কাকে ভোট দেবেন, কোন 'বন্ধু' মমতার প্রিয়তম - ধন্দে পাহাড়ের তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরা

১৭ এপ্রিলই পাহাড়ে ভোট

তার আগে মহা ধন্দে পড়েছেন তৃণমূল সমর্থকরা

পাহাড়ের তিন কেন্দ্র বন্ধুদের ছেড়েছেন মমতা

কিন্তু, বিমল গুরুং না বিনয় তামাং -  কে মমতার প্রিয়তম বন্ধু

 

amartya lahiri | Published : Apr 12, 2021 5:53 PM IST

১৭ এপ্রিলই পাহাড়ে ভোট। মহা সমস্যায় পড়েছেন বঙ্গের পার্বত্য অঞ্চলের তিন আসনের তৃণমূল সমর্থকরা। দার্জিলিং, কালিম্পপং এবং কার্শিয়াং - রাজ্যের ২৯৪ আসনের মধ্যে একমাত্র এই তিনটি কেন্দ্রেই প্রার্থী দেয়নি তৃমূল কংগ্রেস। মমতা বলেছিলেন, 'বন্ধুদের ছেড়ে দেওয়া হল'। কিন্তু সেই বন্ধু কে - বিমল গুরুং না বিনয় তামাং? ধন্দে পড়েছেন পাহাড়ের তৃণমূল সমর্থকরা। গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সঙ্গে পাহাড়ে কোনও যৌথ নির্বাচনী প্রচারও করেনি তৃণমূল। তাই কাকে ভোট দেবেন, পাহাড়ের তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের পক্ষে এবার সিদ্ধান্ত নেওয়াটা বেশ কঠিন।

বস্তুত, একসময়ের ওয়ান্টেড ক্রিমিনাল বিমল গুরুং প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই বারবার আলোচনায় এসেছে পাহাড়ের রাজনীতি। এবার নির্বাচনে পাহাড়ের ৩টি আসনে প্রার্থী দিয়েছেন তিনি। দার্জিলিং-এ পিটি ওলা, কালিম্পং-এ রাম ভুজাল এবং কার্শিয়াং-এ নরবু জি লামাকে প্রার্থী করেছেন বিমল।

অন্যদিকে, তার আগেই এই ৩ আসনে প্রার্থী দিয়েছিলেন বিনয় তামাং। নিজেদেরকে জিজেএম ২ হিসাবে দাবি করে তিনি দার্জিলিং-এ কেশবরাজ পোখরাল, কালিম্পং-এ রুদান লেপচা এবং কার্শিয়াং-এ টিশেরিং লামাকে টিকিট দিয়েছেন। দুই পক্ষের পিছনেই গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার বড় অংশের সমর্থন রয়েছে। এই নিয়েই প্রবল সমস্যায় পড়েছেন পাহাড়ের তৃণমূল ভোটাররা।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের 'বন্ধু' দুই গোষ্ঠীই, কিন্তু কোন দল তাঁর 'প্রিয়তম'? রয়েছে বিভ্রান্তি। মমতার সঙ্গে ছাড়ার পর বিমল গুরুং যখন পাহাড় থেকে পালাতে বাধ্য হয়েছিলেন, সেই সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, জিটিএ-র মাথায় বসিয়েছিলেন বিনয় তামাংকেই। কিন্তু, প্রায় সাড়ে তিন বছর পর বিমল গুরুং পাহাড়ে ফিরে এসেছেন - নবান্নে বৈঠক থেকে রাজ্য সরকারের তার বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার - সবটাই বলে দিচ্ছে মমতা তাঁকেই চাইছেন, বলছে গুরুং গোষ্ঠী।

গুরুং ফিরে আসার পর, দুই শিবিরের মধ্যে মিটমাট করানোর চেষ্টা করেছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের শীর্ষ নেতারা। এমনকী পিকে, অর্থাৎ প্রশান্ত কিশোরও নাকি একবার বিমল গুরুং-বিনয় তামাং গোষ্ঠীর মতপার্থক্য ঘোচানোর চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু, কোনও চেষ্টাতেই লাভ হয়নি। দুই গোষ্ঠীই অবশ্য সমতলে তৃণমূল প্রার্থীদের সমর্থন করার কথা জানিয়েছেন।

"

গুরুংয়ের অনুপস্থিতিতে দুটি নির্বাচন হয়েছে। দার্জিলিং উপনির্বাচনে গুরুং গোষ্ঠী তামাং, জিএনএলএফ এবং বিজেপির জোটকে হারিয়ে দিয়েছিল। লোকসভা নির্বাচনে আবার তামাং গোষ্ঠী জয় পেয়েছিল। এবারের বিধানসভা নির্বাচন সরাসরি শক্তি পরীক্ষায় নামছে দুই গোষ্ঠী। দুই পক্ষের ভোট কাটাকাটির সুবিধা পেতে পারে বিজেপি। যদিও তারা এবার পাহাড়ে অপেক্ষাকৃত ছোট দলগুলির সঙ্গে জোট গড়েছে।

পাহাড়ের তৃণমূল নেতারা বলছেন, বস্তুত এই বিষয়ে দলের পক্ষ থেকে কোনও নির্দেশই নেই। আপাতত তাঁদের চুপচাপ থাকতে বলা হয়েছে। নির্বাচনের পর পরবর্তী পদক্ষেপ ঠিক করবে দল। তাই, মমতার কোন বন্ধু জেতে, তাই নিয়েই এখন হাওয়া গরম পাহাড়ে।  

 

 

Share this article
click me!