শমিকা মাইতি, প্রতিনিধি--- পশ্চিমবঙ্গের উত্তরে কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি, দার্জিলিং, কালিম্পং, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর এবং মালদহ জেলা নিয়ে উত্তরবঙ্গ। পাহাড় থেকে সমতলে বিস্তীর্ণ উত্তরবঙ্গ ভৌগোলিক ভাবে যতটা বৈচিত্র্যপূর্ণ, রাজনৈতিক ভাবেও ততটাই রঙিন। যদিও গত লোকসভা ভোটে উত্তরবঙ্গে পুরোটাই ছিল গেরুয়া রং। কিন্তু ২০২১-এর বিধানসভা ভোটে অন্য রঙের ছিটাও হয়তো লাগবে উত্তরবঙ্গে। কংগ্রেস ও বামেদের জোট এবং পাহাড়ে গোর্খাদের সঙ্গে তৃণমূলের জোট গেরুয়া-ঝড়কে বেগ দেবে বলে মনে করছেন রাজনীতির কারবারিরা।
কোচবিহারে ভোটশেয়ার (শতাংশের হিসাবে)
রাজনৈতিক দল | ২০১৯- লোকসভা | ২০১৬- বিধানসভা Ad3 | ২০১৪- লোকসভা |
তৃণমূল | ৪৪.৮৯ Ad4 | ৪৫.০৬ | ৩৯.৮৬ |
বিজেপি | ৪৮.৩৭ | ১২.৮৭ | ১৬.৫৭ |
বামফ্রন্ট | ৩.১৮ | ৩৭.৪৭ | ৩৩.৬২ |
কংগ্রেস | ১.৭৭ | ৫.৪১ |
কোচবিহার জেলায় ৯টি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে ২০১৯ সালের লোকসভা ভোট অনুযায়ী ৭টিতে এগিয়ে রয়েছে বিজেপি। কেবলমাত্র শীতলকুচি ও সিতাই কেন্দ্রে এগিয়েছিল তৃণমূল। সেই শীতলকুচি, যেখানে ভোটের দিনে প্রাণ হারিয়েছেন পাঁচ জন। ২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটের হিসাব ধরলে অবশ্য কোচবিহার উত্তর ছাড়া সব ক’টিতে ক্ষমতাসীন তৃণমূল। ওই আসনটিতে জিতেছিলেন ফরওয়ার্ড ব্লক প্রার্থী। ২০১৪ সালের লোকসভা ভোটের হিসাবেও তৃণমূলই আধিপত্য করেছে। একমাত্র মেখলিগঞ্জের আসনটিতে সিপিএম প্রার্থীর লিড ছিল। আরও একটু পিছিয়ে গেলে দেখা যাবে ২০১১ সালে তৃণমূল ঝড়ের সময়েও এই জেলার ৪টে আসনে ( মেখলিগঞ্জ, কোচবিহার উত্তর ও দক্ষিণ, দিনহাটা) জিতেছিল বামদল ফরওয়ার্ড ব্লক। সেবার সিতাই কেন্দ্রটিতে জিতেছিলেন কংগ্রেস প্রার্থী। বাকি শীতলকুচি, নাটাবাড়ি ও তুফানগঞ্জে জিতেছিল তৃণমূল।
আলিপুরদুয়ারে ভোটশেয়ার (শতাংশের হিসাবে)
রাজনৈতিক দল | ২০১৯- লোকসভা | ২০১৬- বিধানসভা |
তৃণমূল | ৩৬.৮৮ | ৩৯.৩৬ |
বিজেপি | ৫৫.৮২ | ২৪.৩৬ |
বামফ্রন্ট | ৩.৮৯ | ৩০.৭৯ |
কংগ্রেস | ২.০৩ |
