পরপর তিনবার 'ভিক্টরি'র লক্ষ্যে ভিক্টর, বিজেপি ক্রমশ শক্তি বাড়াচ্ছে চাকুলিয়ায়

 

  • সারা রাজ্যে বাম পতনের সময়ে ফরোয়ার্ড ব্লকের টিকিটে জিতেছিলেন  ভিক্টর
  • ভিক্টর সর্বকনিষ্ঠ বিধায়কের রেকর্ডও করেছিলেন সেবার
  • ২০১৬ সালেও চাকুলিয়া কেন্দ্র থেকে বিধায়ক হন ভিক্টর
  • এর আগে ২০০৯ সালে গোয়ালপোখর কেন্দ্রের উপনির্বাচনেও জিতেছিলেন ভিক্টর

Asianet News Bangla | Published : Apr 22, 2021 11:03 AM IST

তাপস দাস: গত বছরের শেষের দিকে আমফান দুর্নীতিসহ বিভিন্ন ইস্যুতে কোনঠাসা তৃণমূল কংগ্রেস ভাবমূর্তি উদ্ধারের জন্য এক কৌশল নিয়েছিল। তারা বিভিন্ন বাম নেতাদের কাছে গোপনে প্রস্তাব দিয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেবার। বিনিময় মূল্য সহ। এই বাম নেতাদের অনেকেই বিষয়টি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ করে দিয়েছিলেন। এঁদের অন্যতম ভিক্টর ওরফে আলি ইমরান রামজ। 

আরও পড়ুন-তৃণমূলের বোমাবাজি, ফের বাহিনীর বিরুদ্ধে গুলি চালানোর অভিযোগ - উত্তপ্ত অশোকনগর...

আলি ইমরান মানজ ২০১১ সালে প্রথমবার বিধায়ক হন। চাকুলিয়া বিধানসভা কেন্দ্র সেবারই প্রথম গঠিত হয়েছিল। সারা রাজ্যে বাম পতনের সময়ে ফরোয়ার্ড ব্লকের টিকিটে জিতেছিলেন তিনি। ভিক্টর সর্বকনিষ্ঠ বিধায়কের রেকর্ডও করেছিলেন সেবার। ২০১৬ সালেও চাকুলিয়া কেন্দ্র থেকে বিধায়ক হন তিনি। এর আগে ২০০৯ সালে গোয়ালপোখর কেন্দ্রের উপনির্বাচনেও জিতেছিলেন ভিক্টর।

আরও পড়ুন-করোনা আক্রান্ত সাধন পান্ডে, ভোটের মধ্যেই একাধিক প্রার্থী পজিটিভ হওয়ায় চিন্তায় TMC...

আলি ইমরান মানজের বাবা যখন মারা গিয়েছিলেন, তখন তাঁর বয়স ১৫। তাঁর বাবা ছিলেন গোয়ালপোখর বিধানসভা কেন্দ্রের চারবারের বিধায়ক রমজান আলি। ১৯৯৪ সালে কলকাতার এমএলএ হোস্টেলে খুন হয়েছিলেন রমজান। তাঁকে খুনের ষড়যন্ত্রের দায়ে জেলে যান রমজানের স্ত্রী, ভিক্টরের মা তালাত। তালাতের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছিল। রমজানের হত্যাকাণ্ড অবৈধ সম্পর্কের জেরে হয়েছে বলে আদালতে প্রমাণিত হলেও, অনেকেই সন্দেহ করেন এর পিছনে রয়েছে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র। 

এরকম একটা অতীত নিয়ে জীবনযুদ্ধ অতিক্রম করা খুব সহজ নয়। ভিক্টর তাতে সক্ষম হয়েছেন, নেতা হয়েছেন, পরপর দুবার একই কেন্দ্রে বিধায়ক হয়েছেন। পরপর তিনবার চাকুলিয়া দখলের লক্ষ্যে তিনি প্রার্থী হয়েছেন এবারও। ভিক্টরের জনপ্রিয়তা এতটাই যে মনোনয়নপত্র জমা দেবার দিন তিনি গ্রামের মানুষের আশীর্বাদ চাইতে গেলে তাঁর হাতে আশীর্বাদস্বরূপ নগদ টাকা গুঁজে দেন গ্রামের মহিলারা। কেউ ৫০ টাকা, কেউ ৫০০ টাকা। 

ভিক্টর আইন পাশ করেছেন, হলফনামা থেকে জানা যাচ্ছে তিনি প্র্যাকটিসও করেন। এ ছাড়া কৃষিজমিও রয়েছে, যা তাঁর রোজগারের একটি সূত্র। ভিক্টর ও তাঁর স্ত্রীর মিলিত সম্পত্তির পরিমাণ ৩ কোটি ৫৬ লক্ষ টাকারও বেশি। ৬ একরের চেয়েও বেশি পরিমাণ কৃষি জমি রয়েছে তাঁর, নিজের একটি স্করপিও গাড়ি রয়েছে, স্ত্রীর রয়েছে আরেকটি গাড়ি। ভিক্টরের নামে বেশ কয়েকটি ফৌজদারি মামলাও রয়েছে। 

চাকুলিয়া বিধানসভা কেন্দ্রে ২০১১ সালের নির্বাচনে তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী কংগ্রেস প্রার্থীকে ২১ হাজারের বেশি ভোটে হারিয়েছিলেন ভিক্টর। সেবার তৃণমূল তৃতীয় ও বিজেপি চতুর্থ হয়েছিল। ২০১৬ সালের নির্বাচনে তাঁকে সমর্থন করে কংগ্রেস। সেবার বিজেপি দ্বিতীয় হয়, তৃণমূল কংগ্রেস তৃতীয়। তবে বিজেপিকে ২৮ হাজার ভোটে হারান ভিক্টর। এবার ভিক্টরের তিন নম্বর জয় হবে নাকি খেলা ঘুরবে অন্যদিকে , তা স্থির হবে ষষ্ঠ দফায়, ২২ এপ্রিল।

Share this article
click me!