
Mohun Bagan Durand Cup: ডুরান্ড কাপের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে শনিবার সন্ধ্যায়, কলকাতার যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে মুখোমুখি হয় মোহনবাগান বনাম ডায়মন্ডহারবার এফসি (mohun bagan vs diamond harbour fc today match score)।
নিঃসন্দেহে দুই যুযুধান স্প্যানিশ কোচের লড়াই। একদিকে ছিলেন মোহনবাগানের জোসে মোলিনা এবং অন্যদিকে ডায়মন্ডহারবারের কিবু ভিকুনা (durand cup 2025)।
শুরু থেকেই জমে ওঠে ম্যাচ। খেলার ১৫ মিনিটে, জেমি ম্যাকলারেন একটি সুযোগ নষ্ট করেন। কারণ, বেশ তৎপর ছিলেন ডায়মন্ডহারবার গোলকিপার সুশনাত মালিক। কিন্তু তখন থেকেই ম্যাচের রাশ হাতে নিতে শুরু করে দেয় সবুজ মেরুন ব্রিগেড।
আর তার ফল মিলল হাতেনাতে। খেলার ১৯ মিনিটে, সাহালের ফাইনাল পাস থেকে দুর্দান্ত গোল করে যান অনিরুদ্ধ থাপা। আর সেই সুবাদেই মোহনবাগান ম্যাচে লিড নেয় ১-০ গোলে।
তবে সেই সুখ বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি সবুজ মেরুনের। ম্যাচের ২৪ মিনিটে, লুকা মাজসেনের গোলে সমতা ফেরায় ডিএইচএফসি। খেলার ফলাফল তখন ১-১।
কিন্তু মোহনবাগান তো হাল ছাড়ার পাত্র নয়। ম্যাচের ৩৫ মিনিটে, সেই জেমি আবারও ত্রাতা হয়ে উঠলেন। তাঁর গেলেই খেলায় লিড নেয় সবুজ মেরুন ব্রিগেড। ফার্স্ট হাফের শেষদিকে জেমি আরও একটি সুযোগ মিস করেন। শেষপর্যন্ত, প্রথমার্ধ শেষ হয় ২-১ ফলাফল নিয়েই।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই ফের সবুজ মেরুন ঝড়। বক্সের ভিতরে লিস্টনকে ফাউল করে বসেন ডায়মন্ডহারবারের ডিফেন্ডার নরেশ সিং। সঙ্গে সঙ্গে পেনাল্টির নির্দেশ দেন রেফারি।
তবে সেই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ঝামেলায় জড়িয়ে লাল কার্ড দেখেন নরেশ। এরপর ঠিক ৫১ মিনিটে, পেনাল্টি থেকে গোল করে মোহনবাগানকে ৩-১ ব্যবধানে এগিয়ে দেন সেই লিস্টন কোলাসো। তবে সেখানেই শেষ নয়। ম্যাচের ৬৪ মিনিটে, সাহাল আবদুল সামাদের গোলে সবুজ মেরুন আরও এগিয়ে যায়।
কিন্তু তারপরেও অনেককিছুই বাকি ছিল। ম্যাচের ৮০ মিনিটে, জেসন কামিংসের গোলে ৫-১ ব্যবধানে পৌঁছে রীতিমতো ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে যায় সবুজ মেরুন ব্রিগেড। এরপর আর কোনও গোল হয়নি। শেষপর্যন্ত, ৫-১ গোলে জিতে কোয়ার্টার ফাইনালে চলে গেল মোহনবাগান। আর রিজার্ভ বেঞ্চে থেকে জোসে মোলিনা যেন আরও সাহস জুগিয়ে গেলেন ছেলেদের।
এদিন খেলা শেষে, মোহনবাগান ফুটবলাররা গ্যলারির দিকে এগিয়ে যান এবং সমর্থকরা রীতিমতো তখন উচ্ছ্বসিত। সবথেকে বড় বিষয়, বাংলা ভাষাকে সম্মান জানিয়ে এই ম্যাচে সমর্থকরা বেশ কয়েকটি টিফো নামায়। একটি টিফোতে লেখা ছিল “বাংলা আমার মায়ের ভাষা, আমার ধাত্রীভূমি। আমরা মোহনবাগানী।"
এছাড়া আরেকটি টিফোতে লেখা ছিল, “বাঙালির পণ, বাঙালির আশা, বাঙালির কাজ, বাঙালির ভাষা-- সত্য হউক, সত্য হউক, সত্য হউক, হে ভগবান।" অন্য টিফোটি জানান দিল, “দেশটা কারো বাপের নয়, নয়কো জাতের খেলা। এই বাঙালিই ঘুচিয়েছিল, পরাধীনতার জ্বালা।"
এছাড়াও অন্য টিফো বলে গেল, “জন গণ মন বন্দেমাতরম। বাংলা ভাষা মায়ের সমান।" আরেকটিতে লেখা ছিল “শহীদের রক্ত, কবির নোবেল। ভারতের মুকুটে বাংলার জুয়েল।"
সবমিলিয়ে, মোহনবাগানের এই জয়ের সঙ্গেই যেন সমর্থকদের বার্তাও বেশ তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে রইল। আবারও প্রমাণিত, ফুটবল মাঠ যেন সত্যিই প্রতিবাদের ভাষার অন্যতম মাধ্যম।
আরও খবরের আপডেট পেতে চোখ রাখুন আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।