স্যার ভিভিয়ান রিচার্ডসের কলমে : চলতি আইপিএলে, ফিল্ডিংয়ের দিক দিয়ে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় লক্ষ্য করা যাচ্ছে। যেখানে দেখা যাচ্ছে, একাধিক তারকা ক্রিকেটাররাও ম্যাচের গুরুত্বপূর্ণ মুহুর্তে মিস ফিল্ড করছেন বা ক্যাচ মিস করছেন (ipl best fielder 2025)।
প্রসঙ্গত, করোনা অতিমারির সময়, আইপিএল-কে সংযুক্ত আরব আমিরশাহীতে স্থানান্তর করা হয়েছিল। সেখানে চড়া ফ্লাডলাইটের কারণে, বহু ফিল্ডারই সহজ ক্যাচ ফেলতে বাধ্য হন। তবে ২০২১ সালে, ফিল্ডিংয়ের মান অনেকটা ক্রমোন্নতি দেখা গেলেও, গত কয়েক বছর ধরে আবার একাধিক ক্রিকেটারের ক্যাচ ধরার দক্ষতায় যথেষ্ট অবনতি লক্ষ্য করা গেছে (ipl top fielders 2025)।
চলতি লিগের প্রথম ৩৯টি ম্যাচে, ফিল্ডাররা মোট ৪৩১টি সুযোগের মধ্যে ১০৩টিই মিস করেছেন। যার ফলে, চলতি মরশুমে ৪টি ক্যাচের মধ্যে প্রায় প্রতি একটি ফসকে গেছে তাদের হাত থেকে (ipl best fielding player)।
আর ক্যাচ ফেলার দিক দিয়ে চেন্নাই সুপার কিংস সবার আগে আছে। যেখানে প্রতিটি দলের কোচ তাদের নিজেদের ব্যাটিং এবং বোলিংয়ের মানের উপর যথেষ্ট জোর দিয়েছেন, সেখানে চলতি মরশুমে একাধিক মিস ফিল্ডিং-এর উদাহরণ। ফলে, ক্যাচ ধরার দক্ষতা নিয়েই প্রশ্ন উঠে যাচ্ছে।
Parimatch Sports Analyst Sir Vivian Richards জানিয়েছেন, কামিন্দু মেন্ডিস, স্যাম কুরান এবং ফিল সল্টের মতো ফিল্ডাররা বাউন্ডারি লাইনে ফিল্ডিং করার সময় একাধিক দুরন্ত ক্যাচ নিয়েছেন। সেই ছবি আমরা দেখেছি। যেমন ক্যাচ ধরার দক্ষতার দিক দিয়ে, মরশুমের শুরুতে কলকাতা নাইট রাইডার্স-এর শুরুটা বেশ ভালোই ছিল, প্রায় ৮৮%। কিন্তু সেই পরিসংখ্যান নেমে এসে দাঁড়িয়েছে ৭৯%-তে।
১. নমন ধীর (Mumbai Indians): IPL 2025-এর মেগা-অকশনে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স নমন ধীরকে নিজেদের দলে নেয়। কিন্তু কেন তাঁকে দলে নেওয়া হয়েছিল, তা এখন বোঝা যাচ্ছে। এমনকি, তাঁকে দলে রাখার জন্য RTM কার্ড অল-রাউন্ডারদের উপর ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নেয় মুম্বই। দলের হয়ে ৩ নম্বরে ব্যাট করা ছাড়াও, কিছু অসাধারণ ক্যাচ নিয়ে রীতিমতো নজর কেড়ে নিয়েছেন নমন ধীর। মাত্র ২৫ বছর বয়সী এই তরুণ ক্রিকেটারটি ১১টি ম্যাচে, ১১টি ক্যাচ নিয়েছেন। চলতি আইপিএলে অন্যতম সেরা একজন ফিল্ডার।
