কাঁথির অধিকারী পরিবারের প্রায় সবাই তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে
রয়ে গিয়েছেন একা দিব্যেন্দু অধিকারী
নির্বাচনের পরও তাঁকে বহিষ্কার করল না জেলা কমিটি
তাঁর সম্পর্কে দলের মূল্যায়ন ঠিক কী
এক এক করে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার কাঁথির শান্তিকুঞ্জের অধিকারীদের প্রায় সব সদস্যই বিানসভা নির্বাচন ২০২১-এর আগ দিয়ে পাড়ি দিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেস থেকে বিজেপিতে। প্রথমে দিয়েছিলেন শুভেন্দু, তারপর তাঁর ছোট ভাই সৌমেন্দু এবং বাবা শিশির অধিকারী। একমাত্র দৈত্যকূলে প্রহ্লাদ হয়ে তৃণমূল কংগ্রেসে থেকে গিয়েছেন শুভেন্দুর মেজোভাই তথা তমলুকের সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারী। নির্বাচনের পরও কিন্তু তাঁর বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নিল না তৃণমূল কংগ্রেস। তবে দল বিরোধী কাজ করার দায়ে শুক্রবার বহিষ্কার করা হল খেজুরীর প্রাক্তন তৃণমুল বিধায়ক রনজিৎ মণ্ডল ও জেলা পরিষদের মৎস্য কর্মাধ্যক্ষ আনন্দময় অধিকারীকে।
নির্বাচনের আগে শুভেন্দু অধিকারীর মতো নেতা দল ত্যাগ করায় পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় বেশ ফাঁপড়ে পড়বে তৃণমূল কংগ্রেস, এমনটাই মনে করেছিলেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। মনে করা হয়েছিল, কার্যত অধিকারী পরিবারবিহীন অবস্থায় পূর্ব মেদিনীপুরের ভোট তৃণমূলের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ হবে। কিন্তু, ভোটের ফল বের হতে দেখা গিয়েছে, জেলার ১৬টি আসনের মধ্যে ৯টিতে জয়ী হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। পরিস্থিতির বিচারে এই ফলকে একেবারেই খারাপ না বলা গেলেও, বাকি ৭ আসনে কেন পরাজয় হল, তাই নিয়ে ইতিমধ্যেই পর্যালোচনা শুরু করে দিল রাজ্যের শাসকদল। শুক্রবারই তমলুকের নিমতৌড়ির শিক্ষক ভবনে, জেলার নবনির্বাচিত বিধায়ক, জেলা কো-অর্ডিনেটর এবং কোর কমিটির সদস্যদের নিয়ে, এক বৈঠকে বসেছিলেন জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব।
৭টি আসনে পরাজয়ের পিছনে সবচেয়ে বড় কারণ হিসাবে উঠে এসেছে অধিকারী পরিবারের ভূমিকা। সরাসরি তাদের দিকে আঙুল তোলেন জেলা তৃণমূল সভাপতি সৌমেন মহাপাত্র। বৈঠকে তমলুকের সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারীর নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন জেলা পরিষদের সহ সভাধিপতি শেখ সুফিয়ান। তবে, দিব্যেন্দুর রক্ষাকর্তা হিসাবে এগিয়ে আসেন জেলা সভাপতি। সৌমেন মহাপাত্র বলেন, দিব্যেন্দু বিধানসভা নির্বাচনে দলের হয়ে কাজ করেননি ঠিকই। তবে তিনি দলের ক্ষতি করেছেন, এমনও কোনও প্রমান নেই। তাঁর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভার রাজ্য কমিটির হাতেই ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন - লাগবে না কোভিড পজিটিভ রিপোর্ট - হাসপাতালে ভর্তিতে ৪ নতুন নির্দেশ, কী বলল কেন্দ্র
আরও পড়ন - জলে গুলে খেলেই সংক্রমণ-মুক্ত - করোনা-যুদ্ধের অস্ত্র দিল DRDO, অনুমোদন DGCI-এর
আরও পড়ুন - মুকুল রায়কে নিয়ে জল্পনার অবসান - এরপর কোন পথে, নিজেই জানালেন সেই কথা
তবে, রেহাই পাননি রণজিৎ মন্ডল ও আনন্দময় অধিকারী। খেজুরীর প্রাক্তন তৃণমুল বিধায়ক এবং জেলা পরিষদের মৎস্য কর্ম্যাধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ, দলের সদস্য হয়েও তাঁরা সদ্য সমাপ্ত বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির হয়ে কাজ করেছেন। এই কারণেই দলবিরোধী কাজে জড়িত থাকার অভিযোগে তাঁদেরকে দল থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এর পাশাপাশি, জেলায় ৭টি আসনে হারের পিছনে কেন্দ্রীয় বাহিনীর পক্ষপাতমূলক আচরণের কথাও বলেছেন পূর্ব মেদিনীপুর জেলার তৃণমূল সভাপতি। তবে, জেলা কমিটির এই সিদ্ধান্তের পর অধিকারী পরিবারের একমাত্র তৃণমূল সদস্যকে নিয়ে কী সিদ্ধান্ত নেয় তৃণমূল নেতৃত্ব, তাই নিয়েই এখন যাবতীয় কৌতূহল।