সব জল্পনার অবসান ঘটিয়ে আজই বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিতে চলেছেন মুকুল রায়। দুপুরের দিকে ছেলে শুভ্রাংশু রায়কে নিয়ে তৃণমূল ভবনে ঢোকেন তিনি। আর ঠিক সেই সময় সোশ্যাল মিডিয়ায় বেসুরো পোস্ট করলেন বিজেপি নেতা অনুপম হাজরা। বিজেপির 'লবিবাজি' নিয়ে সরব হয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন- মুকুলকে কীভাবে পুনর্বাসন দেবে তৃণমূল, তাঁর জন্য কী পরিকল্পনা সাজিয়েছেন মমতা
ফেসবুকে তিনি লেখেন, "নির্বাচন চলাকালীন ২ থেকে ১ জন নেতাকে নিয়ে অতি মাতামাতি করা এবং যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও লবিবাজি করে বাকিদের বসিয়ে রেখে অবজ্ঞা বা অপমান করার করুণ পরিণতি!!! চাটার্ড বিমানের রয়্যাল যাত্রীরাও বেপাত্তা !!! এখনও সময় আছে, বঙ্গ বিজেপির উচিত লবিবাজি বন্ধ করে যোগ্যতা অনুসারে বসে থাকা নেতাদের কাজে লাগানো !!!"
যখন মুকুল রায় তৃণমূলে যোগ দেবেন বলে তৃণমূল ভবনের মধ্যেই রয়েছেন ঠিক তখনই অনুপমের এই পোস্ট ঘিরে শুরু হয়েছে জল্পনা। তাহলে কি তিনিও বিজেপি ছেড়ে ফের তৃণমূলে যাবেন? এই প্রশ্নই উঠতে শুরু করে রাজনৈতিক মহলের একাংশের মনে। যদিও পোস্টের মধ্যেই অনুপম সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, "বঙ্গ বিজেপির অসময়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলাম, বিজেপিতে আছি এবং বিজেপিতে থাকব!!! (শুধু বঙ্গ বিজেপির নোংরা লবি-বাজি বন্ধ করার জন্য এই বার্তা দিলাম)।"
এরপর 'লবিবাজি' প্রসঙ্গে একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে অনুপম বলেন, "নির্বাচনের সময় দেখা গিয়েছে যে অনেক নেতাকেই প্রচারে ডাকা হত না। এমনকী, বৈঠকেও আমন্ত্রণ পেতেন না। একটা লবির প্রভাবে এভাবে যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও কিছু নেতাকে বসিয়ে রাখা, তাঁদের না ডাকা ঠিক নয়। এটা যদি ঠিক করা না হয় তাহলে বঙ্গ বিজেপির জন্য আগামীদিনে আরও ভয়ের কিছু অপেক্ষা করছে। কারণ অনেকেই সান্ত্বনা দিয়ে বলছেন যে নির্বাচনে ৩ থেকে ৭৭টি আসন দখল করেছে বিজেপি। কিন্তু, প্রচারের সময় প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ২০০টি আসনের লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছিলেন। তাঁরা চেয়েছিলেন বিজেপির থেকে কেউ মুখ্যমন্ত্রী হন। কিন্তু, দুর্ভাগ্যবশত অনেককে নির্বাচনের সময় ব্যবহার করা হয়নি। সাংগঠনিক সমন্বয়ের অভাব রয়েছে বিজেপির মধ্যে।"
তবে অনুপম হাজরা বিজেপি না ছাড়ার কথা বললেও মুকুলের তৃণমূলে যোগদানের দিনই তাঁর 'লবিবাজি' নিয়ে সরব হওয়ার বিষয়টি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। কারণ একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার হিড়িক লক্ষ্য করা গিয়েছিল। তৃণমূলে কাজ করতে না পারার কথা জানিয়ে দলত্যাগ করেছিলেন তাঁরা। কিন্তু, নির্বাচনের পর বিপুল ভোট পেয়ে ক্ষমতায় আসে তৃণমূল। আর তারপরই বিজেপি ছেড়ে ফের তৃণমূলে যোগ দেওয়ার ইচ্ছাপ্রকাশ করেন একাধিক নেতা-নেত্রী। যদিও সেই সময় লবিবাজি নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে দেখা যায়নি অনুপমকে। তাহলে আজ মুকুলের তৃণমূলে যোগ দেওয়ার দিন কেন তিনি হঠাৎ এনিয়ে সরব হলেন তা নিয়েই উঠছে প্রশ্ন তুলেছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ।