মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের যুদ্ধের দীর্ঘ দিনের সাক্ষী বেচারাম মান্না ও তাঁর স্ত্রী করবী। অন্যদিকে দুলাল দাস তাঁর মেয়ে কন্যা রত্না চট্টোপাধ্য়ায়ও দীর্ঘদিন ধরেই মুখ্যমন্ত্রীর সহযোদ্ধা। এই চার তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক বৃহস্পতিবার বিধানসভা শপথ গ্রহণ করে এক অনন্য নজির তৈরি করলেন। কারণ এই প্রথম পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা সাক্ষী থাকল এক দম্পতি ও বাবা মেয়ের একসঙ্গে শপথ গ্রহণের।
বাবা ছেলে, কাকা ভাইপোকে এসঙ্গে শপথ নিতে দেখলেও বাবা আর মেয়ের একসঙ্গে শপথ গ্রহণ প্রায় নজিরবিহীন ঘটনা বাংলার বিধানসভায়। এদিন সেই রেকর্ডও গড়ে দিলেন তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী। মহেশতলা থেকে জিতে দ্বিতীয়বারের জন্য বিধায়ক হয়েছিলেন দুলাল দাস। বেহালা পূর্ব কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী ছিলেন রত্না চট্টোপাধ্য়ায়। রাজনীতির আঙিনা দীর্ঘ দিন ঘোরাফেরা করলেও এই প্রধান তিনি বিধায়ক হলেন। স্বামী শোভন চট্টোপাধ্য়ায়ের ফেলে যাওয়ার কেন্দ্র থেকেই জয়ী হয়েছিলেন স্ত্রী রত্না। যদিও তাঁদের বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা চলছে। এদিন রত্নাকে শপথ বাক্য পাঠ করান প্রোটেম স্পিকার সুব্রত মুখোপাধ্যায়। সেই সময়েই বিধায়ক পিতার মুখে ছিল স্বস্তির হাসি। বাবা ও ছেলে হিসেবে একসঙ্গে বিধানসভায় শপথ নিয়েছিলেন ২০০৬ সালে শিশির অধিকারী ও শুভেন্দু অধিকারী। কাকা ভাইপো জুটি ছিল ১৯৭২ সালে প্রফুল্ল কান্তি ঘোষ ও তরুণকান্তি ঘোষ।
এদিন বঙ্গ বিধানসভা বিধায়ক দম্পতি হয়ে শপথ গ্রহণ করেন সিঙ্গুরের বেচারাম মান্না ও তাঁর স্ত্রী হরিপালের বিধায়ক করবী। পেশায় চিকিৎসক করবী এই প্রথম বিধায়ক হলেন। রত্নার মত তিনিও স্বামীর পুরনো আসন থেকেই ভোট যুদ্ধে সামিল হয়েছিল। তবে তিনি যে রেকর্ড গড়ে বিধানসভা প্রবেশ করেছেন তা অবশ্য তাঁর অজনা ছিল বলেও জানিয়েছেন। আগামী দিনে স্বামীর সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করবেন বলেও জানিয়েছেন।
যদিও এই দুটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে পরিবারতন্ত্রের অভিযোগ তুলে সরব হয়েছে অনেকেই। তবে তাতে তেমন গুরুত্বদিতে নারাজ তৃণমূল। যদিও এর আগে স্ত্রী প্রয়াত হওয়ার পর তাঁর আসন থেকেই প্রার্থী হয়ে বিধানসভা এসেছিলেন দুলাল দাস। তবে বেচারাম মান্না জানিয়েছেন তিনি ও তাঁর স্ত্রী সর্বক্ষণের বিধায়ক। তাই তাঁদের বিরুদ্ধে পরিবারতন্ত্রের অভিযোগ ওঠা ঠিক নয়।