আলিপুরদুয়ার জেলার পাঁচটি আসনের পাঁচটিতেই ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে এগিয়েছিল বিজেপি। এর মধ্যে মাদারিহাট কেন্দ্রটিতে ২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটেও বিজেপিই জিতেছিল। বাকি কুমারগ্রাম, কালচিনি, আলিপুরদুয়ার ও ফালাকাটায় ২০১৬ সালে জিতেছিলেন তৃণমূল প্রার্থী। ২০১৪ সালের লোকসভা ভোটে মাদারিহাট ও কালচিনি কেন্দ্রে এগিয়েছিলেন বিজেপি প্রার্থী। কুমারগ্রাম ও আলিপুরদুয়ারে আরএসপি। বাকি ফালাকাটায় এগিয়েছিল তৃণমূল। ২০১১ সালে রাজ্যে পালাবদলের সময়ও এই জেলা থেকে কেবলমাত্র ফালাকাটাতেই জিতেছিল তৃণমূল।
জলপাইগুড়ি ভোটশেয়ার (শতাংশের হিসাবে)
রাজনৈতিক দল | ২০১৯- লোকসভা | ২০১৬- বিধানসভা | ২০১৪- লোকসভা |
তৃণমূল | ৩৭.১৮ | ৪৪.৬৮ | ৩৩.৬৪ |
বিজেপি | ৫২.৭৮ | ১৪.৭৪ | ২৩.২৪ |
বামফ্রন্ট | ৫.৩৪ | ৩৬.৭৯ | ৩০.১৩ |
কংগ্রেস | ২.০৭ | ৮.৭৩ |
২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের হিসাব মতো জলপাইগুড়ি জেলার ৭টি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে ৬টিতে (ধূপগুড়ি, ময়নাগুড়ি, জলপাইগুড়ি, দেবগ্রাম-ফুলবাড়ি, মাল, নাগরাকাটা) এগিয়েছিল বিজেপি। কেবলমাত্র রাজগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রে এগিয়েছিল তৃণমূল। ২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটে কিন্তু ৭টির মধ্যে ৬টিতে জিতেছিল তৃণমূল। কেবলমাত্র জলপাইগুড়িতে জিতেছিলেন কংগ্রেস প্রার্থী। আবার ২০১৪ সালের লোকসভা ভোটের হিসাব মতো পাঁচটিতে এগিয়েছিল তৃণমূল। সেবার জলপাইগুড়িতে জিতেছিলেন সিপিএম প্রার্থী ও নাগরাকাটায় বিজেপি। ২০১১ সালে প্রবল তৃণমূল ঝড়ের সময়ও এই কেন্দ্রে তৃণমূল জিততে পারেনি। কংগ্রেস জিতেছিল সেবার। ধূপগুড়ি আর মাল পেয়েছিল সিপিএম, ময়নাগুড়ি আরএসপি, কংগ্রেস নাগরাকাটা।
দার্জিলিং ভোটশেয়ার (শতাংশের হিসাবে)
রাজনৈতিক দল | ২০১৯- লোকসভা | ২০১৬- বিধানসভা | ২০১৪- লোকসভা |
তৃণমূল | ২২.৪৭ | ৩৫.৪৬ | ২৪.৯৫ |
বিজেপি | ৬৫.২১ | ৯.৭৩ | ৪৭.৬৮ |
বামফ্রন্ট | ৪.১৮ | ২৩.৮৯ | ১২.৩০ |
কংগ্রেস | ৪.২২ | ৬.৬৫ |
পাহাড়ে এবার ত্রিমুখী লড়াই। বহু দিন পরে এই প্রথম মোর্চার ভোট ভাগ হতে চলেছে। এক দিকে বিনয় তামাং, অন্য দিকে বিমল গুরুং। তৃণমূল বিনয় ও বিমলকে একজোট করার চেষ্টা করেছিল। লাভ হয়নি। এই ফাঁকে কি সুবিধা করে নেবে বিজেপি? দুই মোর্চাই দাবি করছে, লড়াই কঠিন হয়ে গেলেও বিজেপি বা জিএনএলএফ সুবিধা করতে পারবে না। হাওয়া যেরকম তাতে মনে হচ্ছে কালিম্পংয়ে এগিয়ে বিমল, কার্শিয়াংয়ে এগিয়ে বিনয়। আর