টেনে-হিঁচড়ে প্রিজন ভ্যানে, চলল লাঠি! ফুটবলপ্রেমী জনতা বলল, 'তিলোত্তমা’-র বিচার চাই

মাঠপ্রেমী মানুষদের উপর নেমে এল পুলিশের লাঠি। মোহনবাগান, ইস্টবেঙ্গল এবং মহামেডান সমর্থকদের উপর নেমে এলে র‍্যাফের আক্রমণ। বিচার চাইতে গিয়ে মার খেলেন ক্রীড়াপ্রেমী মানুষ। টেনে-হিঁচড়ে তোলা হল প্রিজন ভ্যানে।

Subhankar Das | Published : Aug 18, 2024 12:57 PM IST

মাঠপ্রেমী মানুষদের উপর নেমে এল পুলিশের লাঠি। মোহনবাগান (Mohun Bagan), ইস্টবেঙ্গল (East Bengal) এবং মহামেডান (Mohammedan Sporting Club) সমর্থকদের উপর নেমে এলে র‍্যাফের আক্রমণ। বিচার চাইতে গিয়ে মার খেলেন ক্রীড়াপ্রেমী মানুষ। টেনে-হিঁচড়ে তোলা হল প্রিজন ভ্যানে।

“ঘটি-বাঙালি একটাই স্বর, জাস্টিস ফর আর জি কর।” বিচারের দাবিতে পথে মোহনবাগান, ইস্টবেঙ্গল এবং মহামেডান সমর্থকরা। কিন্তু কেন? কারণ, সেই অভিশপ্ত রাত। যে রাতে আর জি কর (RG Kar) মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ এবং খুনের মতো নৃশংস ঘটনা ঘটে। আর সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই এইমুহূর্তে বিচারের দাবিতে উত্তাল গোটা রাজ্য এবং দেশ।

Latest Videos

এমনকি, প্রতিবাদে গর্জে উঠেছেন বিদেশে বসবাসকারী অনেকেই। কর্মবিরতির ডাক দিয়েছেন ডাক্তাররা। রাত জেগেছেন রাজ্যের মহিলারা। আর এবার একযোগে পথে নামলেন বাঙালির চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী মোহনবাগান এবং ইস্টবেঙ্গল সমর্থকরাও। দাবি একটাই “জাস্টিস ফর আর জি কর।”

আরও পড়ুনঃ

'আমরা থামবো না, জাস্টিস ফর আর জি কর' বড় বার্তা দিলেন ফুটবলার প্রণয় হালদার, চাইলেন বিচার

রবিবার, অর্থাৎ ১৮ অগাস্ট। যেদিন কলকাতা ডার্বি হওয়ার কথা ছিল, ঠিক সেদিনই পথে নামার ডাক দেন দুই প্রধানের সমর্থকরা। আর এই প্রতিবাদে মোহনবাগান এবং ইস্টবেঙ্গলের সঙ্গে যোগ দেন মহামেডান সমর্থকরাও। এদিন বিকেলে যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনের ৫ নম্বর, অর্থাৎ ভিআইপি গেট থেকে বিকেল ৫ টায় বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দেন তারা।

তবে সেইসঙ্গে অন্যান্য অনেক জায়গাতে তার আগেই শুরু হয়ে যায় মিছিল এবং বিক্ষোভ। মোহনবাগান, ইস্টবেঙ্গল এবং মহামেডান সমর্থকরা সেই মিছিলে পা মেলাতে শুরু করেন। তবে সল্টলেক স্টেডিয়ামের বাইরে বিকেল ৪টে থেকেই ভিড় জমতে শুরু করে।

জানা যাচ্ছে, এদিন প্রতিবাদ শুরু হওয়ার আগেই কয়েকজনকে গ্রেফতার করে নেয় পুলিশ। প্রতিবাদের আঁচ বুঝতে পেরে যুবভারতীর বাইরে ১৪৪ ধারাও জারি করা হয়। কিন্তু সেই নিয়মকে এদিন কার্যত উড়িয়ে দেয় ফুটবলপ্রেমী জনতা। বারবার বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে পুলিশ।

