তৃণমূলে প্রত্যাবর্তনের পরই কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে চিঠি লিখেছিলেন মুকুল রায়। সেই দাবি মেনেই এবার তাঁর কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা প্রত্যাহার করল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক।
২০১৬ সালে বিধানসভা নির্বাচনের আগে নারদ স্টিং অপারেশনের ভিডিও প্রকাশ্যে আসে। তাতে তৃণমূলের একঝাঁক নেতা-নেত্রীকে টাকা নিতে দেখা যায়। ছিলেন মুকুল রায়ও। চরম বিতর্কের মাঝেও ক্ষমতায় এসেছিল তৃণমূল। কিন্তু, চাপ বাড়ছিল মুকুল রায় ও শোভন চট্টোপাধ্য়ায়ের উপর। এরপর ২০১৭ সালে তৃণমূল ছেড়ে গেরুয়া শিবিরে নাম লিখিয়েছিলেন মুকুল। সেই সময় থেকেই কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা পেতেন তিনি। জেড ক্যাটেগরির কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা দেওয়া হত তাঁকে।
আরও পড়ুন- 'আমাকে পেটানোর হুমকি দিচ্ছে রত্না', কলকাতা পুলিশ কমিশনারের দ্বারস্থ বৈশাখী
তবে একুশের বিধানসভা নির্বাচনের পরই ছবিটা বদলাতে শুরু করে। কৃষ্ণনগর উত্তর বিধানসভা আসন থেকে জেতার পর বিজেপিতে তেমন সক্রিয় ছিলেন না মুকুল। এরপর সব জল্পনার অবসান ঘটিয়ে ছেলে শুভ্রাংশু রায়কে সঙ্গে নিয়ে কয়েকদিন আগেই তৃণমূলে প্রত্যাবর্তন হয় তাঁর। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে তৃণমূলে যোগ দেন তিনি।
তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পরই কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে চিঠি লিখেছিলেন মুকুল রায়। এদিকে তৃণমূলে ফেরার পরেই তাঁকে রাজ্য পুলিশের নিরাপত্তা দেওয়া হয়। গত শুক্রবার রাতেই তাঁর কাঁচরাপাড়ার বাড়ির নিরাপত্তার দায়িত্ব নেয় রাজ্য পুলিশ। আর আজ মুকুলের আর্জি মেনেই তাঁর নিরাপত্তা প্রত্যাহার করল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক।
আরও পড়ুন- BSF-এর তল্লাশি, পায়ুগহ্বর থেকে বের হল ৯৯০টি ট্যাবলেট - নয়া পাচার-চক্রের সন্ধান ঠাকুরনগরে
এদিকে এবারের বিধানসভা নির্বাচনে বিপুল পরিমাণ ভোট পেয়ে রাজ্যে তৃতীয়বারের জন্য ক্ষমতায় এসেছে তৃণমূল। তারপর থেকেই তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়া একাধিক নেতা-নেত্রী ফের তৃণমূলে ফেরার ইচ্ছাপ্রকাশ করছেন। আর মুকুলের তৃণমূলে প্রত্যাবর্তনের পর অনেকেই নাকি এখন তৃণমূলের দিকে ঝুঁকতে শুরু করেছেন। বঙ্গ বিজেপিতে এখন ভাঙন লক্ষ্য করা গিয়েছে। আর সেই ভাঙন রুখতে মরিয়া গেরুয়া শিবির। দলত্যাগ বিরোধী আইন কার্যকরের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। অন্যদিকে এই আইন কার্যকর হলে তাঁর বাবা শিশির অধিকারীও বিপাকে পড়বেন বলে পাল্টা তাঁকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছে তৃণমূল। কারণ তৃণমূলের প্রার্থী হিসেবে জিতে সাংসদ হয়েও, বিজেপির মঞ্চে যোগ দিয়েছিলেন শিশির অধিকারী। তবে বঙ্গ বিজেপির ভাঙন রুখতে শুভেন্দু কতটা কার্যকরী ভূমিকা পালন করতে এখন সেটাই দেখার।