উত্তম দত্ত , ডানলপ ,হুগলি
আগামী ২২ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী হুগলির ডানলপ ফুটবল গ্রাউন্ডে জনসভা করবেন। তারপরেই ভোট প্রচারে সেখানে যাবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্ধ্যোপাধ্যায়। আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগে প্রধানমন্ত্রী আর মুখ্যমন্ত্রীর ডানলপ সফর ঘিরে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁদের স্বপ্ন ডানলপের বন্ধ হয়ে যাওয়া কারখানা ঘিরে। হয় কারখানা খুলুক, কাজ পাক স্থানীয়রা। নয়তো পুরনো কারখানায় তৈরি হোক নতুন কারখানা। যেখানে কর্মসংস্থান হবে স্থানীয়দের। একটা সময় আর্থিকভাবে যথেষ্ট স্বচ্ছল ছিল ডানলপ। আশি ও নব্বইয়ের দশকে রাজ্যের অর্থনৈতিক মানচিত্রেও তার গুরুত্ব ছিল অপরিসীম ছিল। কিন্তু বর্তমানে সবই অতীত। কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর আর্থিকভাবে জরাজীর্ণ এই এলাকা। ২০১২ সালে লিকুইডেটার অধীনে চলে গেছে এই কারখানা। কারখানা খোলার আশা প্রায় নেই বললেই চলে। তবুও বিধানসভা নির্বাচনের আগে দুই প্রধানের সফর ঘিরে স্বপ্নের জাল বুনতে শুরু করেছে ডানলপ।
ডানলপ কারখানা বন্ধ হয়েছে। জরাজীর্ণ কারখানা সংলগ্ন আবাসন। অধিকাংশ আবাসনই ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। বাকিগুলি জীর্ণ দশা। তবুও সেখানে এখনও রয়েছে মানুষের বাস। আবাসনে জলের লাইনের সংযোগ ছিন্ন হয়েছে। কিন্তু বিদ্যুৎ সংযোগ রয়েছে। কিন্তু রাজ্যসরকারের wbsedcl দেওয়া লাইনে মিটারের টাকা গুণতে হচ্ছে আবাসিকদের। অনেক আবাসিক সেখানে রয়েছেন, যাদের কারখানার সঙ্গে কোনও যোগাযোগ নেই। কোনও এক সময় পরিবারের কেই হয়তো কারখানায় চাকরি করতেন তিনি অবসর নিয়ে ফিরে গেছেন দেশে। কিন্তু কোয়ার্টের ঘর ভাড়ায় দিয়ে গেছেন অন্য কোনও ব্যক্তিকে। কেউ আবার কারখানা বন্ধ হওয়ায় আবাসন ভাড়া দিয়ে রোজগারের ব্যবস্থা করেছেন। তেমনই একজন রিমা দেবী। যাঁর শ্বশুর একটা সময় কারখানায় কাজ করতেন, বর্তমানে তিনি থাকেন অন্যত্র। রিমা আর তাঁর স্বামী থাকের শ্বশুরের কোয়ার্টারে। কিন্তু স্বামী চাকরি করেন অন্যত্র। তাই তাঁরাও চাইছেন যাতে অবিলম্বে কারখানা খুলে যাক। কাজ পাক সাধারণ মানুষ। কারণ মাত্র ৮ হাজার টাকার বিনিয়ম কাজ করেন তাঁর স্বামী। তাই তিনি চান কারখানা যাতে খুলে যায় তাতে কাজ পাবে অনেকে।
কারখানা সংক্রান্ত অনেক খোঁজই রাখেন রাজিন্দর নামের এক ব্যক্তি এই কারখানার কর্মী ছিলেন। তিনি জানিয়েছেন, ডানলপ কারখানার দুটি ইউনিট একটি হুগলিতে অন্যটি দক্ষিনে আম্বাট্যুর এ । দুটোই লিকুইডেটারের অধীনে চলে গেছে । শুনেছি এই মাসেই নিলামকারী রা দুটি ইউনিটেই আসবেন সম্পত্তির হিসেব করতে । একেই তো দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার সুযোগে এই কারখানার অধিকাংশ যন্ত্রাংশই চুরি হয়ে গেছে । লরি লরি মেশিন পাচার হয়ে গেছে । অবশিষ্ট যা আছে তা সব বেচা হবে । কিন্তু তারপর কি হবে ? এতো বড়ো এলাকা প্রায় আড়াইশো একর জমি । সব কি প্রমোটিং হবে ? আমাদের ওই কোম্পানি থেকে বেশ কিছু বকেয়া আছে কর্মীদের । আমিই পাবো প্রায় তিন লাখ টাকা । এই সমস্ত বকেয়া আমাদের যেন মিটিয়ে দেওয়া হয় পাশাপাশি নতুন কোন কারখানা খোলার প্রতিশ্রুতি যেন তেনারা দেন । আমরা আপামর ডানলপবাসী এরকম টি শোনার অপেক্ষাতেই থাকবো ।