
চলছে ষষ্ঠ দফার ভোটগ্রহণ। রায়গঞ্জের ১৯৯ নম্বর বুথ। সকাল তেকেই শান্তিপূর্ণভাবেই চলছিল ভোটগ্রহণ। আচমকাই, ভোটকেন্দ্রের সামনে হাসুয়া হাতে উপস্থিত হলেন ৩ জন ব্যক্তি। এরপরই রীতিমতো আতঙ্কের পরিস্থিতি সৃষ্টি হল ওই বুথে। ওই তিনজনকে হাতে নাতেও ধরে ছেড়ে দিলেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা। এমনটাই অভিযোগ। খবর পেয়ে এলেন বিজেপি প্রার্থীও। তবে তারপরই উঠল হাসির রোল।
এদিন সকাল থেকেই কোনাটোলার ১৯৯ বুথে নির্বিঘ্নে ভোটগ্রহণ চলছিল। ব্যাপক হারে মানুষ লাইন দিয়েছিলেন ভোট দেওয়ার জন্য। আর তার মধ্যেই সেখানে হাসুয়া হাতে এসে উপস্থিত হয় ওই তিন ব্যক্তি। এরপরি ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায় ওই এলাকায়। আতঙ্কিত ভোটাররা তড়িঘড়ি বুথের বাইরের লাইন ছেড়ে পালায়। মুহূর্তে ফাঁকা হয়ে যায় ওই বুথ। বন্ধ হয়ে যায় ভোটগ্রহণ। তবে, সেখানে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা ছিলেন। গ্রামবাসীরা অবাক হয়ে দেখেন ওই তিনজনকে হাতেনাতে ধরেও একটু পরে ছেড়ে দেয় বাহিনী।
এরপরই খবর যায়ে রায়গঞ্জ আসনের বিজেপি প্রার্থী শচীন প্রসাদ-এর কাছে। একটু পরেই ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন তিনি। উপস্থিত হয় কুইক রেসপন্স টিমও। কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের সঙ্গে বিজেপি প্রার্থীর কতোপকথনেই সামনে আসে আসল ঘটনা। যা জেনে গ্রামবাসী থেকে ভোট কর্মী - সকলেই হাফ ছেড়ে বাঁচেন।
কী ঘটেছিল সেখানে? জানা গিয়েছে স্থানীয় এক ব্যক্তিকে, ওই এলাকায় কর্তব্যরত কেন্দ্রীয় বাহিনীর এক জওয়ান, তাঁর বাড়ির কাজের জন্য কয়েকটি হাসুয়া তৈরি করার বরাত দিয়েছিলেন। স্থানীয় লালগঞ্জ স্কিলে ঘাঁটি গেড়েছেন তাঁরা। সেখানেই এদিন সন্ধ্যায় হাসুয়াগুলি ডেলিভারি দেওয়ার কথা ছিল ওই ব্যক্তির। কিন্তু সেগুলি সময়ের আগেই তৈরি হয়ে গিয়েছিল। সন্ধ্যায় হাসুয়া প্রস্তুতকারক ওই ব্যক্তির কাজও ছিল। কেন্দ্রীয় বাহিনীর দাবি, তিনি ফোন করে ওই জওয়ান কোথায় আছেন তা জানতে চেয়েছিলেন। জওয়ান কোনাটোলায় আছেন জেনে, আর কিছু না বলেই সটান ওই বুথে হাসুয়া নিয়ে হাজির হন তিনি।
পুরো ঘটনাটা জেনে, বিজেপি প্রার্থী এবং গ্রামবাসীরা নিজেদের ভুল বুঝতে পারেন। এই নিয়ে হাসাহাসিও হয়। রজ্জুতে সর্পভ্রম হয়েছে বুঝে ফের আতঙ্ক কাটিয়ে বুথের বাইরে লাইন দেন ভোটাররা। ফের শুরু হয়েছে ভোট প্রক্রিয়া। বিজেপি প্রার্থী শচীন প্রসাদ বলেছেন, ওই বুথে কোনও দুষ্কৃতী হামলা হয়নি। একটা ভুল বোঝাবঝির ঘটনা ঘটেছিল, তা মিটে গিয়েছে। তাঁর এলাকায় নির্বিঘ্নে ভোটদান হচ্ছে বলেই দাবি করেছেন বিজেপি প্রার্থী। আর এই শান্তিপূর্ণ ভোটগ্রহণের জন্য, প্রশাসনের সকল ব্যক্তিকে ধন্যবাদ দিয়েছেন তিনি।