ভোট-পরবর্তী হিংসা নিয়ে রিপোর্ট তলব, মমতাকে এখনই রেহাই দিতে নারাজ অমিত শাহ

Published : May 03, 2021, 07:48 PM ISTUpdated : May 03, 2021, 09:52 PM IST
ভোট-পরবর্তী হিংসা নিয়ে রিপোর্ট তলব, মমতাকে এখনই রেহাই দিতে নারাজ অমিত শাহ

সংক্ষিপ্ত

নির্বাচনে সম্পূর্ণ পর্যুদস্ত হয়েছে বিজেপি। রাজ্যজুড়ে তৃণমূলের জয়জয়কার। তবে এর মধ্যেই বিভিন্ন জায়গা থেকে বিক্ষিপ্ত অশান্তির খবর আসছে। আর তারই প্রেক্ষিতে সোমবার, পশ্চিমবঙ্গ সরকার-এর কাছে রাজ্যে নির্বাচন-পরবর্তী হিংসার ঘটনার বিষয়ে প্রতিবেদন তলব করল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক।  

নির্বাচনে সম্পূর্ণ পর্যুদস্ত হয়েছে বিজেপি। রাজ্যজুড়ে তৃণমূলের জয়জয়কার। তবে এর মধ্যেই বিভিন্ন জায়গা থেকে বিক্ষিপ্ত অশান্তির খবর আসছে। আর তারই প্রেক্ষিতে সোমবার, পশ্চিমবঙ্গ সরকার-এর কাছে রাজ্যে নির্বাচন-পরবর্তী হিংসার ঘটনার বিষয়ে প্রতিবেদন তলব করল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। সরাসরি বলা হয়েছে, শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস বিরোধী রাজনৈতিক কর্মীদের উপর হামলা করেছে। এই সংক্রান্ত রিপোর্টই পাঠাতে বলা হয়েছে।

এর আগে এদিন, রাজ্যপাল জগদীপ ধনখরও রাজ্যের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে রাজ্য পুলিশের ডিজি-কে ডেকে পাঠিয়েছিলেন। সংবাদ সংস্থা এএনআই-এর কাছে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ দাবি করেছেন,পশ্চিমবঙ্গে ফল ঘোষণার পর থেকে গত ২৪ ঘন্টায় তাদের ৯ জন কর্মী নির্বাচন-পরবর্তী হিংসার বলি হয়েছেন।

রবিবার, ভোটের প্রবণতায় রাজ্যে তৃণমূলের ক্ষমতায় ফেরা নিশ্চিত হওয়ার পরই, রাজ্যের বিভিন্ন জায়গা থেকে একের  পর এক বিজেপি কর্মীদের আক্রান্ত হওয়ার খবর আসতে থাকে। উত্তর দিনাজপুরে নির্বাচনের মাত্র কয়েকদিন আগে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়াদাপুটে নেতা অমল আচার্যের ক্লাবে হামলার অভিযোগ ওঠে। সিউড়িতে বিজেপির মিডিয়া সেলের এক কর্মীর বাড়িতে লুটপাট চালানো হয়, তার ট্রাক্টরও পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। সোনারপুরে তো এক বিজেপি কর্মীকে পিটিয়ে হত্যা করার অভিযোগও উঠেছে। ওই এলাকায় ব্যাপক বোমাবাজি, এমনকী মহিলাদের গায়ে হাত তোলা হয়েছে বলেও দাবি করেছে বিজেপি। আরামবাগে অগ্নিসংযোগ করা হয় বিজেপির কার্যালয়ে।

বলাই বাহুল্য প্রতিটি ক্ষেত্রেই অভিযোগের আঙুল রাজ্যের শাসক দল তথা সদ্য নির্বাচনে বিজয়ী দল তৃণমূল কংগ্রেস। বস্তুত, রাজ্যের প্রায় সর্বত্রই বিরোধীরা আক্রান্ত হওয়ার অভিযোগ করেছেন। এমনকী অনেকে বিজেপির রাজ্যের নেতা-নেত্রীদের কাছে অনুরোধ করেছেন, এই বিষয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে এই বিষয়ে অবগত করার জন্য। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে এই বিষয়ে বেশ কয়েকটি অভিযোগও দায়ের করা হয়েছিল। আরামবাগে বিজেপির পার্টি অফিসে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলার ঘটনা তো একাধক কেন্দ্রীয় মন্ত্রীও টুইট করেছিলেন। এরপরই এদিন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের চিঠি এল রাজ্য প্রশাসনের কাছে।

বাংলার নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এইবার নজিরবিহীন হিংসা দেখা গিয়েছে। অন্তত ৪০ থেকে ৫০ জন নাগরিক প্রাণ হারিয়েছেন রাজনৈতিক হিংসার কারণে। এমনকী কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতেও মৃত্যু হয়েছে। জায়গায় জায়গায় আক্রান্ত হয়েছেন প্রার্থী, বুথ এজেন্ট, পোলিং এজেন্ট, কাউন্টিং এজেন্টরা। যে তীব্র নেরুকরণের আবহে এবার নির্বাচন হয়েছে, তাতে এই ব্যাপক হিংসা বহু অংশেই প্রত্যাশিত, বলছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। ফল বের হওয়ার পরও যে মেরুকরণের সামাজিক কুপ্রভাব সইতে হবে বাংলার মানুষকে, এমনটাই আশঙ্কা করা হচ্ছে। তাই নির্বাচন-পরবর্তী হিংসাও  একেবারেই অপ্রত্যাশিত কিছু নয়।

সেই হিংসার প্রেক্ষিতে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের এই চিঠি স্বাভাবিক হলেও, এর অন্য রাজনৈতিক তাৎপর্য আছে ববলে মনে করা হচ্ছে। বাংলার নির্বাচনের আগে ও চলাকালীন, বারেবারে তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, অমিত শাহ কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলিকে নির্বাচনে বিজেপিকে সুবিধা দেওয়ার কাজে লাগাচ্ছেন। কেন্দ্র-রাজ্য দ্বন্দ্ব তো আরও পুরোনো। এদিনের এই চিঠিকে বঙ্গ নির্বাচনে হারের প্রেক্ষিতে অমিত শাহ-এর প্রতিক্রিয়া হিসাবেই দেখা হচ্ছে। এই পদক্ষেপে তিনি বুঝিয়ে দিলেন, এখনই স্বস্তি পাবেন না মমতা।

PREV
click me!

Recommended Stories

১ বছর পরে ২ দিনের সফরে কোচবিহার যাচ্ছেন মমতা, রইল সোম ও মঙ্গলের ঠাসা কর্মসূচি
Dilip Ghosh: বাংলায় ‘বাবরি মসজিদ’! বিজেপির দিলীপ হুমায়ুনকে দিলেন চরম উপদেশ