২. শিমরন হেটমেয়ার (Rajasthan Royals): রাজস্থান রয়্যালস তাঁকে ১১ কোটি টাকা দিয়ে কেনে। তবে ব্যাট হাতে হেটমেয়ারের হতাশ যথেষ্ট হতাশাজনক। তবে ব্যাট হাতে খারাপ পারফর্ম করলেও, এই ক্যারিবিয়ান মিডল-অর্ডার ব্যাটসম্যানটি কিন্তু ১২টি ম্যাচে ১০টি ক্যাচ নিয়ে মাঠে তাঁর ফিল্ডিং দক্ষতার জোরালো প্রমাণ দিয়েছেন। তাঁর প্রতি ম্যাচে ক্যাচ ধরার অনুপাত ০.৮৩।
৩. নিকোলাস পুরান (Lucknow Super Giants): লখনউ সুপার জায়ান্টসের এই ব্যাটার তাঁর অসাধারণ পারফরম্যান্সের জন্য ইতিমধ্যেই অরেঞ্জ ক্যাপের দৌড়ে রয়েছেন। তবে শেষ কয়েকটি ম্যাচে ব্যাট হাতে তাঁর পারফরম্যান্স অনেকটাই নিরাশাজনক ভক্তদের জন্য। পূরান শেষের পাঁচটি ম্যাচে মাত্র ৬০ রান করেছেন। এই পাওয়ার-হিটারের ফর্ম খারাপ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে লখনউও লড়াই থেকে অনেকটাই দূরে চলে যেতে থাকে। অন্যদিকে, তিনি ১১টি ম্যাচে ৮টি ক্যাচ নিয়ে মাঠে যথেষ্ট নজর কেড়েছেন। কিন্তু সামগ্রিকভাবে দলের ফিল্ডিং যথেষ্ট হতাশাজনক।
৪. তিলক ভার্মা (Mumbai Indians) দলের স্বার্থে ৩ নম্বরে ব্যাট করতে নেমে নিজের প্রতিভাকে প্রমাণ করতে পেরেছেন তিলক ভার্মা।এমনকি, তাঁর দুরন্ত পারফরম্যান্সের জন্য ভারতীয় দলেও স্থান করে নিয়েছেন। কিন্তু তারপরে দাঁড়িয়েও মুম্বই এই ব্যাটারকে উপরের দিকে না খেলিয়ে ৫ নম্বরে খেলানোর সিদ্ধান্ত নেয়। ফলে, কিছুটা ব্যাটের তেজ কমেছে। কিন্তু বাঁ-হাতি এই খেলোয়াড়টি ১১টি ম্যাচে ৮টি ক্যাচ নিয়ে সেই ঘাটতি অনেকটাই পূরণ করে দিয়েছেন। তাঁর প্রতি ম্যাচে ক্যাচ নেওয়ার অনুপাত হল ০.৭৩। এমনকি, তিনি রাজস্থানের বিরুদ্ধে ১০০ রানে জয়ের পর, ড্রেসিংরুমে সেরা ফিল্ডারেরও পুরস্কারও জিতেছেন।
৫. যশস্বী জসওয়াল (Yashasvi Jaiswal) মাত্র ১৪ বছরের বৈভব সূর্যবংশীর সঙ্গে ভারতীয় জাতীয় দলের এই ওপেনিং ব্যাটার ইনিংসের শুরু থেকেই কার্যত রানের ঝড় তুলছেন। তিনি রয়্যালসদের হয়ে ফিল্ডিংয়েও অসাধারণভাবে নজর রেখেছেন। যশস্বী জসওয়াল ১২টি ম্যাচে মোট ৮টি ক্যাচ নিয়েছেন এবং চলতি মরশুমে সবচেয়ে বেশি ক্যাচ নেওয়ার শীর্ষ ৫ জন ফিল্ডারদের দৌড়ে রয়েছেন। তবে ট্রিস্টান স্টাবস এবং মিচেল স্টার্ক-এর উপরেও চোখ রাখতে হবে। কারণ, তারা ঠিক তাঁর পিছনেই রয়েছেন।
আরও খবরের আপডেট পেতে চোখ রাখুন আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।