বিনয়-বিমলের খাসতালুক দার্জিলিংয়ের ফল জানতে অপেক্ষা করতে হবে ২ মে পর্যন্ত। দার্জিলিং জেলার মধ্যে আরও তিনটি আসন পড়ে- মাটিগাড়া-নকশালবাড়ি, শিলিগুড়ি, ফাঁসিদেওয়া। এই তিনটি-সহ পাহাড়ের দু’টি আসনেও ২০১৪ ও ১৯ সালের লোকসভা ভোটের হিসাবে এগিয়েছিল বিজেপি। ২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটের হিসাব মতো মাটিগাড়া-নকশালবাড়ি ও ফাঁসিদেওয়া জিতেছিল কংগ্রেস। শিলিগুড়িতে অবশ্যই জিতেছিল অশোক ভট্টাচার্যের দল সিপিএম। এবারও শিলিগুড়ি বিধানসভায় সংযুক্ত মোর্চার প্রার্থী অশোক ভট্টাচার্য। তাঁর প্রতিপক্ষ হলেন চে গুয়েভারার টাট্যু হাতে একদা শিষ্য শঙ্কর ঘোষ, এবারে বিজেপির প্রার্থী। গুরু-শিষ্যের লড়াইয়ের মাঝে তৃণমূল প্রার্থী হিসাবে কলকাতা থেকে হাজির ওমপ্রকাশ মিশ্র। বহিরাগত ওমপ্রকাশকে নিয়ে তৃণমূল স্থানীয় নেতৃত্বের ক্ষোভ এতটাই বেশি যে অনেকে বিজেপিতে নাম লিখিয়েছেন।
উত্তর দিনাজপুর ভোটশেয়ার (শতাংশের হিসাবে)
রাজনৈতিক দল | ২০১৯- লোকসভা | ২০১৬- বিধানসভা | ২০১৪- লোকসভা |
তৃণমূল | ৩৯.০০ | ৩৫.৯৬ | ২২.১৩ |
বিজেপি | ৩৮.২৬ | ১৩.৫০ | ১৭.৮৩ |
বামফ্রন্ট | ১২.৪২ | ৪২.৫২ | ২৮.৮৪ |
কংগ্রেস | ৭.৪১ | ২৫.৫৪ |
উত্তর দিনাজপুরে ৯টি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে গত লোকসভা ভোটে মোদী-ঝড়ের সময়ও তৃণমূল এগিয়েছিল চোপড়া, ইসলামপুর, গোয়ালপোখর, ইটাহার ও চাকুলিয়ায়। বিজেপি এগিয়েছিল করণদিঘি, হেমতাবাড়ি, কালিগঞ্জ ও রায়গঞ্জে। ২০১১ ও ২০১৬ সালে দু’বার ইটাহার বিধানসভা কেন্দ্রে জিতেছে তৃণমূল। এই কেন্দ্রে ৫০ শতাংশেরও বেশি ভোটার সংখ্যালঘু। যার বেশিটাই তৃণমূলের ঝুলিতে ছিল এতদিন। কিন্তু ইটাহারে পরপর দু’বারের বিধায়ক অমল আচার্যকে এবার তৃণমূল টিকিট দেয়নি। মোশারফ হোসেনকে প্রার্থী করেছে তারা। সেই ক্ষোভে প্রার্থী ঘোষণার মধ্যেই উত্তর দিনাজপুর জেলা তৃণমূলের প্রাক্তন সভাপতি অমল তাঁর দলবল নিয়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। তিনি টিকিট অবশ্য পাননি। তবে বিজেপির প্রার্থী অমিতকুমার কুণ্ডুকে নিয়ে জোরদার প্রচার করছেন তিনি। এদিকে, সংযুক্ত মোর্চার প্রার্থী হিসাবে সিপিআইয়ের টিকিটে ইটাহার থেকে লড়ছেন শ্রীকুমার মুখোপাধ্যায়। এই কেন্দ্র থেকে তিন বার জিতেছিলেন তিনি অতীতে। মন্ত্রীও হয়েছিলেন। সংখ্যালধু অধ্যুষিত এই আসনে এমআইএম