'বাইক-অ্যাম্বুলেন্স-দাদা'কে দেখেই জড়িয়ে ধরলেন মোদী, চেনেন কি এই পদ্মশ্রী চা-শ্রমিককে

বাগডোগরা বিমানবন্দরে মোদীর সঙ্গে সাক্ষাত করলেন করিমুল হক

তাঁকে দেখেই জড়িয়ে ধরলেন প্রধানমন্ত্রী

উত্তরবঙ্গের চা বাগানে তিনি পরিচিত বাইক অ্যাম্বুলেন্স দাদা নামে

সমাজ সেবার জন্য় পদ্মশ্রী খেতাব পেয়েছেন এই চা-শ্রমিক

amartya lahiri | Published : Apr 10, 2021 8:03 AM IST / Updated: Apr 10 2021, 02:11 PM IST

শনিবার চতুর্থ দফা নির্বাচনের দিনই উত্তরবঙ্গে ভোট প্রচারে এসেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এদিন সকালে বাগডোগরা বিমান বন্দরে তিনি নামতেই, তাঁর সঙ্গে দেখা করলেন 'বাইক-অ্যাম্বুলেন্স-দাদা', অর্থাৎ পদ্মশ্রী করিমুল হক। তাঁকে দেখে বুকে জড়িয়ে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।

করিমুল হক পেশায় ডুয়ার্সের এক চা বাগানের এক সাধারণ কর্মী। কিন্তু এর পাশাপাশি তাঁর অন্য একটটা পরিচয় রয়েছে। ধলাবাড়ি এলাকার আশেপাশের গ্রামের বাসিন্দাদের কাছে তিনি 'বাইক-অ্যাম্বুলেন্স-দাদা। সেই এলাকায় রাস্তা ভাঙাচোরা, অনেক বাড়িতে এখনও বিদ্যুত নেই। সবচেয়ে কাছের হাসপাতালটি, ৪৫ কিলোমিটার দূরে। ১৯৯৯ সাল থেকে ধলাবাড়ির আশেপাশের এই দুর্গম এলাকারই ২০টিরও বেশি গ্রামের অসুস্থ মানুষদের মোটরসাইকেল অ্যাম্বুলেন্সে করে হাসপাতালে নিয়ে যান করিমুল হক। ২০১৯ সাল পর্যন্ত তিনি প্রায় ৫,৫০০ মানুষকে বিনা পয়সায় হাসপপাতালে পৌঁছে দিয়েছেন। আর তাঁর এই সেবাব্রতের জন্যই তাঁকে পদ্মশ্রী পুরষ্কারে সম্মানিত করা হয়েছে।

করিমুল হক এই সেবার রাস্তায় এসেছিলেন, একেবারেই ব্যক্তিগত ক্ষতির জায়গা থেকে। ১৯৯৫ সালে অসুস্থ মাকে তিনি অ্যাম্বুলেন্সের অভাবে চিকিত্সার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যেতে পারেননি। বাড়িতে পড়ে পডড়ে শেষ হয়ে যান মা। এরপর চাবাগানে করিমুলের এক সহকর্মী অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। সেই ক্ষেত্রেও সময়ে অ্যাম্বুলেন্স পাওয় যায়নি। করিমুল তাঁকে নিজের শরীরের সঙ্গে বেঁধে মোটরবাইকে করেই হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলেন। সেই সহকর্মী সুস্থ হয়ে ওঠেন। আর এই থেকেই করিমুল হক শুরু করেছিলেন তাঁর বাইক-অ্যাম্বুলেন্স।

মালবাজারের রাজাডাঙ্গার বাসিন্দা করিমুল, পরবর্তী সময়ে স্থানীয় চিকিৎসকদের কাছ থেকে প্রাথমিক চিকিৎসার প্রশিক্ষণও নিয়ে নিয়েছেন। গ্রামবাসীদের প্রাথমিক সহায়তাটা এখন তিনিই দিয়ে থাকেন। জনজাতি অঞ্চলে বছরে বেশ কয়েকটি স্বাস্থ্য শিবিরও আয়োজন করেন। তাঁর এই কর্মযজ্ঞে সামিল হয়েছেন, স্ত্রী অঞ্জুয়া বেগম এবং তাঁর দুই ছেলে রাজেশ এবং রাজু এবং তাঁদের স্ত্রীরাও। ছেলেরা সুপারি পাতার দোকান এবং সেলফোন মেরামতের দোকান চালায়। তাতেই পরিবারের চলে। করিমুলের অধিকাংশ আয়ই চলে যায় বাইকের জ্বালানী এবং ওষুধ কিনতে।

 

Share this article
click me!