প্রায় ৪ দশক আগে ভারত-পাকিস্তানের একটি টেস্ট ম্যাচে পাকিস্তানের প্রাক্তন ব্যাটার জাভেদ মিঁয়াদাদের অদ্ভুত আচরণের কথা জানালেন সুনীল গাভাসকর। একটি অনুষ্ঠানে তিনি সেই ঘটনার স্মৃতিচারণ করেছেন।
ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ মানেই সবসময় কিছু না কিছু ঘটনা। দর্শকদের কাছে সবসময় উপভোগ্য হয়ে ওঠে ভারত-পাকিস্তানের লড়াই। এক দশকেরও বেশি সময় ধরে ভারত-পাকিস্তানের সিরিজ না হওয়ায় সেই লড়াই থেকে বঞ্চিত দর্শকরা। তবে অতীতে যখন নিয়মিত ভারত-পাকিস্তানের সিরিজ হত, সেই সময় পাকিস্তানের প্রাক্তন ব্য়াটার জাভেদ মিঁয়াদাদকে নিয়ে একটি মজার ঘটনার কথা জানালেন সুনীল গাভাসকর। একটি টিভি শোয়ে প্রাক্তন ক্রিকেটার নভজ্যোত সিং সিধু, বীরেন্দ্র সেহবাগ ও গাভাসকর হাজির হয়েছিলেন। সেই শোয়েই গাভাসকর জানান, 'বেঙ্গালুরুতে ভারত-পাকিস্তানের টেস্ট ম্যাচ চলছিল। ভারতীয় দলের এক বোলার বাদ পড়ার পর দলে ফিরেছিল। জাভেদ মিঁয়াদাদ জানত, উইকেট স্পিনারদের সাহায্য করছে, বল ঘুরছে। ফলে ওই বোলার ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারে। সেই কারণে ও বোলারকে মানসিকভাবে চাপে ফেলে দেওয়ার চেষ্টা শুরু করে। জাভেদ মানসিকভাবে অত্যন্ত শক্তিশালী ছিল। ও সবসময় বোলারদের নার্ভাস করে দেওয়ার চেষ্টা করত। ও জানত, সেটা করতে পারলে ওর নিজেরও যেমন লাভ হবে, তেমনই ওর দলেরও সুবিধা হবে। সেই কৌশল শুরু করে ও।'
মিঁয়াদাদ ঠিক কী করছিলেন? গাভাসকর জানালেন, 'ওই বোলার যখন বোলিং করা শুরু করল, তখন মিঁয়াদাদ দুটো করে বল খেলছিল আর বোলারকে জিজ্ঞাসা করছিল, হোটেলে তুই কত নম্বর ঘরে আছিস? আমি সেই সময় স্লিপে দাঁড়িয়েছিলাম। আমাদের উইকেটকিপার সৈয়দ কিরমানি আমাকে বলল, এসব কী হচ্ছে? আমি তখন ওকে বললাম, কিরি, জাভেদ এসব শুরু করেছে, জাভেদই শেষ করবে। একটু অপেক্ষা করো। এভাবে কিছুক্ষণ চলার পর বোলার ধৈর্য হারায়। ও নার্ভাস হয়ে পড়েছিল। ও যতবার খেলায় মন দেওয়ার চেষ্টা করছিল, জাভেদ ততই ওকে মানসিকভাবে সমস্যায় ফেলে দিচ্ছিল। শেষপর্যন্ত আর থাকতে না পেরে ওই বোলার জাভেদকে পাল্টা প্রশ্ন করে, আমার ঘরের নম্বর জেনে কী করবে? তখন জাভেদ বলে, ছক্কা মেরে বল তোর ঘরে পাঠিয়ে দেব। তাই ঘরের নম্বর জানতে চাইছি। আমাদের হোটেল স্টেডিয়াম থেকে অনেক দূরে ছিল। কিন্তু তাতেও এরকম আজব কথা বলছিল জাভেদ।'
গাভাসকর আরও জানান, 'এরপর ওই বোলার ওভার দ্য উইকেট বোলিং শুরু করে। তখন সব বল প্যাডে খেলতে শুরু করে জাভেদ। ও রান করার অনেক চেষ্টা করছিল। কিন্তু সব শটই ফিল্ডারদের হাতে চলে যাচ্ছিল। তখন জাভেদ ঠিক করে, ও কোনও বলই আর ব্যাটে খেলবে না। সব বলই প্যাডে খেলবে। ও পরপর ৩ বল প্যাডে খেলার পরেই কুকুরের মতো ঘেউ ঘেউ করতে শুরু করল। তখন কিরি আমাকে আবার বলে, এসব কী হচ্ছে? আমি তখন ওকে বলি, জাভেদ আগের ব্যাপারটা শেষ করেছে। এবারও ও-ই এই ব্যাপারটা শেষ করবে। এই ব্যাপারটা তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে যায়। জাভেদ যখন আরও ২ বার ঘেউ ঘেউ করল, তখন আম্পায়ারই এগিয়ে গিয়ে ওকে জিজ্ঞাসা করলেন, এসব কী হচ্ছে? তখন জাভেদ বলল, আমি ঘেউ ঘেউ করব না তো কী করব? কুকুরের মতো আমার পা কামড়ে ধরছে। অফের দিকে বোলিং করতে বলুন বোলারকে।'
ভারত-পাক ম্যাচের এইসব ঘটনা এখন আর দেখা যায় না। ভবিষ্যতে আবার কখনও যদি ভারত-পাক সিরিজ হয়, তখন হয়তো আবার এরকম মজার ঘটনা দেখা যাবে।
আরও পড়ুন-
বৃষ্টির জন্য ভেস্তে গেল শেষ ম্যাচও, ওডিআই সিরিজে ০-১ হার ভারতীয় দলের
ভারতের টি-২০ দলের অধিনায়ক হতে পারেন পৃথ্বী শ, হার্দিক পান্ডিয়া, মত গম্ভীরের
বিসিসিআই-এর নির্বাচক হওয়ার দৌড়ে সুব্রত বন্দ্যোপাধ্য়ায়, সলিল আঙ্কোলা, হেমাঙ্গ বাদানি