সেখানেই তাঁকে চেপে ধরেন কুস্তি ফেডারেশনের প্রধান। সেই সময়, সাক্ষীর বয়স ছিল মাত্র ১৯ বছর।
নিজের আত্মজীবনীতে ফের একবার কুস্তি ফেডারেশনের প্রধান ব্রিজভূষণ শরণ সিংয়ের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ তুললেন অবসরপ্রাপ্ত কুস্তিগীর সাক্ষী মালিক।
উল্লেখ্য, ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে পথেও নামেন সাক্ষী মালিক। আর এবার তাঁর আত্মজীবনী ‘উইটনেস’-এ জীবনের একাধিক অজানা কাহিনি তুলে ধরেছেন সাক্ষী। গত ২০১২ সালে, কাজাখস্তানের আলমাটিতে এশিয়ান জুনিয়র চ্যাম্পিয়নশিপে স্বর্ণপদক জেতার পর হোটেলের রুমে ব্রিজভূষণ তাঁকে ডেকেছিলেন হোটেল রুমে।
সেখানেই তাঁকে চেপে ধরেন কুস্তি ফেডারেশনের প্রধান। সেই সময়, সাক্ষীর বয়স ছিল মাত্র ১৯ বছর। সাক্ষী তাঁর আত্মজীবনীতে লিখেছেন যে জয়ের পর, তাঁকে কুস্তি ফেডারেশনের প্রধান ব্রিজভূষণ শরণ সিং হোটেল রুমে ডাকেন। সাক্ষীকে বলা হয় যে, সেখানেই তাঁর সঙ্গে ফোনে বাবা-মায়ের সঙ্গে কথা বলিয়ে দেওয়া হবে। এদিকে, বাবা-মায়ের সঙ্গে কথা বলিয়ে দেওয়ার অজুহাতেই তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় ব্রিজভূষণের রুমে।
সাক্ষী মালিক অভিযোগ করছেন, “ব্রিজভূষণ শরণ সিং আমাকে আমার বাবা-মায়ের সঙ্গে কথা বলিয়ে দেন। এটায় কোনও ভুল ছিল না। যখন আমি তাঁর সঙ্গে ম্যাচ এবং আমার পদক নিয়ে কথা বলেছিলাম, তখনও সেখানে অপ্রীতিকর কিছু মনে হয়নি আমার'। তবে এরপরেই নিজের আসল চেহারা দেখান ব্রিজভূষণ।” এমনই দাবি করছেন সাক্ষী।
কুস্তিগীর সেই বইত লিখেছেন, “আমি ফোন রাখার পর, যখন ওনার খাটে বসেছিলাম, তখন উনি আমাকে জড়িয়ে ধরার চেষ্টা করেন। আমি ওনাকে ধাক্কা দিয়ে কাঁদতে থাকি। এরপর উনি পিছু হটে যান। উনি বুঝতে পেরেছিলেন যে, আমি ওনার কথা শুনব না। ফলে, সঙ্গে সঙ্গেই বলতে শুরু করে দেন যে, ও নাকি আমাকে বাবার মতো জড়িয়ে ধরেছিলেন। কিন্তু আমি জানতাম যে, সেটা তেমন কিছু ছিল না। আমি তাঁর রুম থেকে বেরিয়ে কাঁদতে কাঁদতে আমার রুমে ফিরে যাই।”
রেসলিং ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ার (ডব্লিউএফআই) প্রাক্তন প্রধান ব্রিজ ভূষণ সিং মোট ৬বারের লোকসভা সাংসদ। ইতিমধ্যেই তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক যৌন নিগ্রহের অভিযোগ উঠেছে। সাক্ষী মালিক তাঁর আত্মজীবনীতে আরও উল্লেখ করে লিখেছেন যে, ব্রিজভূষণ সিং বারবার তাঁকে ফোন করেছিলেন এবং তাঁকে তাঁর পাশে থাকার জন্য অনুরোধ করেছিলেন। সাক্ষী সেইসময় তাঁর ক্যাম্পের রুমমেট অনিতা শেরান এবং তাঁর মায়ের সঙ্গে এই ঘটনাটি শেয়ার করেছিলেন।
সাক্ষী আরও লেখেন, “যদিও গল্পটা ছড়ানোর ইচ্ছে ছিল না কিন্তু হয়ে গেছিল। আলমাটিতে আমার সঙ্গে কী ঘটেছিল, তা সকলেই জানত। এটা নিয়ে কেউ কোনও কথা বলেনি। আমিও করিনি। সেই ভয় এবং উদ্বেগ, ঘটনার কয়েক মাস পর, গত ২০১২ সালে জুনিয়র ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপে আমার পারফরম্যান্সকে প্রভাবিত করেছিল, যেখানে আগেরবার ব্রোঞ্জ জেতার পরেও আমি ফেভারিট ছিলাম।”
শৈশবেও তাঁকে শ্লীলতাহানির শিকার হতে হয় বলে জানিয়েছেন তিনি। তিনি বলেন, “তবে দীর্ঘদিন ধরে আমি আমার পরিবারকে এই সম্পর্কে বলতে পারিনি। কারণ, আমি মনে করতাম যে, আমার আমার দোষ ছিল। আমার টিউশন শিক্ষক আমাকে হয়রান করত। সে আমাকে অদ্ভুত সব সময়ে ক্লাসের জন্য তাঁর বাড়িতে ডাকত এবং মাঝে মাঝে আমাকে স্পর্শ করার চেষ্টা করত। টিউশন ক্লাসে যেতে ভয় পেতাম, কিন্তু মাকে বলতে পারতাম না। এটি দীর্ঘ সময় ধরে চলে এবং আমি এই সম্পর্কে অনেকদিন চুপ ছিলাম।”
সাক্ষী মালিক অবশেষে তাঁর মায়ের কাছে সব জানান। পরে যিনি তাঁকে সমর্থনও করেছিলেন। সাক্ষী লেখেন, “আমার মা শুধু টিউশন শিক্ষকের সঙ্গে ঘটনার সময়ই নয়, ব্রিজভূষণ সিং যখন আমাকে তাড়া করতে শুরু করেছিলেন তখনও আমাকে সমর্থন করেছিলেন।
আরও খবরের আপডেট পেতে চোখ রাখুন আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।