মতুয়া ভোটই নিয়ন্ত্রক, ঠাকুরবাড়ি কি এবারও নিয়ন্ত্রক গাইঘাটা বিধানসভা নির্বাচনে

  • গাইঘাটা বিধানসভা কেন্দ্রটি তফশিলি জাতিভুক্তদের জন্য সংরক্ষিত
  • ২০০৬ সালে গাইঘাটা কেন্দ্রের বিধায়ক হন রাজ্যের বর্তমান খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক
  • ২০১৬ সালে গাইঘাটা কেন্দ্র থেকে জিতেছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের পুলিনবিহারী রায়
  •  ২২ এপ্রিল, ষষ্ঠ দফায় গাইঘাটার চূড়ান্ত ফয়সালা

তাপস দাস: গাইঘাটা বিধানসভা কেন্দ্রটি তফশিলি জাতিভুক্তদের জন্য সংরক্ষিত। এটি বর্তমানে বনগাঁ লোকসভা কেন্দ্রের আওতাধীন। এখানকার ভোট গত এক দশক ধরে মতুয়া ঠাকুরবাড়ির রাজনীতি ঘিরেই আবর্তিত হয়। এই বিধানসভা কেন্দ্র থেকে একদা নির্বাচিত হতেন রাজ্যের বাম সরকারের স্কুল শিক্ষামন্ত্রী কান্তি বিশ্বাস। ১৯৭৭ সাল থেকে পরপর তিনবার তিনি এই কেন্দ্রের বিধায়ক নির্বাচিত হন। ১৯৯১ সালের ভোটে এখান থেকে জেতেন কংগ্রেস প্রার্থী। ২০০১ ও ২০০৬ সালে গাইঘাটা কেন্দ্রের বিধায়ক হন রাজ্যের বর্তমান খাদ্যমন্ত্রী তৃণমূল কংগ্রেসের জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। ২০১১ সালে এই আসন থেকে দাঁড় করানো হয় মঞ্জুলকৃষ্ণ ঠাকুরকে। তিনি ঠাকুরবাড়ির বড় মা বীণাপাণি দেবীর দ্বিতীয় পুত্র। সেবার মঞ্জুল জেতেন এবং মন্ত্রী হন। ২০১৪ সালে তিনি কিছুদিনের জন্য বিজেপিতে যোগ দিয়ে ফের তৃণমূল কংগ্রেসে প্রত্যাবর্তন করেন।

আরও পড়ুন-পরপর তিনবার 'ভিক্টরি'র লক্ষ্যে ভিক্টর, বিজেপি ক্রমশ শক্তি বাড়াচ্ছে চাকুলিয়ায়...

Latest Videos

২০১৬ সালে গাইঘাটা কেন্দ্র থেকে জিতেছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের পুলিনবিহারী রায়। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন সিপিআইয়ের প্রার্থী। ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে বনগাঁ কেন্দ্র থেকে ভোটে তৃণমূল কংগ্রেসের টিকিট পেয়েছলেন মঞ্জুলের দাদা, বীণাপাণি দেবীর বড় ছেলে কপিলকৃষ্ণ ঠাকুর। নির্বাচিতও হয়েছিলেন। তার কয়েক মাসের মধ্যেই তিনি মারা যান। কপিলকৃষ্ণ মারা যাবার পর মঞ্জুলের অভিযোগ ছিল, বীণাপাণির দ্বিতীয় পুত্র হিসেবে তাঁর যা সম্মান পাওয়ার কথা, তা তিনি পাচ্ছেন না। এর পরেই তিনি বিজেপিতে যোগ দেবার কথা ঘোষণা করেন। এদিকে শূন্য হয়ে যাওয়া বনগাঁ লোকসভা কেন্দ্রের ২০১৫ সালের উপনির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী করা হয় প্রয়াত কপিলকৃষ্ণের স্ত্রী মমতাবালা ঠাকুরকে। 

আরও পড়ুন-'অন্যরকম ভোট হচ্ছে', কেন্দ্রীয় বাহিনীর লাঠিচার্জের পর বলল গ্রামের মানুষ...

মঞ্জুলকৃষ্ণের ছোট ছেলে শান্তনু ঠাকুর বিজেপিতে যোগ দিয়ে ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে নিজের জেঠি মমতাবালার বিরুদ্ধে লড়েন এবং জেতেন। মঞ্জুলের বড় ছেলে সুব্রত ঠাকুর ২০১৫ সালের বনগাঁ কেন্দ্রের লোকসভা উপনির্বাচনে মমতাবালা ঠাকুরের বিরুদ্ধে বিজেপির প্রার্থী হয়েছিলেন। সেবার তিনি তথা বিজেপি তৃতীয় স্থান লাভ করেছিল। ২ নম্বরে ছিলেন সিপিএম প্রার্থী দেবেশ দাস। সেই সুব্রত ঠাকুরই এবার গাইঘাটা বিধানসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী। তৃণমূল কংগ্রেস এই কেন্দ্রে প্রার্থী করেছে নরোত্তম বিশ্বাসকে। তাঁকে নিয়ে আপত্তি রয়েছে দলের মধ্যে, বা বলা ভাল ঠাকুর পরিবারে। তৃণমূল কংগ্রেসের প্রাক্তন সাংসদ তথা এলাকার নেত্রী মমতাবালা অভিযোগ করেছেন, প্রচারে গিয়ে নরোত্তম বিশ্বাস ঠাকুরবাড়ি সম্পর্কে অপপ্রচার করছেন। এর আগে নরোত্তমকে প্রার্থী করার জন্য দল ছেড়েছিলেন এলাকার নেতা ধ্যানেশ গুহ। তিনি অভিযোগ করেছিলেন, নরোত্তম সোনা পাচারে যুক্ত। যে অভিযোগের সুরে গলা মিলিয়েছিলেন মমতাবালা ঠাকুরও। মূলত মতুয়া ঠাকুরবাড়ির অন্তর্দ্বন্দ্ব দ্বারা পরিচালিত এক দশকের ভোটে এবার নতুন করে যুক্ত হয়েছে ঠাকুরবাড়ি বনাম ঠাকুরবাড়ির বিরোধিতা। এই পরিস্থিতিতে অ্যাডভান্টেজ যে বিজেপির দিকে, তেমনটাই মনে হচ্ছে। ২২ এপ্রিল, ষষ্ঠ দফায় গাইঘাটার চূড়ান্ত ফয়সালা।  

Share this article
click me!

Latest Videos

এ যেন লুকোচুরি খেলা! ক্ষণে ক্ষণে স্থান পরিবর্তন, এখনও অধরা বাঘিনী যমুনা | Jhargram Tiger News
'কেন্দ্র যদি একটু দয়া দেখায় তাহলে হুগলিতেও মেট্রো চলবে', আশাবাদী Rachana Banerjee
নওশাদ সিদ্দিকীকে জঙ্গি আখ্যা Saokat Molla-র, পাল্টা বড় পদক্ষেপ Naushad Siddiqui-র
Suvendu Adhikari Live : নবান্নের সামনে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের ধর্না অবস্থান মঞ্চে শুভেন্দু
‘প্রণামের সংস্কৃতি ভুলে যাচ্ছে বাঙালি’ বিস্ফোরক মন্তব্য Dilip Ghosh-এর, দেখুন কী বলছেন | Dilip Ghosh