
'ডিপফেক’, ভুয়ো তথ্যের প্রচার আকছার হচ্ছে সমাজমাধ্যমে। এবার তা রুখতে সক্রিয় হল কেন্দ্রীয় সরকার। তথ্যপ্রযুক্তি আইনে সংশোধনী খসড়া আনার প্রস্তাব করেছে তারা। তাদের প্রস্তাব, এআই (কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা)-এর দ্বারা তৈরি ‘কনটেন্টে’ অবশ্যই তার উল্লেখ রাখতে হবে। একমাত্র তা হলেই নেট ব্যবহারকারীরা প্রতারণার শিকার হবেন না। এই ইঙ্গিত আগেই দিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব।
কেন্দ্রীয় তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, এআই প্রযুক্তির এখন বাড়বাড়ন্ত। তার জেরে ছড়িয়ে পড়ছে কৃত্রিম ভাবে তৈরি ভুয়ো খবর (ডিপফেক)। নির্বাচনকে প্রভাবিত করার চেষ্টা হচ্ছে। ব্যক্তি জীবনকেও বিব্রত করার প্রবণতা বেড়েছে। এই ঝুঁকির কথা মাথায় রেখে, সংসদে বিতর্ক শোনার পরে কেন্দ্রীয় তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রক ২০২১ সালের তথ্যপ্রযুক্তি আইন সংশোধনের খসড়া তৈরি করেছে। সমাজমাধ্যম ব্যবহারকারীদের স্বার্থ সুরক্ষিত করতেই এই পদক্ষেপ।
যদি কোনও ইউজার এআই দ্বারা নির্মিত কন্টেন্ট সোশাল মিডিয়ায় পোস্ট করতে চান তাহলে বেশ কিছু নিয়ম মানতে হবে। প্রথমত ওই ইউজারকে স্পষ্ট জানাতে হবে, তিনি যে কন্টেন্ট আপলোড করছেন সেটা এআই দ্বারা নির্মিত কিনা। ইউজারের বক্তব্য সত্যি কিনা সেটা যাচাই করার উপযুক্ত ব্যবস্থা রাখতে হবে সোশাল মিডিয়াগুলিকে। এআই দ্বারা নির্মিত কন্টেন্টের তথ্য সত্যি কিনা, সেটাও যাচাই করতে হবে।
তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রকের তরফে বলা হয়েছে, সমাজমাধ্যম ব্যবহারকারীদের সচেতন করতে, ‘কনটেন্টের’ বিশ্বাসযোগ্যতা বৃদ্ধি করে তার উৎস সন্ধান করতেই এই খসড়া আনা হয়েছে। তবে সেই সঙ্গে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রযুক্তি নিয়ে যাতে গবেষণা অব্যাহত থাকে, সে দিকেও নজর রাখা হয়েছে। ৬ নভেম্বর পর্যন্ত এই খসড়া নিয়ে মত প্রকাশ করতে পারবেন সাধারণ মানুষ থেকে উদ্দিষ্ট ক্ষেত্র।
এই বিষয়ে ওপেনএআই, গুগ্ল, মেটাকে প্রশ্ন করেছিল রয়টার্স। সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে, সংস্থাগুলির তরফে কিছু জানানো হয়নি।
এআই প্রযুক্তির অপব্যবহার রুখতে ২০২৪ সালে কেন্দ্রীয় তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রক নির্দেশিকা জারি করেছিল। প্রধানমন্ত্রী মোদীও উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছিলেন, ‘‘আমাদের হাতে এখন কৃত্রিম মেধার মতো উন্নত প্রযুক্তি রয়েছে। আমাদের উচিত দায়িত্ববোধের সঙ্গে সেই প্রযুক্তি ব্যবহার করা। কেউ যেন এই ধরনের প্রযুক্তি অপব্যবহার না করেন, তার জন্য এ ব্যাপারে উপযুক্ত শিক্ষার প্রসার ঘটানো জরুরি।’’ মোদী এ-ও জানিয়েছিলেন যে, তিনি ইতিমধ্যেই কৃত্রিম মেধা ব্যবহারকারী কম্পিউটার সিস্টেম চ্যাটজিপিটির সঙ্গে কথা বলেছেন। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অশ্বিনী বলেন, ‘‘আমরা মনে করি, শুধুমাত্র আইন প্রণয়ন করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রযুক্তিকে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না। এ ক্ষেত্রে প্রযুক্তিগত সমাধানও জরুরি। নিয়মবিধির পাশাপাশি প্রযুক্তিগত সমাধানের কথাও ভাবা হয়েছে।’’