বছর খানের আগের কথা, মহিলাদের সিঙ্গেলসের তালিকায় তিনি ছিলেন দেড়শোর আশেপাশে। টিনএজার, যত অভিজ্ঞতা হবে, ততই নিজেকে মেল ধরতে পারবে। কানাডার টেনিস মহল এই বলেই নিজেদের স্বান্তনা দিত। কিন্তু এক বছরের মধ্যে ছবিটা যে একেবারেই বদলে যাবে সেটা কারও জানা ছিল না। ১৯ এর বিয়ানকার উত্থান চমকে দিল টেনিস বিশ্বকে। ধাপে ধাপে উঠে এসেছিলেন ইউএস ওপেনের ফাইনালে। তাঁর প্রথম গ্র্যান্ড স্ল্যামর মাঝে দাঁড়িয়ে ছিলেন বিশ্ব টেনিসের এক স্তম্ভ। কিন্তু ফ্লাশিং মিডোয় ফাইনালে সেরেনা যে কোনও প্রতিরোধই গড়ে তুলতে পারেন না বিয়ানকার সামনে। প্রথম সেটা হেলায় জিতলেন কানাডার তরুণী। যা কিছু লড়াই হল সেটা দ্বিতীয় সেটে। কিন্তু সেরানার সামনে নার্ভ ধরে রেখে টাইব্রেকারে সেই সেটটাও ছিনিয়ে নিলেন বিয়ানকা। ৬-৩, ৭-৫ এ ম্যাচ জিতে হাতে তুলে নিলেন প্রথম গ্র্যান্ড স্ল্যামের ট্রফিটা। মারিয়া শারাপোভার পর দ্বিতীয় টিনএজার হিসেবে ইউএস ওপেন চ্যাম্পিয়ন হলেন বিয়ানকা।
১৯৯৯ সালে যখন সেরেনা ইউলিয়ামস প্রথম গ্র্যান্ড স্ল্যাম খেতাব জিতেছিলেন তাখন জন্মই হয়নি বিয়ানকার। তাই মহিলা সিঙ্গেলসের ফাইনাল ম্যাচটি ছিল তারুণ্য ও অভিজ্ঞতার লড়াই। সেই লড়াইতে দাপটের সঙ্গেই জয় হল তারুণ্যের। সেরেনার বিরুদ্ধে খেলা তাই নিজেকে তৈরি করার পাশাপাশি স্টেডিয়ামে উপস্থিত দর্শকদের চাপ সামলানোটাও ছিল একটা পরীক্ষা সেই টেস্ট পাশ করে বিয়ানকা মজার ছলেই দর্শকদের বলেন, ‘ আমি জানি আপনারা চাইছিলেন সেরেনা জিতুক, কিন্তু আমি দুঃখিত। সেরেনার মত লেজেন্ডের বিরুদ্ধে ফাইনালের মঞ্চে খেলা আমাকে অনেক কিছু শিখিয়ে দিল। আমি গোটা ম্যাচে একটাই কথা নিজেকে বলেছে , কার সঙ্গে খেলছি সেটা নিয়ে ভাবব না।’ সেরানাকে পাশে রেখেই কথা গুলো বলছিলেন ১৯’য়ের তরুণী।
অন্যদিকে আরও একবার রেকর্ডের সামনে থেকে ফিরে যেতে হচ্ছে সেরেনা উইলিমায়মসকে। এবারও যে ২৩ গ্র্যান্ড স্ল্যামের মালকিন হয়েই থেকে যেতে হচ্ছে তাঁকে। ফ্লাশিং মিডোতে এবারও মার্গারেট কোর্টকে ছোঁয়া হল না সেরেনার। ২০১৭ সালে শেষ মেজর খেতাব জিতেছিলেন সেরেনা। কিন্তু মা হয়ে টেনিসে ফিরে আসার পর এই নিয়ে চারটি গ্র্যান্ড স্ল্যামের ফাইনালে হারের মুখ দেখতে হল সেরেনাকে। তবে হাসি মুখেই এই হার মেনে নিচ্ছেন তিনি, আক্ষেপের বদলে বরং প্রাণ খোলা প্রশংসা করছেন তরুণী বিয়ানকার। একই সঙ্গে দর্শকদেরও ধন্যবাদ জানিয়েই এবারের মত ফ্লাশিং মিডো ছাড়লেন সেরানা উইলিমায়স।