নবাব নগরীতেই গেরুয়া ঝড়ে শোচনীয় পরাজয় তৃণমূলের। দলের অন্দরেই চরম অন্তর্ঘাতের ইঙ্গিতে তীব্র চাপানউতোর। শেষ পর্যন্ত খোদ নবাব নগরী মুর্শিদাবাদেই পদ্মফুলের দাপটে মারা পড়েছে ঘাসফুল। ফলে পরাজিত তৃণমূল প্রার্থী শাওনী সিংহ রায় ।জেলা জুড়ে তুমুল তৃণমূল ঝড় থমকে গেছে এই নবাব নগরী মুর্শিদাবাদে গিয়ে। আর এই হারের কারণ বিশ্লেষণ করতে গিয়ে তৃণমূলের অন্তরের অন্তর্ঘাত ও গোষ্ঠী কোন্দোলই একমাত্র দায়ী বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল থেকে শুরু করে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব পর্যন্ত । আর সেই নিয়েই জেলা স্তরে বিশেষ বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছে বলেই সূত্রের খবর।
আরও পড়ুন, রাজ্যে মন্ত্রী তালিকায় কে কে পাচ্ছেন ঠাঁই, মমতার শপথ নিতেই মন্ত্রিত্ব নিয়ে জোর টক্কর
মুর্শিদাবাদ বিধান সভার জন্য তৃণমূল দলের প্রার্থী তালিকায় শাওনী সিংহ রায়ের নাম প্রকাশিত হতেই দলের একাংশ বিক্ষোভ দেখান । এমন কি দলের ওই বিক্ষুব্ধরা জেলা নেতৃত্ব জানিয়েও দেন তাদের পক্ষে শাওনীর হয়ে ভোট করা সম্ভব নয় । তাদের মধ্যে অন্যতম জিয়াগঞ্জ থানা তৃণমূল সভাপতি দেবাশীস সরকার , মুর্শিদাবাদ পুরসভার প্রশাসক বিপ্লব চক্রবর্তী , স্থানীয় পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মুরসিনা বেগম ,পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ সন্দীপ রায় প্রমুখ ।শেষ পর্যন্ত রাজ্য নেতৃত্বের চাপে ভোটের একেবারে শেষ মুখে বিক্ষুব্ধরা নামে মাত্র শাওনীর সঙ্গে প্রচারে বের হলেও কার্যত তারা দলের হয়ে ভোট না করে চুপ করে বসেছিলেন দলীয় স্তরে এমন অভিযোগ তোলা হয়েছে । দেখা যাচ্ছে বিপ্লব চক্রবর্তীর নিজের বুথ সাহানগর ১১২ – এ ও বি বুথে মোট ভোট পড়ে ৮২৬ টি তার মধ্যে তৃণমূল পায় ২৩৫ টি , সন্দীপ রায়ের বুথ মোট ভোট পড়ে ৫১৭ টি অথচ তৃণমূল পাই মাত্র ৫৫ টি ভোট রাসু মন্ডলের নশিপুর বুথে মোট ভোট পড়ে ৭২০ টি তার মধ্যে শাওণী পাই মাত্র ১৭ টি ভোট । এর পরেও বিজেপি প্রার্থী গৌরী শঙ্কর ঘোষের কাছে মাত্র ২,৪৯১ ভোটে পরাজিত হন শাওনী সিংহ রায় । বিজেপি প্রার্থী মোট ৯৫,৯৬৭ ভোট পেয়েছেন ।জিয়াগঞ্জ ও মুর্শিদাবাদ থানা নিয়ে গঠিত মুর্শিদাবাদ বিধান সভা ।এই কেন্দ্রের মোট ভোটের ৫৬ শতাংশ হিন্দু এবং বাকি ভোটার মুসলিম সম্প্রদায়ের ।
গত লোক সভা নির্বাচনে মুর্শিদাবাদ থেকে লিড পেয়েছিল বিজেপি । তার পরেও লড়াই সমানে সমানে জারি রেখেছিলেন শাওনী । কিন্তু দলের গোষ্ঠী কন্দোল যে তৃনমূল প্রার্থীর পরাজয়ের কারন হল সেকথা স্পষ্ট করে দেন মুর্শিদাবাদ টাউন তৃণমূল সভাপতি ইন্দ্রজিৎ ধর । তিনি বলেন , ' দলের এক দল নেতা আছেন যারা দলের সব ক্ষমতা ভোগ করবেন কিন্তু ভোট করবেন না । এই কারনেই জেলায় তৃণমূলের ঝড় বইলেও মুর্শিদাবাদে তা থেমে যায় ।' এসবের বিস্তারিত জেলা নেতৃত্ব কে লিখিত ভাবে জানাবেন বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি । তবে দেবাশিস সরকার পরিষ্কার ভাবে জানিয়ে দেন , 'দল কে আগেই জানিয়েছিলাম ওই প্রার্থী কোনও দিনই জিততে পারবেনা ।আর আমি নির্বাচনের দায়িত্বে ছিলাম না ,তাই ভোটও করিনি । এখন দল যা সিদ্ধান্ত নেবে তা আমি মেনে নেব ।'