তাপস দাশঃ- আব্বাস সিদ্দিকির ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট কতটা প্রভাব ফেলবে খানাকুল বিধানসভায়, তার উপরেই নির্ভর ফলাফল। হুগলির খানাকুল বিধানসভা কেন্দ্র আরামবাগ লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত। এই বিধানসভা আগে তফশিলি জাতিদের জন্য সংরক্ষিত ছিল। বর্তমানে এটি খোলা আসন।
আরও পড়ুন, আজ রাজ্যে মুখোমুখি মমতা-নাড্ডা, সোমবার TMC-র শক্তি বাড়াতে প্রচারে নামবেন জয়াও
খানাকুল বিধানসভা ছিল সিপিএমের দুর্গ। সেই ১৯৬৭ সাল থেকে। এমনকী বহুনিন্দিত ১৯৭১ সালের ভোটেও এখান থেকে জিতেছিলেন সিপিএম প্রার্থী। ১৯৭২ সালে অবশ্য তেমনটা ঘটেনি। সেবার কংগ্রেস জেতে এই আসনে। আর ১৯৭৭ সালে জিতেছিলেন জনতা পার্টির প্রার্থী। সেই শেষ। তারপর থেকে আর কখনও এ আসন খালি হাতে ফেরায়নি সিপিএমকে। ১৯৮২ থেকে টানা তিনবার শচীন্দ্রনাথ হাজরা ও ১৯৯৬ থেকে টানা তিনবার বংশীবদন মিত্র এখানকার বিধায়ক হয়েছেন। তারপর ২০১১ এল, সিপিএমের পতন ঘটল, এই এলাকাও হাতছাড়া হল বাম রাজের।
আরও পড়ুন, টিকা নিয়েও করোনায় আক্রান্ত, রাজ্য়ে তৃতীয় দফা ভোটের আগে ভয়াবহভাবে বাড়ল সংক্রমণ
২০১১ সালে এই আসনে জিতলেন তৃণমূল কংগ্রেসের ইকবাল আহমেদ। তিনি সিপিএমের শুভ্রা পাড়ুইকে হারালেন ২৮ হাজারের মত ভোটে। ২০১৬-র ভোটে এখই ফলের পুনরাবৃত্তি। ফের ইকবাল আহমেদের জয়, ফের হার সিপিএম প্রার্থীর। পরাজিত প্রার্থী ছিলেন ইসলাম আলি খান। ২০২১ সালের ভোটে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী মুন্সি নাজিবুল করিম। আর সংযুক্ত মোর্চার প্রার্থী ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টের ফয়জল খান। খানাকুল বিধানসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী সুশান্ত ঘোষ।
খানাকুল বিধানসভা কেন্দ্রের প্রচারে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপির সঙ্গে সঙ্গে আক্রমণ শাণিয়েছেন ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টের বিরুদ্ধেও। খানাকুল সংখ্যালঘু অধ্যুষিত বিধানসভা। ফলে আব্বাস সিদ্দিকিকে যে তিনি ‘পচা ছেলে’ বলে অভিহিত করবেন, তাতে বিস্ময়ের কিছু নেই। খানাকুল বিধানসভা কেন্দ্রে ২০১১ সালের ভোটে বিজেপি প্রার্থী অরবিন্দ মাইতি পেয়েছিলেন ৭৩৬০টি ভোট। ২০১৬ সালের ভোটে ওই কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী ১৭৬৮৬ ভোট পান। প্রার্থী হয়েছিলেন বিকাশচন্দ্র দলুই।
আরও পড়ুন, 'বহিরাগতের হাতে হামলা-শ্লীলতাহানি', প্রতিবাদ সভার ডাক বাংলাপক্ষের, কাঠগড়ায় CAB
২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে এই বিধানসভা এলাকায় ব্যাপক লড়াই দিয়েছিল বিজেপি। ৮২ হাজারেরও বেশি ভোট পায় তারা এই বিধানসভা কেন্দ্রে। তৃণমূল প্রার্থীর লিড ছিল ১৪ হাজারের। ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট এই আসনে প্রার্থী দেওয়ার ফলে সংখ্যালঘু ভোটের একটা অংশ যে তারা পাবে, সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই। যার ফলে অসুবিধায় পড়ার কথা তৃণমূলের, সুবিধা পাবার কথা বিজেপির। তৃতীয় দফায়, ৬ এপ্রিল এই কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ।