ক্রিস্টোফার এনকুনকু চোট না পেলে বিশ্বকাপ খেলাই হত না। কিন্তু পড়ে পাওয়া চোদ্দ আনার মতো সুযোগই কাজে লাগালেন র্যান্ডাল কোলো মুয়ানি। বিশ্বকাপ সেমি ফাইনালের নায়ক হয়ে গেলেন তিনি।
বিশ্বকাপের ইতিহাসে পরিবর্ত হিসেবে নেমে তৃতীয় দ্রুততম গোল করে ফেললেন ফ্রান্সের র্যান্ডাল কোলো মুয়ানি। বুধবার রাতে বিশ্বকাপের দ্বিতীয় সেমি ফাইনালে মরক্কোর বিরুদ্ধে ম্যাচের ৭৯ মিনিটে উসমানে ডেম্বেলের পরিবর্তে মাঠে নামেন ২৪ বছরের এই স্ট্রাইকার। মাঠে নামার ৪৪ সেকেন্ডের মাথায় তিনি প্রথমবার বলে পা ছোঁয়ানোর সুযোগ পান। সেই টাচেই গোল করে ফ্রান্সকে ২-০ এগিয়ে দেন কোলো মুয়ানি। এই গোলটাই ম্যাচের ফল নির্ধারণ করে দেয়। ২-০ গোলে জিতে পরপর ২ বার বিশ্বকাপ ফাইনালে পৌঁছে গেল ফ্রান্স। বিশ্বকাপের ইতিহাসে পরিবর্ত হিসেবে খেলতে নেমে দ্রুততম গোলের রেকর্ড ডেনমার্কের এবে স্যান্ডের। ১৯৯৮ বিশ্বকাপে নাইজেরিয়ার বিরুদ্ধে পরিবর্ত হিসেবে মাঠে নামার ১৬ সেকেন্ডের মধ্যে তিনি গোল করেন। বিশ্বকাপে পরিবর্ত হিসেবে খেলতে নেমে দ্বিতীয় দ্রুততম গোল উরুগুয়ের রিচার্ড মোরালেসের। ২০০২ বিশ্বকাপে সেনেগালের বিরুদ্ধে পরিবর্ত হিসেব মাঠে নামার ১৮ সেকেন্ডের মধ্যে গোল করেন মোরালেস।
এদিন ৫ মিনিটের মধ্যেই প্রথম গোল করে ফ্রান্সকে এগিয়ে দেন থিও হার্নান্ডেজ। তারপর আর গোল হচ্ছিল না। সমতা ফেরানোর লক্ষ্যে ফ্রান্সের রক্ষণের উপর চাপ সৃষ্টি করে যাচ্ছিল মরক্কো। সেই চাপ সামাল দেওয়ার লক্ষ্যেই শেষদিকে কোলো মুয়ানিকে মাঠে নামান ফ্রান্সের কোচ দিদিয়ের দেশঁ। তাঁর আস্থার যোগ্য মর্যাদা দিলেন কোলো মুয়ানি। তাঁর গোলেই ফ্রান্সের জয় নিশ্চিত হয়ে যায়।
কঙ্গো বংশোদ্ভূত কোলো মুয়ানি ন্যান্তেস ইয়ুথ অ্যাকাডেমিতে ফুটবল প্রশিক্ষণ নেওয়া শুরু করেন। তিনি এখন খেলেন জার্মানির ক্লাব আইনট্রাশট ফ্র্যাঙ্কফুর্টে। ফ্রান্সের অনূর্ধ্ব-২১ দলের হয়ে ৭ ম্যাচ খেলে ১ গোল করেছেন তিনি। অলিম্পিক্সে ফ্রান্সের হয়ে ৪ ম্যাচ খেলে ১ গোল করেন এই স্ট্রাইকার। সিনিয়র দলের হয়ে চতুর্থ ম্যাচ খেলতে নেমে প্রথম গোল পেলেন তিনি।
এবারের বিশ্বকাপে ফ্রান্সের প্রাথমিক দলে ছিলেন না কোলো মুয়ানি। কিন্তু বিশ্বকাপ শুরু হওয়ার ফ্রান্সের প্রথম দলের একাধিক ফুটবলার চোট পান। তাঁদের মধ্যে ছিলেন ক্রিস্টোফার এনকুনকু। তাঁর পরিবর্তেই বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ পান কোলো মুয়ানি। তিনি যে বিশ্বকাপে খেলার যোগ্য, সেটা বুঝিয়ে দিলেন এই স্ট্রাইকার। বিশ্বকাপ সেমি ফাইনালে দল যখন চাপে, সেই সময় পরিবর্ত হিসেবে খেলতে নেমে স্নায়ুর উপর নিয়ন্ত্রণ রাখা সহজ নয়। কিন্তু সেটাই সহজে করতে পারলেন কোলো মুয়ানি। তিনি এখন ফ্রান্সের নায়ক।
আরও পড়ুন-
মরক্কোর স্বপ্নের দৌড় থামল, ২-০ গোলে জিতে ফের বিশ্বকাপ ফাইনালে ফ্রান্স
মেসি বিশ্বকাপ জেতার যোগ্য দাবিদার, বলছেন ব্রাজিলের প্রাক্তন তারকা রিভাল্ডো
মেসির 'ওয়ান মোর ড্যান্স', ক্রোয়েশিয়াকে হারিয়ে ৮ বছর পর বিশ্বকাপ ফাইনালে আর্জেন্টিনা