'উপরে এখানে অন্ধকার', ১১ মিনিটেই মহাকাশ ভ্রমণ সাঙ্গ জেফ বেজোসের, দেখুন ভিডিও

নিজের সংস্থার তৈরি রকেটে চড়ে মহাকাশে ঘুরে এলেন ধনীতম ব্যক্তি জেফ বেজোস। ১১ মিনিটের এই যাত্রা এক নয়া শিল্প সম্ভাবনার নিরিখে দারুণ গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত বলে মনে করা হচ্ছে।

 

Asianet News Bangla | Published : Jul 20, 2021 2:44 PM IST / Updated: Jul 20 2021, 08:19 PM IST

মঙ্গলবার, নিজের সংস্থার তৈরি রকেটে চড়ে মহাকাশে ঘুরে এলেন বর্তমানে এই পৃথিবী গ্রহের ধনীতম ব্যক্তি জেফ বেজোস। ৫২ বছর আগে এই দিনেই মানুষ প্রথম চাঁদের পা রেখেছিল। মহাকাশ চর্চা বা মহাকাশ অভিযানের নিরিখে বেজোসের এই যাত্রা, মোটেই গুরুত্বপূর্ণ না হলেও, এই ধনকুবেরের মহাকাশ যাত্রা, অভিজাত পর্যটকদের মহাকাশে ঘুরতে যাওয়ার ইচ্ছাকে পূর্ণতা দেওয়ার এক নয়া শিল্প সম্ভাবনার নিরিখে অবশ্যই দারুণ গুরুত্বপূর্ণ এক মুহূর্ত বলে মনে করা হচ্ছে।

২০০০ সালেই এই দিনটির কথা ভেবেছিলেন জেফ বোজেস। স্থাপন করেছিলেন ব্লু অরিজিন সংস্থার। ২০১২ সাল থেকে সংস্থা তাদের নিউ শেপার্ড রকেটের ফ্লাইট টেস্ট শুরু করেছিল। আর মঙ্গলবার, ২০২১ সালের ২০ জুলাই, নিউ শেপার্ড রকেটের প্রথম ক্রু মিশন, অর্থাৎ মানব পরিবহণ সম্পন্ন হল। পশ্চিম টেক্সাস থেকে ১১ মিনিটে কার্মেন লাইন অর্থাৎ যেখানে বায়ুমণ্ডলের শেষ আর মহাকাশের শুরু সেই অংশ পেরিয়ে আবার ফিরে পৃথিবীতে ফিরে এলেন তাঁরা। প্রথমে ফিরে এল লঞ্চার অংশটি, তারপর চার নয়া নভোচরকে নিয়ে হেলেদুলে নামল ক্যাপসুলটি।

আরও পড়ুন - ১৮-তেই মহাকাশে - সর্বকনিষ্ঠ নভোশ্চর হতে চলেছেন অলিভার, বেজোস-এর সঙ্গী সবচেয়ে বুড়োও

লিফট-অফ করার পরে, নিউ শেপার্ড রকেটটি একটি তরল হাইড্রোজেন-তরল অক্সিজেন ইঞ্জিন ব্যবহার করে প্রতি ঘন্টায় ৩৭০০ কিমি গতিবেগে পরের দিকে ধাবিত হয়। একেবারে উপরে বসানো ছিল ক্য়াপসুলটি। ভূপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ১০৬ কিলোমিটার উচ্চতায় যাওয়ার পর ক্যাপসুলটি বুস্টার রকেটটি থেকে আলাদা হয়ে যায়। এরপর তিন থেকে চার মিনিটের জন্য ক্যাপসুলটি মহাকাশে থেকেছে। বুস্টার তার লঞ্চ সাইটের ঠিক উত্তরে অবস্তিত একটি ল্যান্ডিং প্যাডে নিজে নিজেই ফিরে এসেছিল। ক্যাপসুলটি মরুভূমিতে মৃদু অবতরণের জন্য তিনটি বিশাল প্যারাসুট এবং একটি থ্রাস্টার ইঞ্জিন ব্যবহার করা হয়েছে।

আরও পড়ুন - গ্যারাজ থেকে আজ মহাকাশে - জেফ বেজোসের উত্থান বড়ই চমকপ্রদ, দেখুন ছবিতে ছবিতে

কেমন ছিল তাঁদের মহাকাশ দেখার অভিজ্ঞতা? জেফ বেজোস, তার ভাই মার্ক বেজোস, পয়সা দিয়ে টিকিট কেটে মহাকাশে যাওয়া প্রথম পর্যটক ১৮ বছরের অলিভার ডিমেন ছাড়াও ক্যাপসুলে ছিলেন ৮২ বছর বয়সী মহিলা বিমান চালক ওয়ালি ফ্যাঙ্ক। কার্মেন লাইন পেরিয়ে যাওয়ার পর তিনি অস্ফুটে বলে ওঠেন, 'উপরে এখানে অন্ধকার হয়ে গেছে'। এর আগে অনেক ক্ষেত্রেই প্রচলিত ধারণা ভেঙে এগিয়ে যাওয়া ফ্যাঙ্ক হলেন, সবথেকে বেশি বয়সী নভোশ্চর। আর ১৮ বছরের অলিভার ডিমেন সবথেকে কম বসয়ী।

গত ১১ জুলাই ধনকুবেরদের মহাকাশ যাত্রায় বোজেস'কে পিছনে ফেলে দিয়েছিলেন ভার্জিন গ্যালাকটিক সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা রিচার্ড ব্রানসন। তবে তাঁর মহাকাশ যাত্রা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। তাঁদের মহাকাশযান কার্মেন লাইন না পার করায়, আদৌ তাঁর ভ্রমণকে মহাকাশ ভ্রমণ বলা যায় কি না, সেই বিষয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এদিক থেকে কিন্তু, ব্লু অরিজিন পিছনে ফেলে দিয়েছে ভার্জিন গ্যালাকটিককে। তাদের মহাকাশ যাত্রা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারবে না কেউ।

আরও পড়ুন - 'ফিরতে দেবেন না' - 'অ্যামাজন'এর জেফ বেজোস মহাকাশেই থাকুন, চান হাজার হাজার মানুষ

ব্লু অরিজিন সংস্থাটি জানিয়েছে, এই বছর তাদের আরও দুটি ফ্লাইটের পরিকল্পনা আছে। তার পরের বছর আরও অনেকগুলি হবে। প্রথম উড়ানের সাফল্য এরপর তাদের রকেটের আরও অনেক যাত্রী এনে দেবে বলে আশা করছে তারা। তবে, যখন পৃথিবী জলবায়ু জনিত বিপর্যয় এবং করোনভাইরাস মহামারির মোকাবিলা করছে, তখন এই দুই ধনকুবেরের মহাশূন্যে পাড়ি দেওয়া নিয়ে সমালোচনাও কম হচ্ছে না।

Share this article
click me!