হস্তমৈথুন কি মহিলাদের ক্ষেত্রে শারীরিক অসুবিধা তৈরি করতে পারে, কী বলছে চিকিৎসাবিজ্ঞান

  • বয়ঃসন্ধির সঙ্গে সঙ্গে শরীরেও নানা পরিবর্তন আসে
  • মানসিক গঠনতন্ত্রে যা প্রভাব ফেলে 
  • শরীরের মধ্যে নানা ধরনের হরমোনের তারতম্য শুরু হয়
  • এই সময় একজন মানুষ তার প্রাপ্তবয়স্ক ক্রিয়ার দিকে এগিয়ে যায়

Asianet News Bangla | Published : Feb 7, 2020 6:38 PM IST / Updated: Mar 04 2020, 07:52 PM IST

ভারতীয় রক্ষণশীল সমাজের মধ্যে এখনও এমনকিছু জিনিস থেকে গিয়েছে যা শুনলে অনেক সময়ই অনেককে অবাক হতে হয়। বিশেষ করে এই সব জিনিসের বেশিরভাগটাই মহিলাদের উপর প্রযোজ্য। যার জেরে এমন অনেককিছু ঘটনা ঘটে যায় যাতে মানসিক বিপর্যয় থেকে শুরু করে অনেককিছুই ঘটার সম্ভাবনা থাকে। কিন্তু, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে প্রচারমূলক কর্মসূচি ও অত্যাধুনিক জীবনের প্রভাবে মহিলাদের উপরে রক্ষণশীলতার বেড়িটা একটু একটু আলগা হচ্ছে। তবু, যাকে বলে ভয়ে ভয়ে কিছু কথা গোপনে থেকে যায়। এমনই কিছু কথা মহিলাদের বয়ঃসন্ধিকাল থেকে শুরু হয়। যেখানে অনেক প্রশ্ন থাকে কিন্তু তার উত্তর থাকে না। আমাদের নিউজ নেটওয়ার্কে এমনই কিছু প্রশ্ন এসে পৌঁছেছে যার উত্তর দেওয়াটা অত্যন্ত আবশ্যিক। 

আরও পড়ুন- আপনার মেয়ে কি 'হস্তমৈথুন' করছে, বাবা-মা হিসাবে জানুন পরিস্থিতি সামলানোর কৌশল

প্রশ্ন- আমি একটি রক্ষণশীল পরিবারের মেয়ে। আমি এখন কলেজে পড়ি। কুড়ির কোটা পার করিনি। কিন্তু একজন নারীর বিকাশের জন্য যে বয়সটা দরকার তা পার করে এসেছি। আস্তে আস্তে শরীর এবং মনের মধ্যে অনেক ধরনের ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ধরা পড়ছে। এগুলো ভালো করে বুঝতে পারি। মনের মধ্যে একটা উচাটন তৈরি হয় যে সে সময় নিজেকে ধরে রাখা কঠিন হয়ে পড়ে। মনের মধ্যে অনেক ধরনের চিন্তা আসে। এর অধিকাংশটাই যৌনতা, যৌন সঙ্গম সম্বন্ধীয়। পুরুষদের প্রতি একটা আকর্ষণ যে তৈরি হয়েছে তা অনুভব করতে পারি। সমবয়সী বা একটু পুরুষালি চেহারা দেখলে মনের মধ্যে কেমন যেন একটা করে। আমি পারি না নিজেকে রোধ করতে। এই সময়ে আমাকে সবচেয়ে বেশি আনন্দ দেয় হস্তমৈথুন। একদিন কৌতুহল বসে অভ্যাসটা শুরু করেছিলাম। আজ মনে হয় হস্তমৈথুন ছাড়া আমার পক্ষে থাকা সম্ভব নয়। দিনে অন্তত দুবার আমি হস্তমৈথুন করি। তবে, এর জন্য আমি কোনওভাবেই ক্লান্ত অনুভব করি না। বরং নিজেকে মনে হয় একটু একটু করে আবিষ্কার করছি। নিজের নারীত্বকে খুঁজে পাই। এতটাই ভালো লাগে যে হস্তমৈথুনের পর নিজেকে অনেকটা হাল্কা লাগে। নিজেকে অনেক সতেজ লাগে। পড়াশোনাতেও মন লাগে। কিন্তু কয়েক দিন ধরে মনের মধ্যে একটা ভয় কাজ করছে। কারণ, আমার কিছু বান্ধবী বলছিল যে হস্তমৈথুন মোটেও ভালো কাজ নয়। শরীরের অনেক ক্ষতি হয় এবং অত্যন্ত ঘৃণ্য একটা কাজ। আমি ওদের জানাইনি যে আমি নিয়মিত হস্তমৈথুন করি। এরপর থেকেই একটা আতঙ্ক তৈরি হয়েছে মনের মধ্যে। আমার বাড়ি খুবই রক্ষণশীল। সেক্স নিয়ে আলোচনা করা তো দূর, এই শব্দটি উচ্চারণ করাই পাপ বলে মনে করা হয়। আমি আমার সঠিক নাম প্রকাশ করলাম না। দয়া করে আমাকে সাহায্য করুন। 