কিন্তু তারপরেও আন্দোলনকেও থামিয়ে রাখা যায়নি। ফ্লেক্স নিয়ে কার্যত বিশাল পরিমাণে মোহন-ইস্ট-মহামেডান জনতা রাস্তায় নেমে পড়েন। তারা স্লোগান দিতে থাকেন “ঘটি-বাঙালি একটাই স্বর, জাস্টিস ফর আর জি কর।” অনেকে বলতে থাকেন দুই গ্যালারির একটাই স্বর, জাস্টিস ফর আর জি কর।”

মিছিল থেকেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করে যে, এত পুলিশ এল কোথা থেকে? তাহলে তো ডার্বি করানোই যেত। প্রশাসন এবং সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দেন বহু সমর্থক। একজন বলেন, “এত পুলিশ আমাদের আটকানোর জন্য এসেছে। আর জি করে যেদিন ঘটনাটা ঘটল, সেদিন কোথায় ছিল তারা?”

অপর একজনের কথায়, “আমি আজকে বিচারের দাবিতে এসেছি। দেশের একজন স্বাধীন নাগরিক হিসেবে আজকে আমি এখানে এসেছি। আমাদের শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদে পুলিশের কিসের এত ভয়? আমাদের কেন মারছে? আমরা কী করেছি? আসল দোষীদের ধরতে পারছে না, আমাদের আটকাতে এসেছে।”

আরও পড়ুনঃ

সবুজ মেরুন এবং লাল হলুদ জনতার দখলে রাজপথ, 'তিলোত্তমার' বিচার চেয়ে তীব্র প্রতিবাদ

কার্যত বাইপাস অবরুদ্ধ হয়ে যায়। এক সমর্থক জানান, “আমরা আজ একসঙ্গে রাস্তায় নেমেছি শুধু একটাই দাবিতে, নির্যাতিতার বিচার চাই।” অন্যদিকে, সবথেকে তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল যে, দলের জার্সি এবং ফ্ল্যাগের সঙ্গেই এদিন মিছিলে ছিল ভারতের জাতীয় পতাকা।

‘তিলোত্তমা’-র বিচারের দাবিতে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করলেন তারা। কিন্তু অভিযোগ, ২০০ মিটার দূরত্বে দাঁড়িয়ে থাকলেও পুলিশ লাঠিচার্জ করেছে। আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদে পুলিশ আক্রমণ করেছে। আরও উল্লেখযোগ্য বিষয় হচ্ছে, কখনও ইস্টবেঙ্গল সমর্থককে আগলে রাখেন মোহনবাগান সমর্থক। আবার কখনও মোহনবাগান সমর্থককে আগলে রাখেন ইস্টবেঙ্গল কোনও সমর্থককে।

আর সেইজন্যই বোধহয় প্রিজন ভ্যানে তুলে গ্রেফতার করতে নিয়ে যাওয়ার পথেই আটকে গেল পুলিশ। ঘিরে ধরল ফুটবলপ্রেমী মানুষগুলর কাছে হার মেনে ছেড়ে দিতে বাধ্য হল প্রশাসন।

কার্যত ইতিহাস লিখল কলকাতা, মৈত্রীর বন্ধনে ‘‘তিলোত্তমা’-র বিচার চাইতে পথে নামা ময়দানপ্রেমী জনতার এই আবেগ রচনা করল অন্য এক অধ্যায়।

আরও পড়ুনঃ

হরিনাভিতে মোহনবাগান এবং ইস্টবেঙ্গল সমর্থকদের বিক্ষোভ, বিচার চেয়ে প্রতিবাদে প্রীতম কোটাল

আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।

Share this article
click me!

Latest Videos

ঠাকুর দেখার নাম করে যুবতীর সঙ্গে কুকর্ম! আতঙ্ক নরেন্দ্রপুরে! | South 24 Parganas News Today
'আমাদের নাম কেটে যাদের পাকা বাড়ি আছে তাদের আবাসের বাড়ি দিচ্ছে' দুর্নীতির অভিযোগ | Purba Bardhaman
ঘটনাকে চাপছে কারা! কার ভয়ে মুখ খুলছে না সঞ্জয়! ভালো করে দেখুন | RG Kar Case | Kolkata Doctor News
Sukanta Majumdar live: কালনায় সদস্যতা অভিযানে সুকান্ত, কী বার্তা, দেখুন সরাসরি
সিবিআই এতদিন ধরে কী করছে? সঞ্জয় রায়ের বিস্ফোরক মন্তব্যের পর প্রশ্ন কিঞ্জল নন্দের | Kinjal Nanda