প্রার্থী দিয়েছে। প্রার্থী মোফাক্কেরুল ইসলাম তৃণমূলের সংখ্যালঘু ভোট কাটবে কিছুটা। গোয়ালপোখরেও ৭৫ শতাংশ সংখ্যালঘু ভোট। এখানে বিদায়ী বিধায়ক গোলাম রব্বানিকে প্রার্থী করেছে তৃণমূল। ২০১১ সালে কংগ্রেসের হয়ে লড়ে জিতেছিলেন তিনি। বছর দুয়েক পরে তৃণমূলে যোগ দেন। তাঁর ছায়াসঙ্গী মাসুদ মহম্মদ নাসিম আহসান গত বিধানসভা ভোটেও তাঁর হয়ে অনেক খেটেছেন। তিনি এবার কংগ্রেসের প্রার্থী। এদিকে, এই কেন্দ্রে বিজেপির প্রার্থী গোলাম সরবর রব্বানির ভাই। সব মিলিয়ে ঘরে-বাইরে লড়াই রব্বানির। ইসলামপুরে গত লোকসভার সময় বিধায়ক ছিলেন কানাইয়ালাল আগরওয়াল। কংগ্রেসের টিকিটে জিতে পরে তৃণমূলে যোগ দেন তিনি। লোকসভা ভোটে তৃণমূলের প্রার্থী হতে বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দেন। ওই আসনে উপনির্বাচনে জেতেন তৃণমূলের আব্দুল করিম চৌধুরী। সেই করিম এবার ইসলামপুরে তৃণমূলের প্রার্থী। কানাইয়ালালকে রায়গঞ্জে প্রার্থী করেছে দল। ইসলামপুরে বিজেপি প্রার্থী সৌম্যরূপ মণ্ডল ২০১৬ তে বিধানসভা ভোটে ১৬ হাজারের মতো ভোট পেয়েছিলেন। দাড়িভিটেয় শিক্ষক নিয়োগকে কেন্দ্র করে গোলমালের সময় দুই তরুণের মৃত্যুর ঘটনার জেরে এই সৌম্যরূপই উপনির্বাচনে ৫৬ হাজার ভোট পেয়েছিলেন। এবার ভোট আরও বাড়বে বলে আশাবাদী সৌম্যরূপ। চোপড়ায় তৃণমূলের প্রার্থী হামিদুল রহমানের ‘অন্য জনপ্রিয়তা’ এলাকায়। বিরোধীদের অভিযোগ, সীমান্ত ঘেঁষা চোপড়ায় বৈধ-অবৈধ অনেক কারবারের মাথা হামিদুল। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী সাহিন আখতাব একসময় কংগ্রেস করলেও লোকসভার সময় থেকে বিজেপিতে। এই আসনে সংযুক্ত মোর্চার প্রার্থী বাম জমানার মন্ত্রী আনওয়ারুল।
দক্ষিণ দিনাজপুরে ভোটশেয়ার (শতাংশের হিসাবে)
রাজনৈতিক দল | ২০১৯- লোকসভা | ২০১৬- বিধানসভা | ২০১৪- লোকসভা |
তৃণমূল | ৪১.৩৯ | ৪১.৮৮ | ৩৭.৮৭ |
বিজেপি | ৪৭.৪৩ | ১২.১৬ | ২২.৫০ |
বামফ্রন্ট | ৬.৪১ | ৪৩.১৮ | ২৯.১৯ |
কংগ্রেস | ২.২৭ | ৭.০১ |
দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার ৬টি বিধানসভা আসনের মধ্যে তিনটিতে তৃণমূল (কুশমান্ডি, কুমারগঞ্জ, হরিরামপুর) ও তিনটিতে বিজেপি (বালুরঘাট, তপন ও গঙ্গারামপুর) এগিয়েছিল গত লোকসভা ভোটে। ২০১৬ সালের বিধানসভা ভোট দেখলে কুমারগঞ্জ ও তপনে শুধু জিতেছিল তৃণমূল। আরএসপি জিতেছিল কুশমাণ্ডি আর বালুরঘাটে। হরিরামপুরে জিতেছিল সিপিএম। কংগ্রেস জিতেছিল গঙ্গারামপুরে। তারও আগে অর্থাৎ ২০১৪ সালের লোকসভা ভোটে সব ক’টি আসনেই এগিয়েছিলেন তৃণমূলের প্রার্থী। ২০১১ সালে রাজ্যে পালাবদলের সময় একমাত্র কুশমাণ্ডি ছাড়া বাকি সব আসনে জিতেছিল তৃণমূল।