উত্তর- আপনি যেভাবে সাহস সঞ্চয় করে এই বার্তাটি পাঠিয়েছেন তাতে আপনাকে ধন্যবাদ। অবশ্যই এরজন্য আপনার কুর্ণিশ প্রাপ্য। সুন্দর করে নিজের পরিস্থিতিটা আপনি ব্যাখ্যা করেছেন। জেনে রাখবেন হস্তমৈথুনও একটা জৈবিক প্রক্রিয়া। মানুষ যখন যৌনতা উপভোগ করার জন্য কোনও বিপরীত লিঙ্গের উপস্থিতি থেকে বঞ্চিত হয় তখন হস্তমৈথুনের মতো প্রক্রিয়া মনের চাহিদা ও বিকাশকে স্বতস্ফূর্ত ও স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে। চিকিৎসাবিজ্ঞানে হস্তমৈথুন একটি স্বাভাবিক এবং স্বতঃপ্রণোদিত প্রক্রিয়া। খেয়াল রাখতে হবে এমনভাবে হস্তমৈথুন করবেন না যাতে শরীরের কোনও অঙ্গ-প্রতঙ্গের এবং মানসিকতার বিপর্যয় ঘটে। বয়ঃসন্ধির সঙ্গে সঙ্গে মানুষের মনের মধ্যে হরমোনের বিভিন্ন ক্রিয়া প্রতিক্রিয়া শুরু হয়ে যায়। এই সময়ে শরীরে সবচেয়ে বেশি হরমোনাল ক্রিয়া অনুষ্ঠিত হয়। ফলে হরমোনের মধ্যে সেভাবে কোনও ব্যালান্স বজায় থাকে না। যার জেরে হস্তমৈথুনের মতো প্রবৃত্তির বশবর্তী হওয়াটাই স্বাভাবিক। বয়ঃসন্ধির এই কালটাকে গ্রহণ করতে এবং তার সঙ্গে খাপ খাওয়াতে একটা সময় লাগে। কারণ, যে কোনও মানুষের কাছে শরীর এবং মনের যৌনতাসুলভ এই পরিবর্তন একদম-ই অস্বাভাবিক। সঙ্গে সঙ্গে হরমোনাল সিক্রেশনের মাপ ঠিক থাকে না ফলে যৌনতামূলক কাজকর্মে আকর্ষণটা বেশি হয়। হস্তমৈথুন এই সময়টা অনেককেই স্বস্তি দেয়। তবে, খেয়াল রাখতে হবে যে কোনও অভ্যাসই মাত্রার থেকে বেশি হয়ে গেলে শরীর ও মনের পক্ষে ক্ষতিকর। যেমন কেউ যদি সমানে সমানে খেতে শুরু করে, তাহলে শরীরে নানা ধরনের অসুবিধা তৈরি হয়। ঠিক তেমন-ই হস্তমৈথুন। দিনে দুবার করে হস্তমৈথুন-কে স্বাভাবিক বলেই ধরা হয়। খেয়াল রাখতে হবে হস্তমৈথুনের সময় এমন কিছু করবেন না যাতে যোনিতে ক্ষত তৈরি হয়। এমনটা হলে নিজেকে বোঝান যে আপনি অস্বাভাবিক উপায়ে হস্তমৈথুন করতে চাইছেন এবং নিজেকে এমন কার্যকলাপ থেকে দূরে রাখার চেষ্টা করুন। আর এই নিয়ে কারোর সঙ্গে কিছু শেয়ার করারও দরকার নেই। কারণ, বয়ঃসন্ধির এই যৌনতা শুধুই আপনার নিজের। এখানে সেই সব মানুষকে আপনি প্রবেশ করতে দিতে পারেন যাদের উপরে আপনার পুরোপুরি ১০০ শতাংশ ভরসা রয়েছে। তাই ঘাবড়ে না গিয়ে নিজের নতুন জীবনকে উপভোগ করুন। অস্বাভাবিকতা অনুভব করলে যৌন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে পারেন। 

