবেনস্রাম' নীতির সঙ্গে
সম্প্রতি সীমান্ত নিয়ে নেপাল এবং চিন - দুই প্রতিবেশী দেশের সঙ্গেই ভারতের সম্পর্কের উত্তেজনা বেড়েছে। সেই সুযোগে ফের একবার ভারত তথা মোদী সরকারের বিরুদ্ধে মৌখিক আক্রমণ শানালেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। বুধবার তিনি অভিযোগ করেছেন, ভারত সরকারের 'অহঙ্কারী সম্প্রসারণবাদী নীতি' প্রতিবেশী দেশগুলির জন্য ক্রমশ 'হুমকি' হয়ে উঠছে। তবে তাঁর এই বক্তব্য ইসলামাবাদের পরম মিত্র চিনকে তুষ্ট করার চেষ্টা হিসাবেই মনে করছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞরা।
বুধবার ইমরান একাধিক টুইট করে, 'ভারত সরকারের অহঙ্কারী সম্প্রসারণবাদী নীতি'র তুলনা করেছেন নাৎসিদের 'লেবেনস্রাম' (ঔপনিবেশিকতা) নীতির সঙ্গে। তাঁর অভিযোগ ভারতের এই নীতি প্রতিবেশী দেশগুলির কাছে চরম হুমকিতে পরিণত হয়েছে। তাঁর মতে বাংলাদেশকে নাগরিকত্ব আইনের মাধ্যমে, নেপাল ও চিন-কে সীমান্ত বিরোধের মাধ্যমে, এবং পাকিস্তানকে মিথ্যে ফ্ল্যাগ অপারেশনের মাধ্যমে হুমকি দিচ্ছে ভারত। তাঁর আরও অভিযোগ, ভারত কাশ্মীরকে 'অবৈধভাবে' যুক্ত করেছে এবং এটা 'যুদ্ধাপরাধ'-এর সামিল।
প্রায় সপ্তাহ দুয়েক আগে লাদাখ সীমান্তে পরপর দুইবার ভারত ও চিনের টহলদার বাহিনী মুখোমুখি হয়েছিল। তারপর থেকে ললাদাখ ও উত্তর সিকিমের প্রায় ৩,৫০০ কিলোমিটার দীর্ঘ প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা বা এলএসি বরাবর বেশ কয়েকটি অঞ্চলে দুই পক্ষই সামরিক মোতায়েন বাড়িয়েছে। এখনও অবধি দুই পক্ষই নিজেদের অবস্থানে কঠোর। উত্তেজনা রয়েছে চরমে। এই অবস্থায় আরও একবার আন্তর্জাতিক মহলে ভারত সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্যই ঘোলা জলে মাছ ধরতে নেমেছেন ইমরান, এমনটাই মনে করা হচ্ছে।
এর আগে পাকিস্তান গত অগাস্টে জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহার করার পরও ভারতের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক মহলে সমর্থন আদায়ের চেষ্টা করেছিল। একই প্রচেষ্টা দেখা গিয়েছিল ভারতে সিএএ বিরোধী আন্দোলন তীব্র হওয়ার সময়েও। কিন্তু, প্রতিবারই তাদের সেই প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। ভারতে বিরুদ্ধে সংখ্যালঘু নির্যাতনের অভিযোগ বুমেরাং হয়ে ধেয়ে এসেছে পাকিস্তানের দিকেই। এই অবস্থায় চিন ও নেপালের সঙ্গে ভারতের সীমান্ত সংক্রান্ত উত্তেজনার মধ্যে এক ঢিলে দুই পাখি মারার চেষ্টা করছেন পাক প্রধানমন্ত্রী, বলছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞরা। এতে করে আন্তর্জাতিক মহলে ভারতের ভাবমূর্তিও খারাপ হতে পারে, আবার বরাবরের বন্ধু চিনকে সমর্থন জুগিয়ে তুষ্ট করা যাবে।