সাতের দশকে যখন ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগান মাঠ বা ইডেন গার্ডেন্সে বড় ম্যাচ হত, তখন টিকিটের জন্য রাত জেগে লাইন দিতেন বহু ফুটবলপ্রেমী। ২০২৩-এ সেই ছবি ফিরল গড়ের মাঠে।
গত কয়েকটি কলকাতা ডার্বিতে সহজ জয় পেয়েছে মোহনবাগান। ইস্টবেঙ্গল যেন ডার্বি জিততেই ভুলে গিয়েছে। কিন্তু সেটা মাঠের ভিতরের লড়াই। মাঠের বাইরের ছবিটা সম্পূর্ণ আলাদা। খাতায়-কলমে এবং সাম্প্রতিক পারফরম্যান্সের বিচারে সবুজ-মেরুন যতই এগিয়ে থাকুক না কেন, নিজেদের পিছিয়ে রাখতে নারাজ লাল-হলুদ। কলকাতা ময়দানের ৩ প্রধান ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগান ও মহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের সবচেয়ে বড় ভরসা সমর্থকরা। কলকাতা ডার্বি জিততেও গ্যালারির শব্দব্রহ্মের উপর নির্ভর করে ২ দল। মোহনবাগান সমর্থকদের মধ্যে ডার্বি ঘিরে বেশি উৎসাহ থাকবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু ইস্টবেঙ্গল সমর্থকদের মধ্যেই প্রবল উৎসাহ দেখা যাচ্ছে। সোশ্যাল মিডিয়া তো বটেই, টিকিটের লাইনের হিসেবেও কেউ কাউকে ছেড়ে কথা বলছেন না।
ডুরান্ড কাপ সেনাবাহিনীর টুর্নামেন্ট। ফলে এই টুর্নামেন্টের টিকিট বণ্টন-সহ যাবতীয় বিষয় নিয়ে সেনাবাহিনীই শেষ কথা বলবে। কলকাতা ডার্বির টিকিট নিয়ে ইস্টবেঙ্গল শিবিরে তীব্র অসন্তোষ দেখা গিয়েছে। কারণ, সদস্যদের বিনামূল্যে টিকিট দেওয়া হচ্ছে না। তাছাড়া সাধারণ দর্শকদের জন্য টিকিটের সংখ্যাও অনেক কম। তবে ক্ষোভ-বিক্ষোভ যতই থাকুক না কেন, এবার আর কলকাতা ডার্বি বয়কট করছেন না লাল-হলুদ সমর্থকরা। ক্লাবের কর্মকর্তাদের প্রতি ক্ষোভপ্রকাশ করে গত আইএসএল-এর দ্বিতীয় ডার্বি বয়কট করেন বেশিরভাগ ইস্টবেঙ্গল সমর্থক। এবার অন্য ছবি দেখা যাচ্ছে।
ডুরান্ড কাপের আয়োজকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, বৃহস্পতিবার সকাল ১১টা থেকে সন্ধে ৬টা পর্যন্ত ইস্টবেঙ্গল ও মোহনবাগান তাঁবুতে বড় ম্যাচের টিকিট বিক্রি হবে। শুক্রবারও একই সময়ে টিকিট পাওয়া যাবে। শনিবার ম্যাচের দিনও সকাল ১১টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত টিকিট পাওয়া যাবে। তবে টিকিটের যা চাহিদা, তাতে শুক্রবার আর বিক্রি করার মতো টিকিট পড়ে থাকবে কি না, সে ব্যাপারে যথেষ্ট সংশয় রয়েছে। বৃহস্পতিবারের মধ্যেই সব টিকিট বিক্রি হয়ে যেতে পারে। এদিন ভোর ৫টা থেকে ইস্টবেঙ্গল তাঁবুর প্রধান ফটকের বাইরে রাস্তায় শুয়ে-বসে থাকতে দেখা যায় অনেক সমর্থককে। লেসলি ক্লডিয়াস সরণিতে ভোর থেকেই দেখা যায় লম্বা লাইন। গোষ্ঠ পাল সরণিতেও টিকিটের জন্য দীর্ঘ লাইন। সাম্প্রতিক সময়ে বড় ম্যাচের টিকিটের জন্য এরকম উন্মাদনা দেখা যায়নি। ডুরান্ড কাপের আয়োজক কমিটি কলকাতা ডার্বির জন্য অনলাইনে টিকিট বিক্রি না করায় সবাইকেই মাঠে গিয়ে টিকিট কাটতে হচ্ছে। প্রত্যেককে ৩টির বেশি টিকিট দেওয়া হচ্ছে না। তার ফলেই এরকম উন্মাদনা।
আরও পড়ুন-
নতুন মরসুমেও পুরনো রোগ অব্যাহত, বাংলাদেশ সেনার বিরুদ্ধে ২ গোলে এগিয়ে থেকে ড্র ইস্টবেঙ্গলের
কলকাতা উপভোগ করছেন, স্ত্রীর সঙ্গে ইকো পার্কে মোহনবাগান তারকা জেসন কামিংস
অভিনব উদ্বোধন! ডুরান্ড কাপের ট্রফি নিয়ে ৬৫ তলা থেকে ঝাঁপ দুই সেনাকর্তার