রবীন্দ্র-স্মৃতি বিজড়িত মংপুতে প্রকৃতির মাঝে কাটিয়ে আসুন দু-তিন দিন

  • রবীন্দ্রনাথের মংপু, এই ছোটো পাহাড়ি গ্রামের প্রকৃতি আপ্লুত করবে পর্যটককে
  • চারবার এসেছিলেন রবীন্দ্রনাথ এখানে প্রকৃতির টানে
  • মৈত্রেয়ী দেবীর মংপুর বাড়ি আজ রবীন্দ্রভবন 
  • এই জায়গা সিঙ্কোনা গাছের জন্য বিখ্যাত

samarpita ghatak | Published : Feb 12, 2020 6:14 PM IST

বেশিরভাগ বাঙালি পড়েছেন 'মংপুতে রবীন্দ্রনাথ'। মৈত্রেয়ী দেবীর লেখা এই বই পড়ে থাকলে সবার অন্তত একবার ইচ্ছে করবেই মংপুতে ঘুরে আসার। পাহাড়ের মজা হল পাহাড় একেবারে পালটে যায় না।  আজ যেখানে ওক, দেবদারু, পাইনের পাহাড়ি জঙ্গল সেখানে দুম করে আকাশছোঁয়া ফ্ল্যাটবাড়ি গজিয়ে উঠবে না। তাই মংপুর রাস্তা পালটে গেলেও, একেবারে বদলে যায়নি, শহরের কিংবা জনপবহুল টুরিস্ট স্পট যেমন বদলে যায় চট করে। তাই রবীন্দ্রনাথ যে পথ দিয়ে পৌঁছেছেন একাধিকবার মংপুতে মৈত্রেয়ী দেবীর বাড়ি, পর্যটকও পাকদন্ডী পেরিয়ে, লম্বা লম্বা সবুজ গাছের ফাঁকে উঁকি দেওয়া রোদ্দুরের সঙ্গে লুকোচুরি খেলতে খেলতে পৌঁছে যাবেন মংপু। শিলিগুড়ি থেকে মাত্র ৫০-৫২ কিমি দূরে এই পাহাড়ি গ্রাম। দার্জিলিং থেকে ৩৩ কিমি।  কবি যখন আমন্ত্রণ পেয়েছিলেন মৈত্রেয়ী দেবীর কাছ থেকে তখন এত সহজে পৌছনো যেত না মংপু, শিলিগুড়ি থেকে তাঁকে পৌঁছতে হত রাম্ভি, তারপর রাম্ভি থেকে মংপু পালকি করে। এখনও রাম্ভি হয়েই সবাই যায় আর রাম্ভি থেকে দেখতে পাওয়া যায় মংপু পাহাড়।  

মংপুর সবচেয়ে বড়ো আকর্ষণ সিঙ্কোনা গাছ আর রবীন্দ্রনাথ। সিঙ্কোনা গাছ এই পাহাড়ে চারপাশেই। কুইনাইন তৈরির কারখানা আর রবীন্দ্রভবন একেবারে কাছাকাছি। মৈত্রেয়ী দেবীর স্বামী  মনমোহন সেন ছিলেন কুইনোলজিস্ট, তিনিই এই কুনাইন কারখানার ডিরেক্টর ছিলেন। সিঙ্কোনা গাছের ছাল থেকে কুইনাইন তৈরি হয়। 

