ইউক্রেন রাশিয়া যুদ্ধে (Ukraine Russia War) ইউক্রেনের সহায়ক হতে পারে আবহাওয়া। প্রায় ৪০ মাইল লম্বা রুশ ট্যাঙ্ক কনভয়ে থাকা সৈন্যদের (Russian Army) ঠান্ডায় জমে মৃত্যু হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
রুশ (Russia) বাহিনীর সঙ্গে সরাসরি যুদ্ধে পেরে ওঠা অসম্ভব ইউক্রেনের (Ukraine)। তবে, আগামী কয়েকদিনে তাদের পক্ষে সহায়ক হতে পারে আবহাওয়া। ইউক্রেনে ক্রমশ তাপমাত্রা নামছে। আর এই পারদ পতনই রুশ বাহিনীর পক্ষে কাল হয়ে যেতে পারে বলে মনে করছেন সমর বিশেষজ্ঞরা। প্রায় ৪০ মাইল লম্বা রুশ ট্যাঙ্কের কনভয় আপাতত থমকে আছে কিয়েভের অদূরে। তাপমাত্রা কমে গেলে ওই বিশাল কনভয়ে থাকা রুশ সৈন্যদের (Russian Army) ঠান্ডায় জমে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
চলতি সপ্তাহের মাঝামাঝি সময়েই তীব্র শীতের কবলে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে পূর্ব ইউরোপের (East Europe)। ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ এবং আশপাশের এলাকার তাপমাত্রা ইতিমধ্যে হিমাঙ্কের ১০ ডিগ্রি নিচে নেমে গিয়েছে। আগামী কয়েকদিনে তাপমাত্রা মাইনাস ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত নেমে যেতে পারে বলে আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে। এরই মধ্যে রাজধানী কিয়েভের উদ্দেশ্য়ে রওনা হওয়া রুশ কনভয়টির গতি এই মুহূর্তে শ্লথ হয়ে গিয়েছে। মূলতঃ, যান্ত্রিক সমস্যা এবং জ্বালানি সরবরাহের সমস্যার কারণেই কিয়েভ শহরের কেন্দ্র থেকে ১৯ মাইল দূরে কনভয়টি থমকে গিয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
আরও পড়ুন - একটি জাগুয়ার আর একটি প্যান্থারের সঙ্গে বাঙ্কারে, ইউক্রেন ছাড়তে নারাজ ভারতীয় ডাক্তার
আরও পড়ুন - চারিদিকে শুধু ধ্বংস আর মৃত্যুর হাহাকার - ছবিতে ছবিতে যুদ্ধ-বিধ্বস্ত ইউক্রেন
আরও পড়ুন - প্রেমের কাছে হারল যুদ্ধ - সামরিক চেক পয়েন্টেই প্রেমিকাকে চুমু সেনার, ভিডিও ভাইরাল
এতেই ওই কনভয়ে থাকা সৈন্যদের হয় ঠান্ডায় জমে মৃত্যু অথবা আত্মসমর্পণ করার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে, মনে করছেন সমর বিশেষজ্ঞরা। বাল্টিক সিকিউরিটি ফাউন্ডেশনের (Baltic Security Foundation) সিনিয়র প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞ গ্লেন গ্রান্ট (Glen Grant) জানিয়েছেন, রুশ ট্যাঙ্কগুলির যদি ইঞ্জিন চালানো না যায়, তাহলে সেগুলি তাদের বাহিনীর জন্য একেকটি ৪০-টনের বিশাল রেফ্রিজারেটরে পরিণত হবে। একই মত, প্রাক্তন ব্রিটিশ সেনা (British Army) মেজর কেভিন প্রাইসেরও (Major Kevin Price)।
ডেইলি মেইলকে, মেজর প্রাইস বলেছেন, রুশ সেনা আর্কটিক-স্টাইলের যুদ্ধের (Arctic-style warfare) জন্য প্রস্তুত নয়। তাই, এই তিক্ত পরিস্থিতি সৈন্যদের মনোবল ধ্বংস করে দিতে পারে। গ্রান্টের মতে, সেই পরিস্থিতি তৈরি হলে, রুশ বাহিনীর সদস্যরা ট্যঙ্কে বসে মৃত্যুর অপেক্ষা করবে না। বরং, তারা জঙ্গলের পথ ধরে হাঁটতে শুরু করবে। আর শেষে ঠান্ডায় জমে মৃত্যু এড়াতে তাদের আত্মসমর্পণ করতে হবে।
তবে, এই পারদ পতন রুশ বাহিনীর জন্য সমস্যা তৈরি করতে চলেছে, তা নয়। তীব্র কষ্টের মধ্যে পড়তে হতে পারে ইউক্রেন ছেড়ে যাওয়া হাজার হাজার শরণার্থীদেরও। দুই সপ্তাহ আগে রুশ রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির পুতিন (Vladimir Putin), ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর কথা ঘোষণা করেছিলেন। তারপর থেকে ২০ লক্ষেরও বেশি মানুষ ভিটে মাটি ছেড়ে প্রতিবেশি দেশগুলিতে আশ্রয় নিয়েছেন। বহু মানুষ রয়েছেন শরণার্থী শিবিরে। রুশ গোলা এড়াতে গিয়ে, এবার তীব্র ঠান্ডার কামড় খেতে হতে পারে তাদেরকে।
এই যুদ্ধের জন্য কিয়েভ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র-সহ (USA) তাদের পশ্চিমী মিত্রশক্তিগুলি মস্কোর (Moscow) তীব্র সমালোচনা করেছে। ৪ কোটি ৪০ লক্ষ মানুষের গণতান্ত্রিক দেশের বিরুদ্ধে অবাঞ্ছিত যুদ্ধ বলে অভিহিত করেছে তারা। এর জেরে অর্থনৈতিকভাবে বিচ্ছিন্ন হয়েছে রাশিয়া। ক্রেমলিনের (Kremlin) দাবি, এটা মোটেই যুদ্ধ নয়। প্রতিবেশী দেশকে নিরস্ত্র করতে এবং সেই দেশের 'নব্য-নাৎসি' (Neo-Nazis) নেতাদের পদচ্যুত করতে এটা রাশিয়ার এক 'বিশেষ সামরিক অভিযান'।