সংক্ষিপ্ত
৪ বছর পর তৃণমূলে ফিরলেন মুকুল রায়। ছেড়ে যাওয়ার সময় তিনিই ছিলেন দলের জাতীয় সাধারণ সম্পাদক। সেই পদ সদ্য দেওয়া হয়েছে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়কে। তাহলে দলে তাঁর কী ভূমিকা হবে, কী পরিকল্পনা মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের?
২০১৯ লোকসভা নির্বাচনের আগে ২০১৭ সালে তৃণমূল দল ত্যাগ করেছিলেন মুকুল রায়। সেইসময় তিনি ছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের জাতীয় সাধারণ সম্পাদক এবং রাজ্যসভার সাংসদও। তিনি রাজ্যসভা থেকে পদত্যাগ করে তৃণমূলের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছিলেন, পারিবারিক দল হয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ করছিলেন। সেইসময় তাঁকে ৬ বছরের জন্য তাঁকে সাসপেন্ড করেছিল দল। তারপর আবার ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে ২০২১ সালে ফের তৃণমূলে ফিরলেন মুকুল। এবার তাঁকে কীভাবে ব্যবহার করবে দল? তাঁর জন্য কী পরিকল্পনা সাজিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়?
মুকুল রায়ের দলত্যাগের পর ৪ বছর কেটে গিয়েছে। এর মধ্যে ২০১৯ লোকসভা নির্বাচন হয়ে গিয়েছে, হয়ে গিয়েছে মহাগুরুত্বপূর্ণ বিধানসভা নির্বাচন। লোকসভায় তৃণমূল কংগ্রেস ধাক্কা খেয়েছিল বটে, কিন্তু বিধানসভা নির্বাচনে বিপুল জয় পেয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রমাণ হয়ে গিয়েছে, মুকুল রায়, শুভেন্দু অধিকারীদের বাদ দিয়েই মমতা-অভিষেক জুটি দলকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে। মুকুল রায় সংগঠনের জন্য ততটাও গুরুত্বপূর্ণ নন, অন্তত বাংলায়, ফলাফলই তার প্রমাণ। অন্যদিকে দল ছাড়ার সময় যে জাতীয় সাধারণ সম্পাদের ভূমিকা তাঁর ছিল, তা এখন পেয়েছেন তরুণ তুর্কি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
তাহলে মুকুল কী করবেন, কেন তাঁকে দলে ফেরাচ্ছেন মমতা? আসলে মুকুল রায়-এর দিল্লির যোগাযোগকে কাজে লাগাতে চাইছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। বাংলায় মমতার বিশাল জয় তাঁকে জাতীয় স্তরে নরেন্দ্র মোদীর প্রতিদ্বন্দ্বীমুখ হিসাবে প্রতিষ্ঠা করেছে। শোনা যাচ্ছে ইউপিএ-র পরবর্তী বৈঠকে চেয়ারম্যান হিসাবে মমতার নামই প্রস্তাব করবে বেশ কয়েকটি আঞ্চলিক দল। মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ও স্পষ্ট করে দিয়েছেন, তাঁর পরবর্তী রাজনৈতিক লক্ষ্য হচ্ছে ২০২৪ সালে নরেন্দ্র মোদীকে ক্ষমতা থেকে সরানো। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও ইঙ্গিত দিয়েছেন, তিনি দলকে অন্যান্য রাজ্যেও ছড়িয়ে দিতে চান।
আরও পড়ুন - গদ্দারও দুই প্রকার, নরমপন্থী ও চরমপন্থী - দলে কাদের ফেরাবেন, কী বললেন মমতা
আরও পড়ুন - ৩ বছর ৯ মাস পর ফের মুখোমুখি দিদি ও তার পুরোনো সেনাপতি, শুরুতেই কী বললেন মুকুল
আরও পড়ুন - 'বেচারা' থেকে 'ঘর ওয়াপসি' - ফের ঘাসফুলে ফুটল মুকুল, আড়াই মাসে কীভাবে বদলালো ঘটনাক্রম
দীর্ঘদিন দিল্লিতে থেকে রাজনীতি করার ফলে, রাজধানীর রাজনৈতিক মহলে মুকুল রায় অত্যন্ত পরিচিত মুখ। এর আগে মুকুল রায়কে রাজ্যসভার সাংসদ করেছিলেন মমতা, এমনকী তাঁকে রেলমন্ত্রীও করেছিলেন। এবারও, মুকুল রায়কে রাজ্যসভার সাংসদ হিসাবেই দিল্লিতে পাঠাবেন মমতা, এমনটাই শোনা যাচ্ছে। দীনেশ ত্রিবেদী ও মানস ভুঁইয়া-র রাজ্যসভার আসন দুটি ফাঁকা হয়েছে। দীনেশ গত ফেব্রুয়ারী মাসে পদত্যাগ করে দল ছেড়েছিলেন। বিধায়ক হওয়ার পর পদত্যাগ করেন, মানস ভুঁইয়া। এই দুই আসনে তৃণমূল কংগ্রেস দিল্লিতে পাঠাতে পারে মুকুল রায় এবং যশবন্ত সিনহাকে, এমনই খবর তৃণমূল ভবন সূত্রে।