মার্কিন মুলুকে নিজের স্ত্রী ও মাকে হত্যা করার অভিযোগ উঠল ভারতের এক প্রাক্তন ক্রীড়াবিদের বিরুদ্ধে। ইকবাল সিং নামে ওই ক্রিড়াবিদ ১৯৮৩ সালে কুয়েতে অনুষ্ঠিত এশিয়ান অ্যাথলেটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপে ভারতের মুখ উজ্জ্বল করেছিলেন। পেয়েছিলেন ব্রোঞ্জ পদক। সেই ইকবাল সিং-কেই এবার গ্রেফতার করেছে মার্কিন পুলিশ।
ফিলাডেলফিয়া পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত রবিবার নিজের অপরাধের কথা স্বীকার করেছেন ইকবাল। ৬২ বছরের প্রাক্তন ভারতীয় এই ক্রিড়াবিদ বর্তমানে পেনসিলভেনিয়ার ডেলওয়ারের বাসিন্দা। ফোন পেয়ে নিউটাউন টাউনশিপে ইকবালের বাড়িতে গিয়ে পুলিশ দেখতে পায়, দুই মহিলার দেশের পাশে সারা গায়ে রক্ত মাখা অবস্থায় পড়ে রয়েছেন তিনি। নিজেকেই ছুরিদিয়ে আঘাত করেছেন প্রাক্তন এই শট পটার।
আরও পড়ুন: গার্হস্থ্য নির্যাতনের নৃশংস ঘটনা, ক্রিকেট ব্যাট দিয়ে স্ত্রীর মুখ ফাটাল স্বামী
সিং-এর বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে ফার্স্ট ও থার্ড ডিগ্রি মার্ডারের চার্জ দেওয়া হয়েছে। জামিনের বদলে বিচারবিভাগীয় হেফাজতে রয়েছেন ইকবাল। তিনি নিজের স্বপক্ষে মামলা লড়ার জন্য কোনও আইনজীবীও নিযুক্ত করেননি বলে জানা যাচ্ছে।
শট-পটার হিসাবে ১৯৮৩ সালে শিয়ান অ্যাথলেটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপে ব্রোঞ্জ পদক জয় ইকবালের জীবনে সবচেয়ে বড় সাফল্য। এরপরেই মার্কিন মুলুকে চলে যান তিনি। সেখানে ট্যাক্সি চালকের কাজ করতেন বলে আমেরিকার সংবাদ মাধ্যমগুলি সূত্রে জানা গিয়েছে।
প্রাথমিক তদন্তে জানা যাচ্ছে, ঘটনার দিন নিজেও আত্মঘাতী হওয়ার চেষ্টা করেছিলেন এই প্রাক্তন ক্রীড়াবিদ। রকউড রোডে সিংয়ের বাড়িতে পুলিশ তার মা নাসিব কৌরকে দোতলায় গলা কাটা অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেছিল। সিংয়ের স্ত্রী, জাসপাল কৌরকে একইভাবে উপরের তলায় পাওয়া গিয়েছিল। দুই মহিলারই ঘটনাস্থলে মৃ্যু হয়েছে বলে তদন্তে জানা যায়।
এই হত্যাকাণ্ডের উদ্দেশ্যটি এখনও অস্পষ্ট পুলিশের কাছে। ডেলাওয়ারের অ্যাটর্নি জ্যাক স্টলস্টাইমার বলেছেন, "ওই ব্যক্তির পূর্বের কোনও অপরাধমূলক কাজের যোগাযোগ নেই, সুতরাং কেন এই ঘটনা ঘটল তা এখনও রহস্য।"
জানা যাচ্ছে, মা ও স্ত্রীকে খুন করে সিং নিজের ছেলেকে ফোন করেন। বলেন, “আমি দু'জনকেই মেরে ফেলেছি। আমি তোমার মা এবং ঠাকুমাকে হত্যা করেছি। তুমি পুলিশকে ফোন করে আমাকে গ্রেফতার করতে বল। ” জানা গিয়েছে ছেলের পর মেয়ের কাছেও ফোনও বিষয়টি জানান ইকবাল সিং।
প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, অভিযুক্ত খুনি এলাকায় সুপরিচিত ছিলেন। তাকে প্রায়শই নিউটাউন স্কয়ার এলাকায় হাঁটতে এবং ধ্যান করতে দেখা যেত। তবে ঘটনার একদিন আগে তাঁর মধ্যে কিছু পরিবর্তন দেখা গিয়েছিল বসে জানাচ্ছেন এক প্রতিবেশী। প্রতিবেশী স্য ডেভিসন বলেন, “ তাঁকে স্বাভাবিক মনে হয়নি। তিনি যখন তাঁর প্রার্থনা করছিলেন, তখন বেশ উদ্বিগ্ন মনে হচ্ছিল। "