আরও পড়ুন- বেবি পাউডার থেকে ক্যানসার, জনসন অ্যান্ড জনসনের কর্তাকে এবার তলব

প্রশ্ন- সম্প্রতি আমি বেশকিছু অ্যাডাল্ট ভিডিও দেখেছি। সেখানে প্রত্যক্ষ করলাম এতে অংশ নেওয়া অভিনেতা-অভিনেত্রীরা একাধিক শারীরিক ভঙ্গিতে সমানে সঙ্গম করে যাচ্ছে। মাঝে মাঝে নিজেকেই প্রশ্ন করছিলাম এত দীর্ঘ-সময় ধরে এরা ফোর-প্লে এবং সঙ্গম করছে কী করে! মনে হচ্ছিল আমি আমার যৌনতাকে অনুভব করতে পারছি না। কারণ, সম্প্রতি আমি ও আমার বয়ফ্রেন্ড একাধিকবার শারীরিক সম্পর্ক করেছিলাম। কিন্তু আমার বয়ফ্রেন্ডের ইরেকশন হয়ে যাচ্ছিল দ্রুত। কিছুতেই আমরা দীর্ঘক্ষণ ধরে সঙ্গমের ক্রীড়া-কে চালিয়ে যেতে পারছিলাম না। এমন কোনও ঔষুধ রয়েছে কি যা সঙ্গমের সময়-কে বাড়িয়ে নিয়ে যেতে পারে। দয়া করে সাহায্য করুন। আমি মানসিক হতাশায় ভুগছি। 

উত্তর- প্রথমে জেনে রাখুন সঙ্গম একটা পারস্পরিক বোঝাপড়া এবং একে অপরকে বুঝে চলার উপর নির্ভর করে। সঙ্গম কতটা উপভোগ্য হবে তা এই সমীকরণের ওপরই নির্ভর করে। সুতরাং, যৌন সঙ্গম করার আগে নিজের মানসিক অবস্থাটা যাচাই করুন। বোঝার চেষ্টা করুন আপনি সঙ্গমকে যেভাবে দেখতে চাইছেন, উপভোগ করতে চাইছেন তাতে আপনার পার্টনার কতটা ইচ্ছুক। পার্টনারের আবেগকেও এক্ষেত্রে যাচাই করুন। না হলে দুজনের একজনকে কম্প্রোমাইজ করতে হবে। নিজেদের মধ্যে সমীকরণ ঠিক থাকে তাহলে বুঝবেন যৌনতাও সুখের হবে। শারীরিক মিলনের প্রথম ধাপে আগে নিজেদের গা-ঘামানো ম্যাচ খেলুন। এতে আপনাদেরকে সবচেয়ে ভালো সাহায্য করতে পারবে ফোর-প্লে। তাড়াহুড়ো করবেন না। ফোর-প্লে-কে জায়গা করতে দিন। ফোর-প্লে শেষ হলে এবার সঙ্গমের দিকে এগিয়ে চলুন। এই পরামর্শ যথার্থ না মনে না হলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। তার পরামর্শ মতো যৌনতার বলবর্ধক ওষুধ খেয়ে দেখুন। 

Share this article
click me!