মুর্শিদাবাদের কান্দি মানেই কংগ্রেস।এই মিথ চালু হয়ে আসছে সেই ৭১ সাল থেকে। এই মিথকে উসকে দিয়েই জেলা কংগ্রেস মুখপাত্র জয়ন্ত দাস বলেছেন, 'কান্দিতে কংগ্রেসের ম্যাজিক এখনও আছে। ভোটের ফলাফলে তার প্রমাণ পাওয়া যাবে।' আর এবার সেই মিথ এবার রীতিমত চ্যালেঞ্জের মুখে দাঁড়িয়ে জোড়া ফুল আর পদ্মের চাপে।
আরও পড়ুন, সামশেরগঞ্জ ও জঙ্গিপুরে ভোটগ্রহণ ১৬ মে, নির্দেশ নির্বাচন কমিশনের
মুর্শিদাবাদ জেলার এই বিধানসভা কেন্দ্রে একসময় কংগ্রেসকে টক্কর দেওয়ার মতো শক্তি বিরোধীদের কাউর মধ্যেই ছিল না। ১৯৭১সাল থেকে অতীশচন্দ্র সিনহার জমানা শুরু হয়েছিল। তিনি ১৯৮২ সাল পর্যন্ত টানা বিধায়ক ছিলেন। ১৯৯১ সাল থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত ফের তিনি বিধায়ক হন।২০০৬ সালের নির্বাচনে অধীরবাবু এই কেন্দ্রে নিজের ক্ষমতা দেখিয়েছিলেন। তিনি নির্দল প্রার্থীকে জিতেয়ে এনেছিলেন। তারপর থেকে এই কেন্দ্রে তাঁর প্রভাব আরও বেড়ে যায়। বিগত লোকসভা নির্বাচনেও তিনি এই কেন্দ্রে এগিয়েছিলেন। কিন্তু এলাকার বাসিন্দারা বলছেন, এখন আর সেই হাওয়া নেই। সবকিছু হিসেবে নিকেশ ওলটপালট হয়ে গিয়েছে। এনআরসির বিরোধিতায় লাগাতার আন্দোলন করে সংখ্যালঘু অধ্যুষিত গ্রামগুলিতে নিজেদের প্রভাব বাড়িয়েছে তৃণমূল। কংগ্রেসের ভোটব্যাঙ্কে জোর ধাক্কা দিয়েছে।
আরও পড়ুন, Election Live Update-জগদ্দলে নিখোঁজ ৭ এজেন্ট, ষষ্ঠ দফায় ১১টা পর্যন্ত ভোট পড়ল ৩৭ শতাংশ
অন্যদিকে কান্দি শহরে কংগ্রেসের ভোটব্যাঙ্কে বিজেপি থাবা বসিয়েছে। প্রতিটা ওয়ার্ডে তাদের প্রভাব বেড়েছে। কংগ্রেস এই এলাকার বাসিন্দাদের মনে আলাদা জায়গা দখল করেছিল। কিন্তু এবারের নির্বাচনে তারা চাপে পড়ে গিয়েছে। তৃণমূল এবং বিজেপি দুই দলেই তাদের ভোট ভাঙিয়ে নিয়েছে। সেই কারণে কংগ্রেস নেতারা স্বস্তিতে নেই। এবারের নির্বাচন সম্পূর্ণ অন্য রকম হতে চলেছে।দলের একাংশের দাবি, তৃণমূল এনআরসি ইস্যুটিকে খুব ভালোভাবে কাজে লাগাতে পেরেছে। অসমের ডিটেনশন ক্যাম্পের কথা বলে তারা গ্রামে গ্রামে প্রচার চালাচ্ছে। সেদিক থেকে কংগ্রেস পিছিয়ে রয়েছে। তাছাড়া দুয়ারে সরকার কর্মসূচিও প্রতিটি এলাকার বাসিন্দাদের মনে দাগ কেটেছে। সেই কারণে তৃণমূলের পাল্লা ভারী হচ্ছে।
আরও পড়ুন, ভোটের সকালেই রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হাবড়ায়, একাধিক স্থানে BJP কর্মীদের উপর ভয়াবহ হামলা
জেলা কংগ্রেস মুখপাত্র জয়ন্ত দাস বলেন, কান্দিতে কংগ্রেসের ম্যাজিক এখনও আছে। ভোটের ফলাফলে তার প্রমাণ পাওয়া যাবে। তৃণমূল এনআরসি নিয়ে মানুষকে ভুল বোঝাচ্ছে। অসমে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে এনআরসি হয়েছে। বিজেপি আর কোথাও তা চালু করতে পারেনি। আর এনআরসির বিরুদ্ধে আমরাই সবচেয়ে বেশি লড়াই করেছি"। তৃণমূল নেতা পার্থপ্রতিম সরকার বলেন, আমরা মানুষের কাছে গিয়ে উন্নয়নের কথা বেশি করে বলছি। এই রাজ্য সরকারের আমলে মহিলারা উপকৃত হয়েছেন। তাঁরা কন্যাশ্রী, রূপশ্রীর মতো বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছেন"। এলাকার ভোটাররা বলছেন, কান্দি শহরে কংগ্রেসের সঙ্গে অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার লড়াইয়ে তৃণমূল ও বিজেপির জোর টক্কর হবে"। আর এই যাবতীয় বিষয়ে মুর্শিদাবাদ জেলার বিজেপি জেলা সভাপতি গৌরীশঙ্কর ঘোষ বলেন," কান্দি শহরে নতুন ইতিহাস রচনার হবে। হাত কিংবা ঘাসফুল নয়, পদ্মফুল ফুটবে কান্দির বুকে"।