আর্থিক অনটনের কারণে দাম্পত্য কলহ ছিল ওই পরিবারের নিত্যসঙ্গী। নিহত মহিলার এক মেয়ে পুলিশকে ফোন করে নিজের বাবার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছিল।
এক নারকীয় পারিবারিক হিংসার সাক্ষী থাকল পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশ। ছয় সন্তানের সামনে তাদের মাকে হত্যা করে জলের মধ্যে ফেলে সিদ্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের একটি মিডিয়া রিপোর্টে তেমনই জানান হয়েছে। শুরু হয়েছে ঘটনার তদন্ত।
পাকিস্তানের বহুল প্রচলিত জিও নিউজে বলা হয়েছে বুধবার সিন্ধু প্রদেশের পুর নগরী গুলশন - ই - ইকবাল এলাকার একটি বেসরকারি স্কুলের রাান্নাঘর থেকে উদ্ধার হয়েছে নার্গিস নামে এক মহিলার মৃতদেহ। পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করেছে। পুলিশ জানিয়েছে বাজাউর এজেন্সির মহিলার স্বামী আশিক ওই স্কুলেরই রক্ষী হিসেবে কাজ করচেন। আট থেকে নয় মাস ধরে বন্ধ রয়েছে স্কুল। কিন্তু কেয়ারটেকার হিসেবে স্কুলেই আশিক গোটা পরিবার নিয়ে থাকতেন।
পুলিশ জানিয়েছে, আর্থিক অনটনের কারণে দাম্পত্য কলহ ছিল ওই পরিবারের নিত্যসঙ্গী। নিহত মহিলার এক মেয়ে পুলিশকে ফোন করে নিজের বাবার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছিল। তারপরই ঘটনার তদন্তে নামে পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছেন প্রথমে নার্গিস নামের ওই মহিলাকে বালিশ চেপে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। তারপর একটি বড় কড়াইতে ফেলে মহিলাকে সেদ্ধ করেছে। মহিলার মৃত্যু নিশ্চিত করার পরই আট সন্তানের মধ্যে তিন জনকে নিয়ে এলাকা ছেড়ে চম্পট দেয় আশিক। কিন্তু যে তিন সন্তাকে সে নয়ে পালিয়ে গিয়েছিল তারই এক সন্তান সুযোগ বুঝে পুলিশকে ফোন করে সবকিছু জানিয়েছে। পুলিশ আশিক আর নার্গিসের সন্তানদের উদ্ধার করেছে। পাশাপাশি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে নার্গিসের দেহ।
তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছেন স্বামী হয়ে নার্গিসকে পরিবারের অর্থনৈতিক সংকট মেটানোর জন্য বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে জাড়ানোর জন্য চাপ দিয়েছিলে। প্রথমে রাজি হলেও পরে নার্গিস তাতে রাজি হয়নি। তারপরই স্ত্রীকে রাস্তা থেকে সরিয়ে দেওয়ার ছক কষে আশিক। তবে পুলিশ ধ্বন্দ তৈরি হয়েছে হত্যার আগে নার্গিসের একটি শরীর থেকে সম্পূর্ণ রূপে আলাদা করে দিয়েছিল তার অভিযুক্ত স্বামী। কিন্তু কী কারণে এই নৃশংস কাজটি সে করেছিল তার কোনও হদিশ পাচ্ছে না পুলিশ। আশিকের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে।
১১ বছর আগে এই জাতীয় একটি ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটেছিল পাকিস্তানে। সেখানে এক মহিলাকে হত্যা করে তাঁকে কেটে টুকরো টুকরো করে রান্না শুরু করেছিল স্বামী। কিন্তু রান্না শেষ করার আগেই পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে গ্রেফতার করেছিল স্বামীকে।