রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে একাধিকবার সরব হয়েছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। আর আজ দিল্লি যাওয়ার আগে ফের একবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে এনিয়ে কড়া ভাষায় চিঠি লিখলেন তিনি। এই বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী নিষ্ক্রিয় ও নীরব রয়েছেন বলেও অভিযোগ তুলেছেন। মন্ত্রিসভায় ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে আলোচনার আর্জি জানিয়েছেন রাজ্যপাল।
আরও পড়ুন- রাজ্যে শুরু হচ্ছে শিশুদের শরীরে করোনা টিকা পরীক্ষা, জানুন বিস্তারিত
গতকাল রাজভবনে গিয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী-সহ রাজ্যের একাধিক বিজেপি বিধায়ক। সেখানে ভোট পরবর্তী হিংসা ও রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে রাজ্যপালের কাছে অভিযোগ জানান তাঁরা। আর তারপরই আজ তিনদিনের দিল্লি সফরে যাচ্ছেন রাজ্যপাল। সেখান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে তাঁর বৈঠক করার কথা রয়েছে। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের সঙ্গেও তিনি দেখা করবেন বলে সূত্রের খবর। শুভেন্দুর রাজভবন সফরের পরই তাঁর দিল্লি সফর অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। আর সেই সফরের আগেই মুখ্যমন্ত্রীকে কড়া ভাষায় চিঠি লিখলেন রাজ্যপাল।
আরও পড়ুন- করোনা পরিস্থিতে এবারও গড়াবে না মাহেশের রথের চাকা, স্থগিত ৬২৫ বছরের রথযাত্রা
চিঠিতে রাজ্যপাল লেখেন, "ভোটের পরে বহু মানুষ হিংসার কবলে পড়ে প্রাণ হারিয়েছেন। বিরোধীদের প্রচুর সম্পত্তি নষ্ট করা হয়েছে। লাগাতারি নারী নির্যাতন ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের মতো ঘটনা ঘটছে। রাজ্যের এই পরিস্থিতি নিয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলেও আপনি নীরব থেকেছেন। এমনকি মন্ত্রিসভার বৈঠকেও এ নিয়ে কোনও আলোচনা করেননি। পুলিশ এবং প্রশাসনের তরফে এ নিয়ে কড়া পদক্ষেপ করা প্রয়োজন ছিল। এটা প্রত্যাশিতও ছিল। কিন্তু সেটাও করা হয়নি। পরিবর্তে আক্রান্তরাই পুলিশ-প্রশাসনকে ভয় পাচ্ছেন। আর যারা দোষী তারা নিশ্চিন্তে তাণ্ডব চালাচ্ছে।"
এছাড়াও চিঠিতে একাধিক বিষয় তুলে ধরেছেন রাজ্যপাল। ১৩ থেকে ১৫ মে ভোট পরবর্তী হিংসার পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে কোচবিহার, নন্দীগ্রামে গিয়েছিলেন তিনি। সেই পরিস্থিতির কথাও চিঠিতে উল্লেখ করেছেন তিনি। লেখেন, "মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী আপনি অবশ্যই এ বিষয়ে সহমত হবেন যে, রাজ্যে এই সন্ত্রাসের পরিবেশ গণতন্ত্রের পক্ষে বিপজ্জনক। গণতান্ত্রিক প্রথা মেনে ভোট দেওয়ার পরেও এটা হতে দেওয়া যায় কী ভাবে?" পাশাপাশি ১৭ মে চার হেভিওয়েট নেতা-মন্ত্রীকে সিবিআইয়ের গ্রেফতার করার দিন নিজাম প্যালেসে মুখ্যমন্ত্রীর হাজির হওয়ার প্রসঙ্গও তুলে ধরেন তিনি।
এরপর ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে মন্ত্রিসভায় আলোচনা করার জন্য মুখ্যমন্ত্রীকে আর্জি জানিয়েছেন রাজ্যপাল। এছাড়া রাজ্যে সুষ্ঠু আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যাতে ফিরে আসে সেই বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা ও পুলিশ প্রশাসন যাতে নিজেদের কর্তব্যে অবিচল থাকে সে দিকে নজর দেওয়া প্রয়োজন বলে চিঠিতে উল্লেখ করেছেন তিনি।