Latest Videos

মংপু বাজার পেরিয়ে একটু এগোলেই সিঙ্কোনা সিম্পোডিয়াম। এখানে অনেক রকমের ফুল আর অর্কিড দেখতে পাওয়া যাবে। আর পিছনের দিকে পাইন আর সিঙ্কোনা গাছের জঙ্গল। টিকিট কেটে পর্যটকরা ঘুরে নিতে পারেন এই সিম্পোডিয়াম। একটা গোটা বেলা  এই সিম্পোডিয়ামে কাটাতে ভালোই লাগবে। ফুল অর্কিডের  মায়ায় ছায়ায় মনের সব কলুষতা কেটে যাবে।
আর রবীন্দ্রভবনের আকর্ষণই তো তাড়িয়ে নিয়ে এসেছে মংপুতে, তাই মংপু মানেই যেন মৈত্রেয়ী দেবীর এই বাড়ি। ১৯৪৪ সালের ২৮ মে রবীন্দ্রনাথের স্মৃতি বিজড়িত এই বাড়িটিকে রবীন্দ্রভবন বা রবীন্দ্র সংগ্রহশালা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছিল। এই বাড়িতে বসেই কবি 'ছেলেবেলা', 'নবজাতক', 'জন্মদিন' প্রভৃতি কবিতা লেখেন। ১৯৩৮ থেকে ১৯৪০ সালের মধ্যে কবি চারবার আসেন মংপুতে। গোটা বাড়ি জুড়েই তাঁর স্মৃতি- কবির ব্যবহার করা নানা সামগ্রী এই বাড়ি জুড়ে- খাট, বিছানাপত্র, ওষুধপত্র, পড়ার টেবিল, রঙের শিশি সব কিছু যেন একইরকম আছে। এই বাড়ির সামনের উন্মুক্ত সবুজ বাগান থেকে সামনের পাহাড়ে রঙ, রোদের খেলা দেখতে দেখতে পর্যটকরা উপলব্ধি করবেন, কেন কবি বারবার এসেছেন মংপুতে। 

রবীন্দ্রভবন দেখা হয়ে গেলে এই শান্ত নির্জন পাহাড়ি গ্রাম ঘুরে দেখুন নিজের মতো করে। মংপুর প্রকৃতি ছুঁয়ে দেখতে দেখতে মগ্ন মন মনে করবেই রবীন্দ্রনাথের গান ও কবিতা। 

মংপু পাহাড়ে

"কুজ্ঝটিজাল যেই
সরে গেল মংপু-র
নীল শৈলের গায়ে
দেখা দিল রংপুর।..." 

মংপুতে বসে কবি এই কবিতা লিখেছিলেন ১৯৩৮ সালে।

কোথায় থাকবেন-সিঙ্কোনা প্লান্টেশন বাংলোতে থাকতে পারলে সবচেয়ে ভালো অভিজ্ঞতা পাওয়া যাবে। যোগাযোগ নম্বর-০৩৫৫২ ২৬৬২২৫। এছাড়াও কালিম্পং, সিটং প্রভৃতি জায়গায় থেকেও ঘুরে দেখা যায় মংপু। 

কীভাবে যাবেন- মংপু পৌঁছনো যায় পেশক রোড দিয়ে দার্জিলিং থেকে রাম্ভি হয়ে। আর নিউ জলপাইগুড়ি থেকে সেবক-কালিঝোরা হয়ে মংপু যাওয়া যায়। 

Share this article
click me!

Latest Videos

RG Kar কাণ্ডে আবারও একাধিক কর্মসূচির ডাক জুনিয়র ডাক্তারদের! আসন্ন মিছিলে অংশগ্রহনের আবেদন | RG Kar
মহিলাদের নিরাপত্তায় বড় উদ্যোগ! ফ্রী ক্যারাটে প্রশিক্ষণ শিবির রাজ্যজুড়ে! | RG Kar
কল্যাণী এইমসে নিয়োগ নেই স্থানীয়দের, বিজেপি সাংসদকে ঘিরে বিক্ষোভ বিজেপি কর্মীদেরই
'ওদের টার্গেট মহিলা আর হিন্দু' তৃণমূল বিধায়কদের উপর হামলার কড়া প্রতিক্রিয়া শুভেন্দুর
মহিলাদের সুরক্ষায় ‘অভয়া প্লাস’! রাজ্যপালের ২ বছর পূর্তিতে ৯টি প্রকল্পের সুভারম্ভ | CV Anand Bose