চারুলতা প্যাটেল, ৮৭ বছরের এই মহিলার ভিডিও এখন ভাইরাল ইন্টারনেটে
ক্রিকেটের টানে মঙ্গলবার এজবাস্টনে খেলা দেখতে আসেন
কথা বলেন বিরাট কোহলির সঙ্গে, রোহিত শর্মাকে চুমুও খান
চারুলতার কাহিনি এখন ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বকাপের আসরে
চারুলতা প্যাটেল। সঙ্গী তাঁর ভুভুজেলা। বাড়ি! মনে করছেন ভারতের কোনও স্থানে! না-না, তেমনটা নয়। আফ্রিকার ছোট্ট একটি দেশ তানজানিয়ায়। অবাক হবেন না । চারুলতা এখন নামে এবং বংশ পরিচয়েই শুধু তাঁর ভারতীয়ত্বকে বহন করছেন। তবে, আরও একটি জিনিস আছে, যার মাধ্যমে চারুলতা জুড়ে রয়েছেন ভারতের সঙ্গে। আর সেটি হল ক্রিকেট। এই মুহূর্তে চারুলতা প্যাটেলের সঙ্গে গল্পরত বিরাট কোহলি এবং স্নেহাশিস ও চুম্বন নেওয়া রোহিত শর্মার ভিডিও ভাইরাল হয়েছে নেট দুনিয়ায়। এমনকী, মহিন্দ্রা অ্যান্ড মহিন্দ্রা গ্রুপের কর্ণধার আনন্দ মহিন্দ্রাও জানিয়েছেন তিনি বিশ্বকাপে চারুলতার ম্যাচ দেখার টিকিটের সমস্ত খরচ বহন করবেন।
এহেন চারুলতার বয়স! সেই সংখ্যাটাও এই মুহূর্তে ভাইরাল নেটদুনিয়ায়। ৮৭ বছর পার করে ফেলেছেন তিনি। এই মুহূর্তে ৮৮ রানিং। তবু ক্রিকেট প্রেমে আপ্লুত চারুলতা। সদূর তানজানিয়া থেকে ছুটে এসেছেন ভারতের খেলা দেখবেন বলে। মঙ্গলবার ভারত-বাংলাদেশের ম্যাচের সময় গ্যালারিতে তাঁকে আবিষ্কার করে ফেলে আইসিসি-র ডিজিট্যাল টিমের ক্যামেরা। বিরাটদের প্রতি তাঁর ভালোবাসার অভিব্যক্তি নজর এড়ায়নি আইসিসি-র মিডিয়া টিমের। ৮৭ বছরের এক বৃদ্ধা যেভাবে জোর গলায় বিরাটদের জন্য গলা ফাটাচ্ছিলেন তা অবাক করেছিল সকলকে। এই বৃদ্ধার পূর্বপূরুষের দেশের জন্য এমন ভালোবাসা ভারত-বাংলাদেশ নির্বিশেষে সকল দর্শককে নাড়িয়ে দিয়ে যায়। চারুলতার ক্রিকেট প্রেমকে অবজ্ঞা করার সাহস দেখাতে পারেননি খোদ বিরাট কোহলিও। তিনি খেলার পরে বৃদ্ধার সঙ্গে মাঠের একপাশে বসে কথাও বলেন। তাঁর ভালোবাসার পরশ নিজের শরীরে ছুঁয়ে নেন। এমনকী, রোহিত শর্মা-ও ড্রেসিংরুমে ঢোকার সময় বৃদ্ধাকে জড়িয়ে দেন। বিনিময়ে ভালোবাসার চুম্বন রোহিতের গালে এঁকে দেন চারুলতা।
চারুলতার জন্ম তানজানানিয়াতেই। সেখানেই বেড়ে ওঠা। তাঁর ছেলেরা ক্রিকেটের প্রবল ভক্ত ছিল ছোট থেকে। সন্তানদের ক্রিকেট খেলাও বেশ উপভোগ করতেন চারুলতা। সংসারের নিত্যনৈমিত্তিক কাজ থেকে কিছুটা হলেও অবসর সময় মিলতে থাকে বছর কুড়ি আগে। তখন চারুলতার বয়স ৬৭। অখণ্ড অবসর সময়টা ক্রিকেটকে জানা আর খেলার দেখার মধ্যেই নিয়োজিত করেন তিনি। মনের ভিতরে থাকা ভারতের জন্য টানটাও আরও বেশি করে অনুভব করতে থাকেন। কারণ, ক্রিকেট বিশ্বে ভারত যে এক শক্তিশালী প্রতিপক্ষ তা ভেবেই আনন্দ পেতেন তিনি। তাই ইচ্ছে ছিল কোনও না কোনও দিন সুযোগ পেলে মাঠে বসে ভারতের খেলা দেখবেন। সেই সুযোগ যখন চারুলতার কাছে এল তখন বয়স ৮৭ পেরিয়েছে। বয়সের জন্য থমকে যাননি। হুইল চেয়ারে করেই এজবাস্টনে হাজির হয়েছিলেন বিরাটদের জন্য গলা ফাটাতে। কিন্তু, বিশ্বকাপ ক্রিকেটের ২০১৯-আসরে তিনিও যে এক বর্ণময় চরিত্র হয়ে যাবেন তা হয়তো ভাবতে পারেননি চারু। হ্যাঁ, কারণ, চারুলতা নামটা তো রবীন্দ্রনাথের উপন্যাস থেকেই ধার করা। তাই, তাঁকে চারু বললে আশা করা যায় অত্যুক্তি হবে না।