ঘরোয়া ক্রিকেটে 'ধামাকা' কিন্তু তবুও বাদ জাতীয় দল থেকে! বিসিসিআই কি 'তারকাপুজো'-তে ব্যস্ত?

Published : Jan 19, 2025, 10:28 AM IST
Karun Nair

সংক্ষিপ্ত

মুখে বলা হচ্ছে ঘরোয়া ক্রিকেটে জোর দাও। 

মুখে বলা হচ্ছে ঘরোয়া ক্রিকেটে জোর দাও। কিন্তু দল নির্বাচনের সময় আদৌ কি সেই বিষয়টিকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে? উঠছে প্রশ্ন।

জাতীয় দলে ফিরতে গেলে ঠিক আর কী কী করতে হবে? অন্তত করুণ নায়ার নিজেকে প্রশ্নটা করে দেখতেই পারেন। ঘরোয়া ক্রিকেটে এত ভালো খেলেও ভারতীয় দলে তিনি সুযোগ পেলেন না। না ইংল্যান্ড সিরিজ়‌ের দলে, না চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দলে। তাহলে বোর্ডের বিভিন্ন মহল থেকে বারবার বলা হয় ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলার জন্য, সেটা কি শুধুই কথার কথা?

ঘরোয়া ক্রিকেটে দাপট নিয়ে খেললেও কি জাতীয় দলে প্রবেশ করা যাবে না? গতবছর প্রথমবার সিনিয়র ক্রিকেটারদেরকে ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলার নির্দেশ দিয়েছিলেন তৎকালীন বোর্ড সচিব জয় শাহ। অস্ট্রেলিয়া সিরিজ়ে পরাজয়ের পর, কোচ গৌতম গম্ভীরের মুখে একাধিকবার সেই কথাই শোনা গেছিল।

তারপর এও শোনা গেছিল যে, ঘরোয়া ক্রিকেটে ভালো খেললেই হয়ত জাতীয় দলের দরজা খুলে যাবে। কিন্তু তা যে সত্যি নয়, প্রমাণিত হল করুণের ক্ষেত্রেই। এখনও যেন ভারতীয় দলে তারকাপুজো এখনও বন্ধ হল না। বিজয় হাজারে ট্রফিতে করুণের পারফরম্যান্সের দিকে একবার নজর দিলে চক্ষু ছানাবড়া হয়ে যাওয়া উচিত নির্বাচকদেরও।

অপরাজিত ১১২, অপরাজিত ৪৪, অপরাজিত ১৬৩, অপরাজিত ১১১, ১১২, অপরাজিত ১২২, অপরাজিত ৮৮। সাত ইনিংস মিলিয়ে মাত্র একবার আউট। কার্যত, একার হাতে ফাইনালে তুলেছেন বিদর্ভকে। বিজয় হাজারের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি গড় নিয়ে প্রতিযোগিতা শেষ করার নজির ইতিমধ্যেই নিশ্চিত করেছেন তিনি।

এদিকে করুণের প্রশংসা করেছেন খোদ সচিন তেন্ডুলকর। তিনি সোশ্যাল মিডিয়াতে লিখেছেন, “সাত ইনিংসে পাঁচটি শতরান সহ ৭৫২ রান অসাধারণের থেকে কম কিছু নয়। এই ধরনের পারফরম্যান্স এমনি এমনি হয় না। নিখুঁত ফোকাস এবং কঠোর পরিশ্রম থাকলে তবেই একমাত্র সম্ভব। করুণ নায়ার, তুমি এইভাবেই এগিয়ে যাও এবং প্রতিটা সুযোগকে কাজে লাগাও।”

অন্যদিকে, হরভজনের কথায়, “এক এক জনের জন্য এক এক রকম নিয়ম হওয়া উচিত নয়। নায়ার যখন ভালো খেলছে, তখন ওকে জাতীয় দলে খেলানো উচিত। তাই নয় কি? শরীরে ট্যাটু নেই, জমকালো পোশাক পরে না বলেই কি ওকে দলে নেওয়া হচ্ছে না? ও কি কঠোর পরিশ্রম করে না?”

কিন্তু করুণকে বাদ দেওয়ার প্রসঙ্গে নির্বাচক কমিটির প্রধান অজিত আগরকর জানিয়েছেন, “ওকে বাদ দেওয়া সত্যিই কঠিন ছিল। অসাধারণ পারফরম্যান্স করেছে ও। একজন ক্রিকেটারের সাড়ে সাতশোর উপরে গড় ভাবাই যায় না। আমরা ওর সঙ্গে কথা বলেছি। এই মুহূর্তে এই দলে করুণের জন্য জায়গা বের করা খুবই কঠিন। যাদের নেওয়া হয়েছে, তাদের দিকে একবার তাকিয়ে দেখুন। প্রত্যেকের গড় ৪০-এর উপর। দুর্ভাগ্যবশত, ১৫ জনের দলে সবাইকে জায়গা দেওয়া সম্ভব নয়। তবে এই ধরনের পারফরম্যান্স নজর কাড়বেই। তাই ভবিষ্যতে কেউ যদি ফর্ম হারায় বা চোট পায়, তাহলে করুণের কথা নিশ্চয়ই ভাবা হবে।”

কিন্তু কেন করুণকে কারও ফর্ম হারানো বা চোট পাওয়ার উপর নির্ভর করতে হবে, তা কিন্তু স্পষ্ট নয়। যশস্বী জয়সওয়াল এমনিতে ভালো ফর্মে রয়েছেন। কিন্তু তিনি এখনও একদিনের ম্যাচই খেলেননি। ঘরোয়া ক্রিকেটে শেষবার ৫০ ওভারের ম্যাচ খেলেছেন গত ২০২২ সালে। কিন্তু তাঁর জায়গায় যিনি ফর্মে রয়েছেন তাঁকে কি নেওয়া যেত না?

শ্রেয়স আইয়ার, কে এল রাহুলেরা ভারতের মিডল অর্ডারে রয়েছেন ঠিকই। যদি তারা ব্যর্থ হন, তখন পরিবর্তে শক্তিশালী বিকল্প কোথায়? ভরসা রাখতে হবে সেই অলরাউন্ডারদের উপর। যারা কবে খেলবেন কিংবা কবে ব্যর্থ হবেন, কেউ জানেন না। অন্তত ইংল্যান্ড সিরিজ়‌ে করুণকে জায়গা দেওয়া যেতেই পারত বলে মত অনেকের।

অবশ্য যে ক্রিকেটার টেস্টে ত্রিশতরান করেও পরের ম্যাচে বাদ পড়েছিলেন, তার কাছে এসব একেবারেই যেন নতুন কোনও অভিজ্ঞতা নয়। দীর্ঘদিন ধরেই উপেক্ষা সহ্য করে চলেছেন করুণ। তবে তাঁকে দলে না নিয়ে ভারতীয় বোর্ড এটাও প্রমাণ করেছে যে, ঘরোয়া ক্রিকেটের পারফরম্যান্সই শেষ কথা নয়। জাতীয় দলে জায়গা পেতে গেলে হয়ত আরও কিছু করতে হতে পারে। তা করেননি বলেই কি বাদ করুণ?

আরও খবরের আপডেট পেতে চোখ রাখুন আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।

PREV
click me!

Recommended Stories

India vs South Africa T20: ভারত বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা টি২০ সিরিজ শুরু কবে, খেলা দেখবেন কোথায়?
IND vs SA: দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে দুরন্ত পারফরম্যান্সের পর সাময়িক বিরতি রোহিত-কোহলির, এবার নজর ঘরোয়া ক্রিকেটে