শূকরের হৃৎপিণ্ড তাঁকে দিয়েছিল দ্বিতীয় জীবন, তবে তা গেল মাত্র দুই মাস


মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাল্টিমোরে (Baltimore), শুকড়ের হৃৎপিণ্ড প্রতিস্থাপন করে হয়েছিল এক নাগরিকের শরীরে। কিন্তু, দুই মাসের বেশি বাঁচলেন না তিনি। 

Web Desk - ANB | Published : Mar 9, 2022 5:47 PM IST

মানুষের শরীরে বেশিদিন টিকল না শুকরের হৃৎপিণ্ড। গত, ৭ জানুয়ারি, ডেভিড বেনেটের শরীরে প্রতিস্থাপন করা হয়েছিল একটি জেনেটিকালি পরিবর্তিত শূকরের হৃদপিণ্ড (Pig Heart)। ৫৭ বছরের এই মার্কিন নাগরিক, টার্মিনাল হার্ট ডিজিজ-এর রোগী ছিলেন। অর্থাৎ, তাঁর হৃৎপিণ্ড প্রতিস্থাপন না করা হলে, তাঁর মৃত্যু ঘটত। এই ধরণের হৃৎপিণ্ড গ্রহণকারী বিশ্বের প্রথম ব্যক্তি হিসাবে ইতিহাস তৈরি করেছিলেন তিনি। কিন্তু, মঙ্গলবার (৮ মার্চ) বিকেলে বাল্টিমোরের (Baltimore) ইউনিভার্সিটি অফ মেরিল্যান্ড মেডিকেল সেন্টারে (University of Maryland Medical Center) বা ইউএমএমসি-তে (UMMC) তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। 

অবশ্য, গত বেশ কয়েকদিন ধরেই  তার অবস্থার অবনতি হতে শুরু করেছিল। বুধবার, হাসপাতালের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, তাঁরা আগেই বুঝেছিলেন, বেনেট আর কোনওদিনই সুস্খ হবেন না। তার পরেও, তাঁর কষ্ট যাতে কম হয়, সেই রকম যত্নে রাখা হয়েছিল। শেষ সময়ে তাঁর পরিবারের সদস্যরা তাঁর কাছেই ছিলেন। 

২০২১ সালের অক্টোবর মাসে, প্রথম ইউএমএমসি-তে ভর্তি হয়েছিলেন বেনেট। তাঁকে জীবিত রাখতে হৃদযন্ত্র এবং ফুসফুস দুটিই বাইপাস মেশিনের নিয়ন্ত্রণে রাখা হয়েছিল। কিন্তু, প্রচলিত হার্ট ট্রান্সপ্ল্যান্টের জন্য তাঁকে অযোগ্য ঘোষণা করা হয়েছিল। এরপরই বেনেটকে একটি জেনেটিক্যালি পরিবর্তিত শূকরের হৃদপিন্ডে প্রতিস্থাপনের প্রস্তাব দেওযা হয়েছিল। তিনি তা মেনে নিতে, হয়েছিল সেই অস্ত্রোপচার। বেনেটের মৃত্যু হলেও, প্রতিস্থাপিত হৃৎপিণ্ডটি বহু সপ্তাহ ধরে তাঁর দেহে খুব ভালভাবেই কাজ করেছে বলে দাবি করেছে হাসপাতাল।

বস্তু, শূকরদের অঙ্গগুলি অনেকটাই মানুষের মতো বলে, দীর্ঘদিন ধরেই তাদের বিভিন্ন অজ্ঞকে মানব দেহে সম্ভাব্য প্রতিস্থাপনের বিকল্প হিসাবে গন্য করা হয়। সরাসরি শূকর-থেকে-মানুষে অজ্ঞ প্রতিস্থাপন করতে গিয়ে, এর আগে জেনেটিক পার্থক্যের কারণে সেই অঙ্গ মানব শরীর নেয়নি, অথবা ভাইরাস থেকে সংক্রমণের ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। এই প্রথম এই প্রতিস্থাপন অস্ত্রোপচার সফল হয়েছিল।

তবে, বেনেটকে আদৌ এই দ্বিতীয় জীবনের সুযোগ দেওয়া উচিত হয়েছে কিনা, তাই নিয়েও প্রশ্ন উঠেছিল। কারণ, ১৯৮৮ সালে তিনি আরেক ব্যক্তির উপর ছুরি নিয়ে হামলা চালিয়েছিলেন। সেই হামলায় ওই ব্যক্তি পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন। ১৯ বছর তিনি হুইলচেয়ারে বেঁচে ছিলেন। ২০০৫ সালে তাঁর স্ট্রোক হয়েছিল এবং ২০০৭ সালে মৃত্যু হয়। দোষী সাব্যস্ত হয়ে বেনেটের কারাবাসের সাজা হয়েছিল। যদিও, কারাগারে ভাল আচরণের জন্য ছয় বছর পরই তিনি ছাড়া পেয়ে গিয়েছিলেন। 

Share this article
click me!