মালদহ ভোটশেয়ার (শতাংশের হিসাবে)
রাজনৈতিক দল | ২০১৯- লোকসভা | ২০১৬- বিধানসভা | ২০১৪- লোকসভা |
তৃণমূল | ২৯.৪২ | ২৯.৩৮ | ১৮.২৩ |
বিজেপি | ৩৮.৩৫ | ১৬.৭৬ | ১৮.৭৩ |
বামফ্রন্ট | ২.২২ | ৪৯.৮৬ | ২২.৬৮ |
কংগ্রেস | ২৬.৪৮ | ৩৪.০১ |
মালদহ জেলায় বরাবর কংগ্রেস শক্তিশালী। ২০১১তে রাজ্যে পালাবদলের সময়ও এই জেলা থেকে মাত্র একটি আসন পেয়েছিল তৃণমূল। ২০১৪ সালের লোকসভা ভোটে ১৪টি আসনের মধ্যে ৯টিতে এগিয়েছিল কংগ্রেস। শুধুমাত্র ইংলিশবাজারে এগিয়েছিল বিজেপি আর হবিবপুর, গাজোলে সিপিএম। ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে কিন্তু দেখা যায় কংগ্রেসের ভোটে ভালই ভাগ বসিয়েছে বিজেপি। তারা এগিয়েছিল হবিবপুর, গাজোল, মানিকচক, মালদা, ইংলিশবাজার, বৈষ্ণবঘাটায়। আর সামশেরগঞ্জ, ফারাক্কা, সুজাপুর, মথাবাড়ি, মালতীপুর, চাঁচলে এগিয়েছিল কংগ্রেস। হরিশ্চন্দ্রপুর ও রতুয়ায় এগিয়েছিল তৃণমূল। হরিশ্চন্দ্রপুরে তৃণমূলের মাথাব্যাথা গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। লোকসভা ভোটের নিরিখে এই আসনে এগিয়ে রয়েছে তৃণমূল। কিন্তু বিদায়ী বিধায়ক তথা সংযুক্ত মোর্চার কংগ্রেস প্রার্থী মোস্তাক আলমের এলাকায় ভাল প্রভাব আছে। সংখ্যালঘু প্রার্থী মতিবুর রহমানকে দাঁড় করিয়ে ভোটযুদ্ধে রয়েছে বিজেপিও। শেষ দফায় আগামী ২৯ এপ্রিল মালদহের মানিকচক বিধানসভা আসনে ভোট। এই কেন্দ্রে জেতার জন্য গঙ্গা এবং ফুলহার নদীর বুকে গজিয়ে ওঠা ভূতনি দ্বীপের প্রায় এক লক্ষ ভোটারের মন জয়ের চেষ্টা করছেন সবাই। ২০১১ সালে এই কেন্দ্রের জয়ী প্রার্থী, যিনি ২০১৬ তে কংগ্রেসের মোক্তাকিন আলমের কাছে হেরে যাওয়ার পরও মাটি কামড়ে পড়ে রয়েছেন, সেই সাবিত্রী মিত্রকে এবার ফের প্রার্থী করেছে তৃণমূল। অন্যদিকে, মোক্তাকিনকে প্রার্থী করেছে কংগ্রেস। এদিকে, ভূতনি দ্বীপের ভূমিপুত্র তথা মালদহ জেলা পরিষদের তৃণমূল সভাধিপতি গৌরচন্দ্র মণ্ডল সদ্য বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন এবং এই কেন্দ্রের প্রার্থী হয়েছেন। সব মিলিয়ে মালদহে ভালই চাপে আছে তৃণমূল।