রেকর্ড পতন ঘটল পাকিস্তানি টাকার (Pakistani Rupee)। অর্থনৈতিক দুর্দশা সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন ইমরান খান (Imran Khan)।
হুহু করে পড়েছে পাকিস্তানের অর্থনীতি। ২০১৮ সালের অগাস্ট মাসে মার্কিন ডলার প্রতি পাকিস্তানি টাকার (Pakistani Rupee) মূল্য ছিল ১২৩ টাকা। সেখান থেকে পাক টাকার দাম পড়তে পড়তে, ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাসে ডলার প্রতি পাকিস্তানি টাকার মূল্য দাঁড়িয়েছে ১৭৭ টাকা! পাকিস্তানের ইতিহাসে এর আগে কোনওদিন টাকার দাম এতটা পড়েনি, এটাই সর্বনিম্ন। আর পাকিস্তানের এই ব্যাপক অর্থনৈতিক দুর্দশার পিছনে উল্লেখযোগ্য অবদান রয়েছে খোদ ইমরান খান (Imran Khan) সরকারের বেশ কিছু পদক্ষেপ, বা পদক্ষেপের অভাব এবং সেইসঙ্গে কয়েকটি আর্থিক সিদ্ধান্তের।
জানা গিয়েছে, পাকিস্তানের মিনি-বাজেটের মধ্যে বাজেটের সংশোধন এবং ব্যয় হ্রাস অন্তর্ভুক্ত করা হবে। তবে তা সেই দেশের বাসিন্দাদের অর্থনৈতিক পরিত্রাণ দেওয়ার জন্য যথেষ্ট নয়। প্রধানমন্ত্রীর অর্থ ও রাজস্ব উপদেষ্টা শওকত তারিনও (Shaukat Tarin) স্বীকার করেছেন যে মুদ্রাস্ফীতি এবং মুদ্রার অবমূল্যায়নের কারণে বাজার নিয়ে এখন কোনও অনুমান করা যাচ্ছে না। মার্কেট অ্যাক্টররা এই পরিস্থিতির সুযোগ নিতে চেষ্টা করছেন ঠিকই, কিন্তু, সরকারেরই দায় বর্তায় তাদের নিয়ন্ত্রণে রাখা। যা করতে ইমরান সরকার পুরোপুরি ব্যর্থ বলে জানিয়েছেন পাক অর্থনীতিবিদরা।
উপরন্তু, পাকিস্তান সরকারে সেই দেশের আয়কর সংগ্রহ ৩২ শতাংশ বৃদ্ধির কথা ঘোষণা করেছে। এটা পাকিস্তানের অর্থনীতির জন্য একটি ইতিবাচক লক্ষণ বলে মনে করা হলেও, এতে করে সেই দেশের অর্থনীতির পুরো চিত্রটচা ধরা পড়ছে না বলে জানিয়েছেন পাক অর্থনীতিবিদরা। প্রতিবেদন অনুসারে, যারা মুদ্রাস্ফীতি হ্রাস এবং জীবিকার সুযোগের উন্নতির প্রত্যাশা করছিলেন তাদের হতাশই হতে হবে। নির্মাণ শিল্পে পাকিস্তান কিছুটা উন্নতি করেছে, যা রিয়েল-এস্টেট টাইকুনদের উত্সাহিত করতে পারে। তবে, রিয়েল-এস্টেট ক্ষেত্রে উন্নতি সাধারণ মানুষের কোনও উপকারে লাগবে না। তাঁরা সামান্য ঘর ভাড়া দিতেই হিমশিম খাচ্ছেন।
অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে, যে ডিসেম্বরের শুরুতেই সার্বিয়ার পাক দূতাবাসের (Pakistan Embassy Serbia) টুইটার হ্যান্ডেলে একটি ভিডিও পোস্ট করে, দাবি করা হয়েছিল, ইমরান খান সরকার তাদের গত তিন মাস ধরে বেতন দিচ্ছে না। মুদ্রাস্ফীতি আগের সমস্ত রেকর্ড ভেঙ্গে দিয়েছে। ৩ মাস ধরে বেতন না পেয়ে রীতিমতো বিদ্রোহ ঘোষণা করেন তাঁরা। জানান, ফি দিতে না পারায়, তাঁদের সন্তানদের স্কুল থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। প্রশ্ন ছুঁড়ে দেওয়া হয়, 'এটাই কি নয়া পাকিস্তান?' hjs পরে অবশ্য পরিস্থিতি সামাল দিতে পাক বিদেশমন্ত্রকের পক্ষ থেকে টুইট করে দাবি করা হয়, সার্বিয়ার পাক দূতাবাসের টুইটার হ্যান্ডেল হ্যাক করা হয়েছে। এরকম কোনও ঘটনাই ঘটেনি। প্রত্যেক কর্মী সময়মতো বেতন পাচ্ছেন। তবে তারা যআই বলুন না কেন, পাক অর্থনীতির বেহাল দশাটা এখন সকলের কাছেই দিনের আলোর মতো পরিষ্কার।