আন্দোলনকারীদের মধ্যে ছিলেন শিশু, বয়স্ক নাগরিক এবং প্রতিবন্ধীরা। কেউ কানাডার প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি করেন, কেউ আবার ট্রুডোকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করছিলেন।
করোনার টিকা (Corona Vaccine) বাধ্যতামূল করাকে কেন্দ্র করে বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে কানাডায়। আর সেই কারণেই পরিবারকে সঙ্গে নিয়ে গা ঢাকা দিয়েছেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী (Canadian Prime Minister) জাস্টিন ট্রুডো (Justin Trudeau)। দেশের মধ্যে বেশ জনপ্রিয় তিনি। খুব সহজেই সব ধরনের মানুষের সঙ্গে মিশে যেতে পারেন। তাঁর সহজ সরল জীবনকে সোশ্যাল মিডিয়ায় (Social Media) প্রশংসায় ভরিয়ে দিয়েছেন নেটিজেনরা। আর এহেন জনপ্রিয় এক ব্যক্তিত্বের সঙ্গে কী এমন ঘটনা ঘটল যে একেবারে পরিবারকে সঙ্গে নিয়ে গোপন জায়গায় গা ঢাকা দিতে হল তাঁকে!
কীসের জন্য বিক্ষোভ?
সে দেশে করোনার বিধি নিষেধ তুলে দেওয়া এবং করোনা টিকা বাধ্যতামূলক না করার দাবিতেই এই বিক্ষোভ দেখান ট্রাকচালকরা (cross-border truckers)। তাঁদের দাবি, মার্কিন সীমান্ত পেরোনোর জন্য বাধ্যতামূলক করা যাবে না করোনার টিকা। এই দাবিতে আলাম থেকে অটোয়া অবধি প্রায় ৭০ কিলোমিটার রাস্তায় কনভয় তৈরি করেন তাঁরা। একই সঙ্গে ঘেরাও করে ক্রমাগত হর্ণে তৈরি হয় প্রবল শব্দদূষণ। এই বিক্ষোভের জেরে রাস্তায় যানজট এবং শব্দদূষণে কার্যতই অতিষ্ঠ হয়ে ওঠেন অটোয়াবাসী। আন্দোলনকারীরা এই আন্দোলনের নাম দিয়েছেন ‘ফ্রিডম কনভয়’ (Freedom Convoy)।
আরও পড়ুন- 'সুপারি মিডিয়া', নিউ ইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদন নিয়ে প্রশ্ন মন্ত্রীর
আন্দোলনকারীদের মধ্যে ছিলেন শিশু, বয়স্ক নাগরিক এবং প্রতিবন্ধীরা। কেউ কানাডার প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি করেন, কেউ আবার ট্রুডোকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করছিলেন। কানাডার শীর্ষ সেনা জেনারেল ওয়েইন আয়ার এবং কানাডার প্রতিরক্ষা মন্ত্রী অনিতা আনন্দের তীব্র নিন্দা করে বিক্ষোভকারীদের ওয়ার মেমোরিয়ালের উপর নাচও করতে দেখা যায়। চরম ঠান্ডাকে উপেক্ষা করেই রাস্তায় নামেন বহু মানুষ। ক্রমেই বাড়ে বিক্ষোভকারীদের সংখ্যা। ধীরে ধীরে জনজোয়ার সংসদ ভবনের কাছে পৌঁছে যায়। এই পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য আগে থেকেই সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে পুলিশকে।
আরও পড়ুন- হিন্দুর বেশে ভারতে ১৫ বছর, অবশেষে ধরা পড়ল রনি বেগম
আর এই বিক্ষোভের হাত থেকে বাঁচতেই সপরিবারে প্রধানমন্ত্রী গা ঢাকা দিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। সূত্রের খবর, তিনি কোথায় রয়েছে তা কারও জানা নেই এই মুহূর্তে। তবে এই বিক্ষোভের নিন্দা করেছেন তিনি। জানিয়েছেন, ট্রাক চালকরা বিজ্ঞানকে মানতে চাইছেন না। এর ফলে নিজেদের পাশাপাশি অন্যদেরও তাঁরা সমস্যার মুখে ঠেলে দিচ্ছেন।
এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করে একটি টুইট করেন সেনা জেনারেল ওয়েন। তিনি লেখেন, "অজানা সৈনিকের সমাধিতে বিক্ষোভকারীদের নাচ এবং জাতীয় যুদ্ধ স্মৃতিসৌধকে অপমান করতে দেখে আমি অসুস্থ হয়ে পড়ছি। কানাডিয়ানদের একের পর এক প্রজন্ম আমাদের অধিকার ও স্বাধীনতার জন্য লড়াই করে প্রাণ দিয়েছেন। যাঁরা এই কাজ করেছেন তাদের লজ্জায় মাথা নত করা উচিত।"
আরও পড়ুন- মোদীর চিঠি পেয়ে সম্মানিত ব্রেট লি, কী লিখলেন প্রধানমন্ত্রী
নিন্দা করেছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী অনিতা আনন্দও। তিনি বলেন, "আমরা আজ যে আচরণ দেখছি তা অত্যন্ত নিন্দনীয়। অজানা সৈনিকের সমাধি এবং জাতীয় যুদ্ধ স্মৃতিসৌধ আমাদের দেশের জন্য পবিত্র স্থান। যাঁরা কানাডার জন্য লড়াই করেছেন এবং মৃত্যু বরণ করেছেন তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে আমি কানাডাবাসীদের তাঁদের প্রতি আন্তরিকতার সঙ্গে আচরণ করার জন্য অনুরোধ করছি।"