পুরাণমতে দেবী সরস্বতীকে তুষ্ট করেত একবার তপস্যায় বসেছিলেন মহামতি ব্যাসদেব। তবে তপশ্য শুরুর আগে দেবী দর্শন দেন।
সরস্বতী পুজো দিন এগিয়ে আসেছে। আগামী সপ্তাহে সরস্বতী পুজো। কিন্তু তার আগেই বাজারে বিক্রি হচ্ছে কুল। নানা ধরনের কুলে বাজার প্রায় ছেয়ে গেছে। কিন্তু হিন্দু শাস্ত্রের রীতি অনুযায়ী সরস্বতী পুজোর আগে কুল খেলে নেই। কুলের সঙ্গে কী সম্পর্ক রয়েছে সরস্বতী পুজোর- তারও রয়েছে একটি পৌরানিক গল্প।
বাজারে টোপা কুল, আপেল কুল, নারেকল কুল-সহ নানা ধরেনর সুস্বাদু কুল বিক্রি হচ্ছে। সরস্বতী পুজো নিয়ে বরাবরই বাঙালি উৎসাহী। প্রতিটি স্কুলেতো বটেই, একাধিক ক্লাব ও প্রায় প্রতিটি বাড়িতে বাকদেবীর আরাধনা হয়ে থাকে। কিন্তু অনেকে এখনও মেনে চলেন প্রাচীন নিয়ম, যে সরস্বতী পুজোর আগে কুল খেতে নেই।
পৌরাণিক গল্প-
পুরাণমতে দেবী সরস্বতীকে তুষ্ট করেত একবার তপস্যায় বসেছিলেন মহামতি ব্যাসদেব। তবে তপশ্য শুরুর আগে দেবী দর্শন দেন। ব্যাসদেবের হাতে একটি কুলের বীজ দেন। আর তিনি শর্ত দেন কুলের বীজটি যে স্থানে ব্যাসদেব তপস্যা করবেন তার কাছেই পুঁতে দিতে হবেয সেই কুলের বীজ থেকে চার, তারপর গাছ হবে। তারপরই ফুল ফুটবে। আর কুল হবে। সেই কুল যখন ব্যাসদেবের মাথার ওপর ঝরে পড়বে তখনই ব্যাসদেব বুঝতে পারবেন মা সরস্বতী তাঁর ওপর তুষ্ঠ হয়েছেন।
দেবী সরস্বতীর কথামত দীর্ঘ তপস্যার পরই একদিন সেই কুল গাছ থেকে একটি কুল ঝরে পড়ে ব্যাসদেবের মাথার ওপর। আর সেই দিনটি ছিল মাঘ মাসের শুক্লপক্ষের পঞ্চমী তিথি। সেই দিনই বসন্ত পঞ্চমী। সেই থেকে হিন্দু ধর্মে প্রচিলিত রীতি হিসেবেই চলে আসছে দেবী সরস্বতীর পুজোর পরই কুল খেতে হয়।
তবে হিন্দুশাস্ত্রের অধিকাংশ বিধানই সমাজের কথা মাথায় রেখে তৈরি হয়েছিল। কারণ প্রাচীন কাল থেকেই এই দেশের অর্থনীতি ছিল কৃষি নির্ভর। সেই নিময় অনুযায়ী কোনও নতুন ফলস বা ফল উঠলে তা প্রথমে দেব-দেবীদের নিবেদন করা হয়। সেই প্রথমা অনুযায়ী শীতকালীন ফল কুল মা সরস্বতীকে নিবেদন করা হয়।